বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে কোম্পানির নগদ রিজার্ভ সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করেছেন কিংবদন্তি বিনিয়োগকারী ও কোম্পানির চেয়ারম্যান ওয়ারেন বাফেট। একই সঙ্গে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে এই তহবিল কৌশলগতভাবে ব্যবহার করে ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা হবে। জাপানে বড় ধরনের বিনিয়োগ করা হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বাফেট।

প্রতিবছর মার্চ মাসে বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে বার্ষিক চিঠি লেখেন ওয়ারেন বাফেট। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সেই চিঠিতেই তিনি কোম্পানির ৩২১ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ৩২ হাজার ১৪০ কোটি ডলার নগদ জমা নিয়ে শেয়ারহোল্ডারদের আশ্বস্ত করেছেন। খবর ইকোনমিক টাইমস।

অনেকেই মনে করছিলেন, এত বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ সংরক্ষিত থাকার কারণে কোম্পানির ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধি নিম্নমুখী হবে। তবে বাফেট আরও আশ্বস্ত করেছেন যে এই অর্থ অলস পড়ে থাকবে না। বড় ধরনের বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে। ফলে কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারদের এ নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই।

কোম্পানির নগদ সংরক্ষণ বাড়লেও বাফেট পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন যে বার্কশায়ার কোম্পানি মূলত ইকুইটি বিনিয়োগ করবে। কোম্পানির নগদ জমা বাড়লেও তার বিনিয়োগের সিংহভাগ এখনো ইকুইটি বিনিয়োগে আছে এবং ভবিষ্যতে এই কৌশল থেকে সরে যাওয়ার ইচ্ছা নেই। চলতি প্রান্তিকের আগের প্রান্তিক পর্যন্ত দেখা গেছে, টানা দুই প্রান্তিকে বাফেট স্টক বাই ব্যাক করেনি। এ ঘটনা থেকে বিশ্লেষকদের অনুমান, বাফেট মনে করছেন না যে তাঁর কোম্পানির শেয়ার অবমূল্যায়িত হচ্ছে।

বিপুল পরিমাণ নগদ জমা থেকে কোথায় বিনিয়োগ করা হবে, সে বিষয়ে কিছুটা ইঙ্গিত দিয়েছেন ওয়ারেন বাফেট। তাঁর পরিকল্পনা জাপানে আরও বিনিয়োগ করা, যদিও সেখানে ইতিমধ্যে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ আছে।

এবার জাপানের পাঁচটি বৃহৎ ট্রেডিং প্রতিষ্ঠানে এই বিনিয়োগ করবেন বাফেট। সেগুলো হলো ইতোচু, মারুবেনি, মিৎসুবিশি, মিতসুই ও সুমিতোমো। এসব কোম্পানি ভোগ্যপণ্য থেকে শুরু করে জাহাজ ও ইস্পাত পর্যন্ত বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসা করে থাকে। এর মধ্য দিয়ে বাফেট জাপানের অর্থনীতিতে আরও সংহত হয়ে ব্যবসা করবেন বলে আশা করছেন।

সেই সঙ্গে ওয়ারেন বাফেটের ইঙ্গিত, এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ আরও বাড়বে। ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ দেখা গেছে, এসব ট্রেডিং কোম্পানিতে বার্কশায়ারের বিনিয়োগ ছিল ২৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৩৫০ কোটি ডলার।

এদিকে ২০২৪ সালে বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে কোম্পানির বাজার মূলধন এই প্রথম এক ট্রিলিয়ন বা এক লাখ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। স্বভাবসিদ্ধভাবে ওয়ারেন্ট বাফেট এর কৃতিত্ব দিয়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীদের। তবে গত বছর কোম্পানিটির মুনাফা প্রায় ৭০০ কোটি ডলার কমেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ন য় গ কর র নগদ

এছাড়াও পড়ুন:

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য জাপানের ৩.২ মিলিয়ন ডলার সহায়তা

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) ২০২৪ সালে ঘূর্ণিঝড় রেমাল এবং পরপর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়গুলোর খাদ্য নিরাপত্তা বাড়াতে জাপান সরকারের পক্ষ থেকে ৫০০ মিলিয়ন ইয়েন (প্রায় ৩.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) সহায়তা গ্রহণ করেছে।

রবিবার (২ মার্চ) জাপানের বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূত এইচ.ই. মি. সাইদা শিনিচি এবং WFP-এর প্রতিনিধি ও দেশের পরিচালক ডোমেনিকো স্কালপেলির মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

