টাঙ্গাইলে পিকনিকের বাসে ডাকাতির ঘটনায় আরও ২ জন গ্রেপ্তার
Published: 3rd, March 2025 GMT
টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে শিক্ষার্থীদের বহন করা পিকনিকের ৩টি বাসে ডাকাতির ঘটনায় আরও দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান তার সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তাররা হলেন- রংপুরের পীরগঞ্জ থানার পালানো শাহপুর গ্রামের আয়নাল হকের ছেলে শফিকুল ইসলাম শরিফ (১৯) এবং নেত্রকোনা জেলার রাজগাগড়া গ্রামের শীতল চন্দ্র ভাটের ছেলে রূপন চন্দ্র ভাট (২৪)।
এসময় তাদের কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন এবং ডাকাতিতে ব্যবহৃত একটি পিকআপ উদ্ধার করা হয়। ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ প্রথমে লুণ্ঠিত মালামালসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা টাঙ্গাইলের বিভিন্নস্থানে ডাকাতি করে থাকে। গ্রেপ্তারদের ভিকটিমের মাধ্যমে যাচাই করে এ ঘটনায় জড়িত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তারা পুলিশের কাছেও ডাকাতির ঘটনা স্বীকার করেছে। পরে তাদের আদালতে পাঠালে আদালত চারজরকে জেলহাজতে পাঠান।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তারদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি গাজীপুর সদর এবং বাসন এলাকা থেকে ঘটনায় জড়িত শফিকুল ইসলাম শরিফ এবং রূপন চন্দ্র ভাটকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি লুণ্ঠিত মোবাইল ফোন এবং ডাকাতিতে ব্যবহৃত একটি পিকআপ উদ্ধার করা হয়। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দুইজনকে পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাদের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ঘাটাইল থানার পদির্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সজল খান জানান, রিমান্ডে দুইজন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তাদের তথ্যর ভিত্তিতে গত শনিবার পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় অভিযান চালানো হয়। সেখানে পুলিশ জানতে পারে ডাকাতদল একটি বাড়িতে ডাকাতি করছে। এসময় তারা তেঁতুলিয়া থানাকে অবহিত করলে পুলিশ দ্রুত পাঁচ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে।
তিনি আরও বলেন, তাদের শোন এরেস্ট দেখিয়ে টাঙ্গাইলে আনা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ভোর পৌনে ৪টার ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলাার সোয়াইতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা শিক্ষা সফরের জন্য চারটি বাস নিয়ে নাটোরের গ্রিনভ্যালি পার্কের উদ্দেশ্য রওনা দেন। চারটার দিকে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাগরদীঘি ইউনিয়নের লক্ষণের বাধা এলাকায় পৌঁছালে রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলে বাস থামায় একদল ডাকাত। পরে ১০ থেকে ১২ জনের একটি ডাকাত দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ৩টি বাসে থাকা শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করে। পরে বাসের যাত্রী জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে ঘটনাস্থলে পুলিশ যাওয়ার আগেই ডাকাত দল পালিয়ে যায়। ডাকাতরা নগদ দেড় লাখ টাকা, এক ভরি স্বর্ণ, ১০টি স্মার্টফোন লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় মারধরের শিকার হন ওই বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর সাখাওয়াত হোসাইন রবিন ও অভিভাবক শহিদুল্লাহ তালুকদার। এসময় কয়েকজন শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরে এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাদী হয়ে অজ্ঞাত ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে ঘাটাইল থানায় মামলা দায়ের করেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ড ক ত র ঘটন এ ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
পাবনায় সড়কে গাছ ফেলে ৪০ গাড়িতে ডাকাতি
পাবনার সাঁথিয়ায় মধ্যরাতে সড়কে গাছ ফেলে বাস-ট্রাকসহ অন্তত ৪০টি গাড়িতে ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত দেড়টার দিকে পাবনা-সাঁথিয়া সড়কের ছেচানিয়া ব্রিজের পাশে ঘটে এ ঘটনা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান।
এ বিষয়ে পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রাত দেড়টার দিকে ছেচানিয়া ব্রিজের পাশে সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে প্রথমে একটি পণ্যবাহী ট্রাক আটকে রাখে ডাকাতরা। এতে কিছু সময়ের মধ্যেই বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোসহ প্রায় ৪০টি গাড়ি আটকে পড়ে। এসময় ৪০ থেকে ৫০ জন হাসুয়া, রামদা, ছুরি, চাকুসহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে পর্যায়ক্রমে গাড়িগুলোতে ডাকাতি চালায়। গাড়ির গেট খুলতে দেরি করায় কিছু গাড়ি ভাঙচুরও করে। এসময় পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীদের মারধর করে তাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল, টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলে এ তাণ্ডব।
ডাকাতির কবলে পড়া আব্দুস সালাম নামে এক ইসলামী বক্তা ফেসবুকে দেওয়া ভিডিও বক্তব্যে বলেন, কিছুক্ষণ আগে এই সড়কে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে গাড়িগুলোতে ডাকাতি করেছে। হুট করে আমাদের গাড়িতে আক্রমণ করে ডাকাত দলের সদস্যরা। বারবার গাড়িতে আঘাতের পর আমরা ড্রাইভারকে গেট খুলে দিতে বললে ডাকাতরা ঢুকে ড্রাইভারের গলা ও পেটে চাকু ধরে। একইভাবে অন্যদেরও জিম্মি করে সব লুটে নিয়ে যায়। আমরা বলেছি, ভাই যা আছে সব নেন, কিন্তু কাউকে আঘাত কইরেন না। আমাদের গাড়িতে কাউকে আঘাত করেনি। অনুরোধ করায় আমার দুটি মোবাইল ফেরত দিয়ে যায়।
তিনি বলেন, একটি মাইক্রোতে করে দেশে ফিরছিলেন এক প্রবাসী। ওই গাড়িতে আক্রমণ করে কয়েকজনকে মারধর করে সব লুটে নিয়ে গেছে। একইভাবে সব গাড়িতে পর্যায়ক্রমে ডাকাতি চালায়। গাড়ি ভাঙচুর ও অনেককেই মারধর করে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবু বলেন, ঘটনা শুনেছি। এখনো বিস্তারিত জানি না। তবে ওই রাস্তাটি খুব বেশি ব্যস্ত না হলেও বেড়া-বাঘাবাড়ি হয়ে ঢাকায় যাওয়ার জন্য বেশকিছু গাড়ি ওই রাস্তা দিয়ে যায়। এটি ডাকাতরা জেনেই গাছ ফেলে ডাকাতি করেছে।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ পাঠানো হয়। সুনির্দিষ্ট করে সংখ্যা বলতে না পারলেও কয়েকটি গাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এনজে