ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় আমির হোসেন নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে স্ত্রী ও শ্যালিকাকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার রাতে উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ধজনগর গ্রামে ওই দুজন খুন হন। ঘটনার পর থেকে আমির পলাতক।

নিহত দুজন হলেন ধজনগর গ্রামের মৃত রওশন আলীর মেয়ে জ্যোতি আক্তার (২০) ও তাঁর বোন স্মৃতি আক্তার (১৪)। প্রায় দেড় বছর আগে জ্যোতি আক্তার ও আমির হোসেনের বিয়ে হয়। আমিরের বাড়ি কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার জামতলী গ্রামে।

গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য ইউনুস পাঠান বলেন, আজ সোমবার সকালে খবর পেয়ে তাঁরা ওই বাড়িতে গিয়ে বিছানায় দুই বোনের লাশ দেখতে পান। তাঁদের শরীরে আঘাত না থাকায় শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরিবারের লোকজন বলছেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। গতকাল দিবাগত রাত একটার পর এ ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছেন তাঁরা।

আমিরের শ্যালক জাহিদ হোসেনের বরাত দিয়ে কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল কাদের বলেন, গতকাল রাত সোয়া ৯টার দিকে জাহিদকে নিয়ে আলাদা ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন আমির। তাঁরা দুজন রাতে সাহ্‌রি খান। তখন আমির জানিয়েছিলেন, তাঁর স্ত্রী ও শ্যালিকা সাহ্‌রি খাবেন না। পরে জাহিদ ঘরে চলে যান। আর আমির তাঁর স্ত্রীর ঘরে যান। ভোর পাঁচটায় ঘুম ভাঙলে জাহিদ দেখেন ঘরের দরজা খোলা। তিনি দুলাভাই বলে ডাক দিলেও কোনো সাড়া পাননি। জাহিদ পাশের ঘরে গিয়ে দেখেন তাঁর বোনদের হাত শক্ত, সোজা হচ্ছিল না। তিনি তখন পাশের বাড়ির লোকজনকে ডেকে আনেন।

ওসি আরও বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। স্মৃতির বাঁ পাশের চোয়ালের নিচে লাল জখম রয়েছে। জ্যোতিকে বালিশ চাপা দিয়ে ও স্মৃতিকে হাতে চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

স্ত্রী-শ্যালিকাকে শ্বাসরোধে হত্যা, স্বর্ণালংকার-ফোন নিয়ে লাপাত্তা সামিউল

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় স্ত্রী-শ্যালিকাকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে আমির হোসেন সামিউল নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। রোববার গভীর রাতে উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ভারত সীমান্তঘেঁষা ধজনগরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। হত্যার পর ওই বাড়ি থেকে স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোনসেট নিয়ে পালিয়ে যায় সামিউল।

নিহত জ্যোতি আক্তার (২৫) সামিউলের স্ত্রী ও স্মৃতি আক্তার (১৪) শ্যালিকা। তারা ধজনগর গ্রামের মৃত রৌশন আলীর মেয়ে। বছর তিনেক আগে জ্যোতির সঙ্গে পাশের কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়ার জামতলী গ্রামের সামিউলের বিয়ে হয়। সে পেশায় দিনমজুর। কখনও মাটি কাটার শ্রমিক হিসেবে, কখনও রাজমিস্ত্রি বা ইলেকট্রিক মিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে সে। 

জ্যোতি-স্মৃতির ছোট ভাই জিহান মিয়া (১১) জানায়, রোববার রাতে পাশের কক্ষের বিছানায় ঘুমাতে যায় তার দুই বোন। ভগ্নিপতি সামিউল তার সঙ্গে ঘুমিয়েছিল। সোমবার সকালে জেগে তাকে দেখতে পায়নি। এ সময় পাশের কক্ষে বোনদের ডাকতে যায়। তারা সাড়া না দেওয়ায় সে নাক ছুঁয়ে দেখে কারও নিঃশ্বাস পড়ছে না। ভয় পেয়ে জিহান চিৎকার শুরু করলে প্রতিবেশীরা সেখানে আসে। সংবাদ পেয়ে কসবা থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল কাদের ও এসআই মোহাম্মদ ফারুক হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ সেখানে আসে। তারা সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠান।

জিহানের খালা জাহানারা বেগম সকালে ভাগনিদের মৃত্যুর খবরে পাশের বড়মুড়া গ্রাম থেকে ছুটে আসেন। তিনি বলেন, ‘আমার বোনের কষ্টের শেষ নেই। তাঁর স্বামী ২০১৭ সালে ক্যান্সারে মারা যান। অনেক কষ্ট করে চার সন্তানকে লালন-পালন করছেন।’

জিহান জানায়, দেড় মাস আগে একটি মামলায় তার মা লোনা বেগম ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারে যান। এই সংবাদে বড় বোন জ্যোতি আক্তার এসে তাদের সঙ্গে থাকছেন। দুই দিন আগে স্বামী সামিউলকে নিয়ে জ্যোতি মাকে কারাগারে দেখতে যান। জিহানের বড় ভাই জাবেদ মিয়া (২২) কয়েক মাস আগে সৌদি আরবে গিয়েছেন। তিনি বিদেশ থেকে কিছুদিন আগে ৫০ হাজার টাকা বিকাশে পাঠিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের পর ওই মোবাইল ও বোনদের স্বর্ণালংকারও নিয়ে গেছে সামিউল। 

কসবা থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল কাদের বলেন, স্মৃতির পায়ে কাদামাটি লেগে ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে বাইরে শ্বাসরোধে হত্যা করে ঘরে আনা হয়। আর জ্যোতি আক্তারকে বিছানায় শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। আপাতত থানায় অপমৃত্যুর একটি মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তে নতুন কোনো তথ্য আসতে পারে। দ্রুত আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • স্ত্রী-শ্যালিকাকে শ্বাসরোধে হত্যা, স্বর্ণালংকার-ফোন নিয়ে লাপাত্তা সামিউল