এসময় রাষ্ট্রদূত সাইদা বলেন, “আমি আশাবাদী যে এই প্রকল্পটি বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় দ্বারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলা সমূহের অবকাঠামো পুনর্বহাল করতে সাহায্য করবে। এই প্রকল্পটি জীবন রক্ষাকারী সহায়তা এবং পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টাকে বাড়ানোর জন্য মৌলিক। জাপান টেকসই সমাধানের দিকে কাজ করতে থাকবে এবং WFP-এর মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাথে সহযোগিতা করবে।”

রাষ্ট্রদূত বলেন, “এই সহায়তা তাত্ক্ষণিক খাদ্য প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদী খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য অবকাঠামো পুনর্নির্মাণে সহায়তা করবে। এর মধ্যে রয়েছে রাস্তা, বাঁধ এবং ছোট আকারের সেতু, যা ঘূর্ণিঝড় রেমাল ও ২০২৪ সালের মারাত্মক বন্যায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, একটি অনন্য জলবায়ু জরুরি পরিস্থিতির বছর, যা দেশজুড়ে প্রায় ১৮ মিলিয়ন মানুষকে প্রভাবিত করেছে।”

এই সহায়তা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা - খুলনা, সাতক্ষীরা, কুমিল্লা, বরগুনা, মৌলভীবাজার ও কুড়িগ্রামে পাঁচ লাখ মানুষের উপকারে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

WFP-এর বাংলাদেশে দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালক ডোমেনিকো স্কালপেলি বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো সম্প্রদায়গুলোর বাজার ও অপরিহার্য সেবাগুলোর অ্যাক্সেসকে বাধাগ্রস্ত করেছে, যা পুনরুদ্ধারকে ধীর করেছে এবং মানুষের খাদ্য নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করেছে। তাদের খাদ্য নিরাপত্তাকে সমর্থন করে এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো পুনর্নির্মাণ করে আমরা তাত্ক্ষণিক পুনরুদ্ধারে সহায়তা করব এবং তাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার সক্ষমতা বাড়াব।”

ঘূর্ণিঝড় রেমাল এবং সিলেট, যমুনা অববাহিকা ও পূর্বাঞ্চলের বন্যার পরে, WFP বাংলাদেশে ১২টি বন্যা-প্রভাবিত জেলায় প্রায় ১,৫০,০০০ পরিবারের তাত্ক্ষণিক সহায়তা প্রদান করেছে।

গত সেপ্টেম্বর থেকে, জাপান UNHCR এবং UNICEF-এর মাধ্যমে বন্যা-প্রভাবিত এলাকাগুলোতে ১ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা প্রদান করেছে এবং পূর্ব বাংলাদেশে জরুরি ত্রাণ প্রদান করতে জাপান প্ল্যাটফর্মের জন্য ২ মিলিয়ন ডলারের জরুরি মানবিক সহায়তা দিয়েছে, যা জাপানি এনজিওগুলোর একটি প্ল্যাটফর্ম। এছাড়াও, ঢাকা থেকে জাপানি বাণিজ্য ও শিল্প সমিতি এবং ঢাকা জাপানী সমিতি বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও পরিবারগুলোর সহায়তার জন্য মোট ২ লাখ টাকা দান করেছে। জাপান এই সপ্তাহে বন্যা প্রতিক্রিয়া ও পুনরুদ্ধারের জন্য IOM-এর সাথে ৩.২ মিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

ঢাকা/হাসান/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেশ পাণ্ডুলিপি পুরস্কার পাচ্ছেন গবি শিক্ষার্থী আলীনুর
  • ভর্তিতে নতুন কোটা বাতিলের দাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের
  • সাবেক মেয়র সূচনার ফ্ল্যাট ও ব্যাংক হিসাব জব্দ
  • কোটা নিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র অধিকার পরিষদ
  • শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে কোটা পাবেন জুলাই অভ্যুত্থানে হতাহতদের সন্তানরা
  • ভর্তিতে কোটা পাবেন জুলাই অভ্যুত্থানের যোদ্ধা-শহীদদের সন্তানরা
  • ভর্তিতে কোটার সুবিধা পাবে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যরাও
  • ২০২৪ সালে দেড় লাখেরও বেশি মানুষের বীমা দাবি নিষ্পত্তি করেছে গার্ডিয়ান লাইফ
  • বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য জাপানের ৩.২ মিলিয়ন ডলার সহায়তা