কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তাহসীন বাহারের সম্পদ ক্রোকের আদেশ
Published: 3rd, March 2025 GMT
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তাহসীন বাহারের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে উত্তরায় তাঁর নামে ১টি ফ্ল্যাট ও ৯টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন আজ সোমবার এ আদেশ দেন।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয়েছে, তিন কোটি চার লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাহসীন বাহারের বিরুদ্ধে দুদক মামলা করেছে। তাঁর ব্যাংক হিসেবে ৪২ কোটি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ১১ নভেম্বর কুমিল্লা-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, তাঁর স্ত্রী মেহেরুন্নেসা, মেয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তাহসীন বাহার ও আয়মান বাহারের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয় , আ ক ম বাহাউদ্দিন, তাহসীন বাহারসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিয়োগ–বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নানা উন্নয়ন প্রকল্পের সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। বাহাউদ্দিন ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে ঢাকার উত্তরায় ফ্ল্যাট, কুমিল্লায় একাধিক প্লট, মার্কেটসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ রয়েছে।
২০১১ সালে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন হওয়ার পর দুই দফায় মেয়র ছিলেন বিএনপির নেতা মনিরুল হক। ২০২২ সালের নির্বাচনে তাঁকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের নেতা আরফানুল হক।
আরফানুল হক ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মারা যাওয়ায় এই সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে গত বছরের মার্চে উপনির্বাচন হয়। সেই উপনির্বাচনে তাহসীন বাহার বিজয়ী হন। তবে মেয়র হলেও তাহসীন বেশি দিন দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাবা বাহারের সঙ্গে তিনিও পালিয়ে যান।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দুদকের তিন মামলায় স্ত্রী-কন্যাসহ লিটনের ২৯ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও তার স্ত্রী শাহীন আকতার, মেয়ে আনিকা ফারিহার অবৈধ সম্পদের পরিমাণ প্রায় ২৯ কোটি টাকা, যার সন্ধান পাওয়ার দাবি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
দুদক জানতে পেরেছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে খায়রুজ্জামান লিটন নিজে এবং স্ত্রী-কন্যার নামে এই সম্পদ অর্জন করেছেন। ঘুষ দুর্নীতির টাকা বিদেশে পাচারও করেছেন। তাদের সবার একাধিক ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে।
অনুসন্ধানে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসার পরিপ্রেক্ষিতে খায়রুজ্জামান লিটন এবং তার স্ত্রী শাহীন আকতার, মেয়ে আনিকার বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করেছে দুদক।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এই তথ্য দিয়েছেন।
তিনটি মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন-১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদকের প্রথম মামলায় খায়রুজ্জামান লিটনের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে ১০ কোটি ৩৫ লাখ ৮৯ হাজার ৩০৪ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
সেই সঙ্গে তার নামের ১২টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে মোট ৫২ কোটি ২৩ লাখ ১৭ হাজার ২৫১ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দ্বিতীয় মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, শাহীন আকতার তার স্বামীর সহযোগিতায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে ১১ কোটি ৪১ লাখ ৬২ হাজার ২৪৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। তার নামে থাকা ১৩টি ব্যাংক হিসাবে ৭৬ কোটি ২৯ লাখ ৭৮ হাজার ৮০২ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে দুদক। মামলায় স্ত্রী শাহীন আকতারের সঙ্গে আসামি হয়েছেন খায়রুজ্জামান লিটন।
তৃতীয় মামলায় মেয়ে আনিকার বিরুদ্ধে তার বাবার সহযোগিতায় দুর্নীতির মাধ্যমে ৬ কোটি ৮০ লাখ ৭৯ হাজার ৭৮১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তার নামের পাঁচটি ব্যাংক হিসাবে দুই কোটি ৪৪ লাখ ৮১ হাজার ৫৭৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন শনাক্ত হয়েছে। এ মামলায় খায়রুজ্জামান লিটনকেও আসামি করা হয়েছে।
গত বছরের আগস্টে সরকার পতনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর থেকে আত্মগোপনে আছেন লিটন।
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর লিটনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরুর কথা জানায় দুদক। গত ৬ মার্চ খায়রুজ্জামান লিটন, তার স্ত্রী শাহীন আক্তার, দুই মেয়ে আনিকা ও মায়সা সামিহা জামানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন আদালত।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল