ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে এসিবাসের ভাড়া বৃদ্ধি ও অরাজকতা অবসানের লক্ষে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের পক্ষ থেকে সংগঠনের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বির নেতৃত্বে সোমবার (৩ মার্চ) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিয়াকে স্মারকলিপি প্রদান কারা হয়। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, “ ‘ঢাকা নগর পরিবহন’ নামে একটি কোম্পানী গত সপ্তাহে এসিবাস চালু করে ৮০ টাকা ভাড়া আদায় করছে। যাত্রীরা প্রতিবাদ কারলে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।


নারায়ণগঞ্জে গণপরিবহন নিয়ে অরাজকতা দীর্ঘ দিনের। বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের শাসনামলে সরকার ও প্রশাসনের সহায়তায় শামীম ওসমানের মাফিয়া বাহিনী নারায়ণগঞ্জের জনগণকে জিম্মি করে নির্বিঘ্নে গণ বিরোধী তৎপরতা চালিয়েছে। তারা গণপরিবহনকে চাঁদা আদায়ের অন্যতম খাত বানিয়েছিল। যখন তখন অযৌক্তিক ভাবে ভাড়া বৃদ্ধি করে জনদুর্ভোগ তৈরি করেছে। ২০১১ সালেসহ বিভিন্ন সময়ে এর বিরুদ্ধে জনপ্রতিরোধ গড়ে উঠলে তারা ভাড়া কমাতে বাধ্য হয়েছে।  


গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সরকার বদলের পরে নারায়ণগঞ্জের চাঁদাবাজচক্র পালিয়ে যায়। পরে গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের জনতার আন্দোলনের মুখে নন-এসি বাসের ভাড়া কিছুটা কমে আসে। কিন্তু আমরা লক্ষ করছি ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে এসি বাসের নৈরাজ্য অব্যহত রয়েছে। যখন ইচ্ছে তখন বিভিন্ন নামে এখানে বাস নামছে, বন্ধ হচ্ছে, যা ইচ্ছে ভাড়া আদায় করছে। এ সব বাসের রুট পারমিট আছে কি নেই তা নজরদারির যেমন কোন উদ্যোগ নেই, ভাড়া নির্ধারনের ক্ষেত্রেও কোন প্রশাসনিক তৎপরতা নেই। ফলে এসিবাস নিয়ে এখনো এখানে গণপরিবহনচক্র যা ইচ্ছে তাই করে যাচ্ছে। 


সরকার বদলের পর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে বিআরটিসি এসিবাস ৬৫ টাকা এবং বিভিন্ন নামে বেসরকারী এসিবাস ৭০ টাকা ভাড়ায় চলেছে। একটা সময় বিআরটিসি এসিবাস বন্ধ হয়ে গেলে শুধু বেসরকারী বাস চলাচল করেছে। কিন্তু গত সপ্তাহে হঠাৎ করে “ঢাকা নগর পরিবহন” নামে একটি কোম্পানী ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে এসিবাস চালু করে ৮০ টাকা ভাড়া আদায় করছে। যাত্রীরা প্রতিবাদ কারলে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।


আরটিসির (রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন) চেয়ারম্যান হিসেবে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে এসিবাসের ভাড়া কমিয়ে ৭০ টাকায় আনা এবং যাত্রী-ভোগান্তি অবসানের জন্য আপনাকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা দাবি জানাচ্ছি।” জেলা প্রশাসক যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের প্রতিনিধিদের এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।


সংগঠনের পক্ষ থেকে সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুরহক দীপু, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি এড.

প্রদীপ ঘোস বাবু, সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েল, গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির জেলা সাধারণ সম্পাদক এড. আওলাদ হোসেন, সিপিবির জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, বাসবের জেলা সদস্য সচিব আবু নাইম খান বিপ্লব, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুর সুজন প্রমুখ।   
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ র ট গণপর বহন পর বহন এস ব স সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদের মোনাজাতে খালেদা জিয়ার নাম না বলায় ইমামকে যুবদল নেতার হুমকি

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নে ঈদের নামাজের পর এক দোয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নাম উল্লেখ না করায় এক ইমামকে বরখাস্তের হুমকি দিয়েছেন স্থানীয় যুবদল নেতা।

সোমবার (৩১ মার্চ) কাশিপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহে দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করেন চর কাশিপুরের আঞ্জুবাহার জামে মসজিদের খতিব মুফতি মুহাম্মদ ইমদাদুল হক।

তিনি অভিযোগ করেন, নামাজের দোয়ায় খালেদা জিয়ার নাম উল্লেখ না করায় ফতুল্লা থানা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সৈকত হাসান ইকবাল তাকে হয়রানি করেছেন।

