জামালপুরে বাস সার্ভিস সংস্কারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। এর প্রতিবাদে একই স্থানে সড়ক অবরোধ এবং বিক্ষোভ করে বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন ও মালিক সমিতির নেতাকর্মীরা।

সোমবার (৩ মার্চ) বেলা ১২টা থেকে টাঙ্গাইল বাস স্ট্যান্ড মোড়ে জামালপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করা হয়। এ সময় শিক্ষার্থী ও শ্রমিকদের পাল্টাপাল্টি তিন ঘণ্টার বেশি সময় অবরোধ করায় সড়কের দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আবিদ সৌরভ বলেন, ‘‘জামালপুরে রাজিব এক্সপ্রেস সার্ভিসের বাসের কারণে অনেকে প্রাণ হারাচ্ছে। তাই রাজিব বাস সার্ভিস বন্ধের দাবি জানাতে আমরা আন্দোলনে নেমেছি। এছাড়াও পুরো জেলায় বাস সার্ভিস সংস্কারের জন্য এই আন্দোলন। কিন্তু এ সময় বাস শ্রমিকরা আমাদের উপর চড়াও হয়। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করেছি। সব বাস চললেও রাজিব সার্ভিসের বাস চলতে দেওয়া হবে না। এর ব্যত্যয় ঘটলে আরো বড় আন্দোলনে যেতে পারি।’’

আরো পড়ুন:

সাভারে সড়ক অবরোধ করে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ

বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের ঢাকা-আরিচা সড়ক অবরোধ 

জামালপুর জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শুভ বলেন, ‘‘আলোচনার জন্য ডাকা হলে উল্টো মারমুখী অবস্থানে যায় ছাত্ররা। এতে আহত হয় এক শ্রমিক। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে সারা জেলার সকল বাস-মিনিবাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।’’ 

জামালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সল মো.

আতিক জানান, বিকেল ৩টার দিকে আন্দোলনকারীরা অবরোধ তুলে নেয়। বাস চলাচল স্বাভাবিক রাখতে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।
 

ঢাকা/শোভন/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন অবর ধ সড়ক অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, বন্ধ মানবিক সহায়তাও

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ঘরবাড়ি ও তাঁবুর মতো আশ্রয়কেন্দ্রও ইসরায়েলি বর্বরতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার দেশটি। পাশাপাশি আট সপ্তাহ ধরে উপত্যকায় খাদ্য, ওষুধ ও ত্রাণসামগ্রী প্রবেশ বন্ধ করে রেখেছে। এ পরিস্থিতিকে জাতিসংঘ সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট হিসেবে বর্ণনা করেছে। 

আলজাজিরার সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, বুধবার রাতভর এবং বৃহস্পতিবার ভোরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মধ্য গাজার নুসেইরাতের কাছে একটি তাঁবুতে তিন শিশু এবং গাজা শহরের একটি বাড়িতে এক নারী ও চার শিশু নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক এক হামলায় স্থানীয় সাংবাদিক সাঈদ আবু হাসানাইনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে কমপক্ষে ২৩২ সাংবাদিক নিহত হলেন।
 
গাজার দেইর এল-বালাহ থেকে আলজাজিরার তারেক আবু আযুম বলেন, অবরুদ্ধ উপত্যকা স্পষ্টতই ইসরায়েলি সেনা বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের সাক্ষী হচ্ছে। এখানকার অক্ষত ও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোও গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেশির ভাগ সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় উদ্ধারকারীরাও অসহায় হয়ে পড়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়াদের কাছে পৌঁছানোর জন্য তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
 
অধিকৃত পশ্চিম তীর পরিচালনাকারী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘ইসরায়েলের আক্রমণের কোনো বিরতি নেই, কোনো করুণা নেই, কোনো মানবতা নেই।’
 
প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল ত্রাণ সহায়তা অবরোধ করে রাখায় গাজার মানবিক সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এটিকে জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় অফিসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ‘ফিলিস্তিনি জীবনের ইচ্ছাকৃত ধ্বংসাবশেষ’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, গাজা উপত্যকা এখন সম্ভবত ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামলা শুরুর পর ১৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।
 
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অপুষ্টির সম্মুখীন নারী ও শিশুদের বিপজ্জনক ও বিপর্যয়কর ক্ষতির কথা তুলে ধরেছে। তারা অনেকেই পর্যাপ্ত খাবার, পানীয় জল এবং শিশুর খাবারের অভাবের মুখোমুখি হয়েছে। ইসরায়েলের গাজায় সাহায্য পাঠাতে অব্যাহত অস্বীকৃতি ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক আদালতের একটি আদেশকে লঙ্ঘন করে। সেই আদেশে দুর্ভিক্ষ ও অনাহার রোধে জরুরি ভিত্তিতে উপত্যকায় সাহায্য পৌঁছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
 
গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে রাখা নিয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে) আগামী সপ্তাহে হেগে অনুষ্ঠিত গণশুনানির একটি সূচি প্রকাশ করেছে। সেখানে গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে জাতিসংঘ, এনজিওর কার্যকলাপকে অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলের আইনি বাধ্যবাধকতা নিয়ে আলোচনা করা হবে। আগামী সোমবার শুরু হতে যাওয়া এ শুনানির আগে প্রায় ৪৫টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা লিখিত বিবৃতি জমা দিয়েছে।
 
হাসপাতাল সূত্র আলজাজিরাকে জানিয়েছে, বুধবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ১৮ মাসে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫১ হাজার ৩০৫ জন নিহত এবং ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৬ জন আহত হয়েছেন। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