দিনাজপুরে সিংড়া শালবনে আগুন, পুড়েছে ১৭ একরের ছোট গাছ
Published: 3rd, March 2025 GMT
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলায় জাতীয় উদ্যান সিংড়া শালবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আজ সোমবার বেলা দেড়টার দিকে বনের উত্তর প্রান্তে বেতবাগান অংশে এই আগুন লাগে। আগুনে ১৭ একর জমির বেতবাগান পুড়ে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগের সহকারী বনসংরক্ষক নুরুন্নাহার। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট বিট কর্মকর্তা গয়া প্রসাদ পাল জানান, দুপুরে বনে টহলরত অবস্থায় বন বিভাগের লোকজন হঠাৎ বেতবাগানে আগুন দেখতে পান। পরে বীরগঞ্জ উপজেলা ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হয়। ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে। কী কারণে আগুন লেগেছে বা আগুনের উৎপত্তি কীভাবে, তা এখনো জানা যায়নি। আগুন লাগার কারণ ও প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে বড় কোনো গাছ পুড়ে যায়নি বলে জানান তিনি।
বীরগঞ্জ উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা মোসলেমউদ্দিন বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে আসি। মোট দুটি গাড়ি আনা হয়েছে। বনের উত্তর প্রান্তে বেতবাগানে আগুনটা লেগেছে। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে আছে। বড় গাছের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। ছোট গাছগুলো বেশি পুড়েছে। আমরা এখনো পুড়ে যাওয়া গাছের সংখ্যা বা ক্ষতির পরিমাণ হিসাব করতে পারিনি।’
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ভোগনগর ইউনিয়নে সিংড়া শালবনের অবস্থান। দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ৮৫৯ দশমিক ৯৩ একর জমির ওপর সিংড়া শালবন। ২০১০ সালে বন বিভাগ এই বনকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করে। শালগাছ ছাড়াও এই বনে রয়েছে জারুল, তরুল, শিলকড়ই, শিমুল, মিনজীরি, সেগুন, গামারি, আকাশমণি, ঘোড়ানিম, সোনালু, গুটিজাম, হরীতকী, বয়রা, আমলকী, বেতসহ বিভিন্ন রকমের উদ্ভিদ, লতাগুল্ম, ভেষজ ও ফুলের গাছ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব রগঞ জ উপজ ল বন ব ভ গ শ লবন
এছাড়াও পড়ুন:
ফের ফুটপাত বাণিজ্যে চসিক
দখলমুক্ত ফুটপাত নাগরিকের অধিকার। আইন অনুযায়ী এই অধিকার রক্ষার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। অথচ চট্টগ্রামে ফুটপাত বাণিজ্যে লিপ্ত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। সৌন্দর্যবর্ধনের নামে দেওয়া ইজারায় ফুটপাত, নালা ও উদ্যানে অন্তত গড়ে উঠেছে তিন শতাধিক দোকান। এগুলো উচ্ছেদে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো ফুটপাত, জলাশয় ও উন্মুক্ত স্থানে সৌন্দর্যবর্ধনের নামে আবারও টেন্ডার (দরপত্র) আহ্বান করা হয়েছে। এতে ৪ শতাধিক আবেদন পত্র জমা পড়েছে। আবেদনের অধিকাংশই বিএনপি ও দলটির অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের। সৌন্দর্যবর্ধনের নামে অতীতের মতো ফুটপাত, নালা, উদ্যানে দোকান নির্মাণ ও বিলবোর্ড ব্যবসার হিড়িক পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের দাবি, সৌন্দর্যবর্ধনে যোগ্য প্রতিষ্ঠানকে শুধু কাজ দেওয়া হবে।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, চসিক এলাকায় বিভিন্ন সড়ক বিভাজক, ফুটপাত, ফুটওভার, ফ্লাইওভারের ওপর ও নিচের অংশ, পরিত্যক্ত খালি স্থান, উন্মুক্ত স্থান, জলাশয়ে সৌন্দর্যবর্ধন এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিভিন্ন সংস্থা, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে ওয়ার্ডভিত্তিক প্রস্তাব আহ্বান করা হয়।
দরপত্র বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সিটি করপোরেশনের আওতাধীন নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডকে ক্লিন, গ্রিন ও স্বাস্থ্যকর সিটির আওতায় আনতে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন মেয়র। দরপত্রে ৯টি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে– সৌন্দর্যবর্ধনের কাজে চসিক অর্থায়ন করবে না। সৌন্দর্যবর্ধনের বিনিময়ে বিজ্ঞাপনী ফলক স্থাপন করতে পারবে ইজারা পাওয়া প্রতিষ্ঠান। তা ছাড়া দৃষ্টিনন্দন, পরিবেশবান্ধব ও দেশের ঐতিহ্য-সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রস্তাবকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
জানা গেছে, সিটি করপোরেশনের প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে নগরের ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩২টি ওয়ার্ডে চার শতাধিক আবেদন জমা পড়েছে। আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। চট্টগ্রাম নগরের সড়ক বিভাজকে (মিড আইল্যান্ড) সৌন্দর্যবর্ধন ও ফুটপাতে যাত্রীছাউনি নির্মাণে অনুমোদন চেয়েছে জে এম পাবলিসিটি। বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠানটির মালিক চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তীর স্ত্রী নিহার সুলতানা। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগেও চসিকে বিলবোর্ড বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে।
টাইগার পাস এলাকার এক যুবদল নেতা বলেন, এর আগে দরপত্র কেনার অভিজ্ঞতা তাঁর নেই। তার পরও দুটি এলাকায় কাজ পাওয়ার জন্য তিনি আবেদন করেছেন। তাঁর জানা মতে, অধিকাংশ আবেদনই করেছেন বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলের নেতারা।
এর আগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত মোট ৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে সৌন্দর্যবর্ধন ও আধুনিকায়নের জন্য নগরের ৪১টি এলাকা ইজারা দিয়েছিলেন সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। কাজ পাওয়াদের অধিকাংশ ছিলেন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতা, পরিবহন মালিক সমিতির নেতা ও সাংবাদিকের প্রতিষ্ঠান। এর পর ছয় মাস সিটি করপোরেশনের প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করা আওয়ামী লীগ নেতা খোরশেদ আলম সুজনের সময় নগরের ১২টি জায়গা ইজারা দেওয়া হয়। এর মধ্যে ছয়টিই পেয়েছিলেন প্রশাসকের ঘনিষ্ঠ দলীয় লোকজন ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। পরে মেয়র রেজাউল করিমের সময়ও ফুটপাত ইজারা দেওয়া হয়। তবে দরপত্র ছাড়াই এসব জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।
চসিকের সৌন্দর্যবর্ধন কাজ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে কেন দেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, সিটি করপোরেশনের লোকবল নেই। রক্ষণাবেক্ষণের সামর্থ্যও নেই। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দিলে তারা রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারে। তবে দলীয় বিবেচনায় কেউ কাজ পাবে না বলে তিনি দাবি করেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, রাস্তা বা ফুটপাত বন্ধ করে কোনো কিছু অনুমোদন দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে কমিটি গঠন করা হবে।