ইমদাদুল হক ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক। তিনি একটি ফেসবুক পোস্টে ঘটনাটি উল্লেখ করেছেন যে তাকে “হয়রানি করা হয়েছিল এবং চাকরি হারানোর হুমকি দেওয়া হয়েছিল।”

“ঈদের দিন ঈদগাহ থেকে মনে কষ্ট নিয়ে বাড়ি ফিরলাম.. “শিরোনামের তার পোস্টে, ইমদাদুল ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। স্থানীয় অনেকেই যুবদল নেতার আচরণের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং এরই মধ্যে পোস্টটি শতাধিক মানুষ শেয়ার করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, কাশিপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহে দ্বিতীয় জামাত সকাল পৌনে টার দিকে অনুষ্ঠিত হয়। আখেরি মোনাজাতের সময়, ইমাম দেশ ও জাতির মঙ্গল এবং সকল অসুস্থ ব্যক্তির আরোগ্য কামনা করে প্রার্থনা করেন। তবে তিনি কোনও নির্দিষ্ট নাম উল্লেখ করেননি।

নামাজের পর, যুবদল নেতা সৈকত হাসান ইকবাল এবং তার অনুসারীরা ইমাম ইমদাদুল হকের মুখোমুখি হন। অনুরোধ সত্ত্বেও ইমাম খালেদা জিয়ার নাম উল্লেখ না করায় ইকবাল ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তিনি ইমামের সাথে তর্ক শুরু করেন, তবে অন্যান্য মুসলিম ব্যক্তিদের তীব্র আপত্তির মুখে তিনি স্থান ত্যাগ করেন।

মুফতি মুহাম্মদ ইমদাদুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নামাজের আগে স্থানীয় বিএনপি সমর্থক এবং ঈদগাহ কমিটির সদস্য তাকে খালেদা জিয়ার আরোগ্যের জন্য বিশেষভাবে প্রার্থনা করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। তবে, তিনি কোনও নির্দিষ্ট নাম উল্লেখ না করে সকল অসুস্থ ব্যক্তির আরোগ্যের জন্য প্রার্থনা করার সিদ্ধান্ত নেন।

“আমি যথারীতি নামাজ আদায় করেছি এবং কারও নাম উল্লেখ করিনি কারণ এটি সকল রাজনৈতিক পটভূমির লোকদের নিয়ে একটি জনসমাবেশ ছিল। আমি সকলের মঙ্গল কামনা করে প্রার্থনা করেছি, কিন্তু নামাজের পরে যুবদল নেতা ইকবাল আমাকে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেন। তিনি আমার সাথে আক্রমণাত্মকভাবে কথা বলেন, আমি কেন তার নাম নেই নি তা জানতে চান। 

ইমদাদুল হক স্থানীয় বিএনপি নেতাদের যুবদল নেতার অসদাচরণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

অভিযুক্ত যুবদল নেতা সৈকত হাসান ইকবালকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি তার সাথে খারাপ ব্যবহার করি নি। আমি কেবল জিজ্ঞাসা করেছি, অনুরোধ করার পরেও খালেদা জিয়ার নাম উল্লেখ করেননি কেনো। 

তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, যে তিনি তা করতে বাধ্য নন। তারপর আমি তার চাকরি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করি এবং পরে জানতে পারি তার মসজিদ কমিটির সভাপতি আমাদের ছোট ভাইদের একজন। ইমামকে বরখাস্ত করার হুমকি দেওয়ার অভিযোগও অস্বীকার করেছেন তিনি।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিদ্ধিরগঞ্জে চাঁদাবাজিসহ সংগঠন বিরোধী কর্মকান্ডের প্রতিবাদে সভা
  • সিদ্ধিরগঞ্জে  চাঁদাবাজিসহ সংগঠন বিরোধী কর্মকান্ডের প্রতিবাদে সভা
  • সিদ্ধিরগঞ্জে  চাঁদাবাজীসহ সংগঠন বিরোধী কর্মকান্ডের প্রতিবাদে সভা
  • নারায়ণগঞ্জে থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার
  • নারায়ণগঞ্জে পূর্ব বিরোধের জেরে যুবককে গুলি করে হত্যা
  • ঈদের স্পিরিট ধারণ করে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবো : ডিসি জাহিদুল
  • ৩নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা তাজুল ইসলাম আর নেই, মামুন মাহমুদ’র শোক
  • ঐতিহ্যবাহী সনমান্দী বড় ঈদগাহ এর সভাপতি হলেন সাংবাদিক মনির
  • ঈদের মোনাজাতে খালেদা জিয়ার নাম না বলায় ইমামকে যুবদল নেতার হুমকি
  • ব্যাটারি রিকশা— একটু আস্তে চালান ভাই