মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অ
Published: 3rd, March 2025 GMT
মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেছে দেশটির দুর্নীতি দমন কমিশন (এমএসিসি)। তার সাবেক সহকারীদের কাছ থেকে প্রায় ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের নগদ অর্থ ও ১৬ কেজি স্বর্ণবার জব্দের ঘটনায় ইসমাইল সাবরিকে প্রধান সন্দেহভাজনদের মধ্যে রাখা হয়েছে। আগামী বুধবার (৫ মার্চ) তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
স্থানীয় সময় আজ সোমবার (৩ মার্চ) মালয়েশিয়া এমএসিসি ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান আজম বাকি।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের খবর বলছে, ইসমাইল সাবরি ২০২১ সালের আগস্ট থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। দেশের সবচেয়ে কম সময়ের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ইসমাইল সাবরি হলেন তৃতীয় নেতা, যিনি তার পূর্বসূরি মুহিউদ্দিন ইয়াসিন এবং নাজিব রাজাকের পরে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন।
আরো পড়ুন:
নারী কর্মীদের মালয়েশিয়া না যেতে সতর্কতা
আটকেপড়া ৭ হাজার ৯৬৪ বাংলাদেশি কর্মীকে নিতে রাজি মালয়েশিয়া
মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশন (এমএসিসি) সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কিত সম্পত্তিতে তিনটি অভিযানে মার্কিন ও সিঙ্গাপুর ডলার, সংযুক্ত আরব আমিরাত দিরহাম এবং জাপানি ইয়েনসহ বিভিন্ন মুদ্রায় নগদ অর্থ উদ্ধার করেছে।
সোমবার এমএসিসি প্রধান আজম বাকি সাংবাদিকদের বলেন, “এই নগদ অর্থের সন্ধান নিশ্চিত করে যে (সাবেক প্রধানমন্ত্রী) এই মামলায় একজন সন্দেহভাজন।”
সংবাদ সম্মেলনে কর্মকর্তারা জব্দকৃত নগদ অর্থ, বিলাসবহুল ঘড়ি ও ১৬ কেজি সোনার বার প্রদর্শন করেন।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের খবর অনুসারে, ইসমাইল সাবরির একজন প্রতিনিধি এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেননি।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নির্বিশেষে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
গত ৮ জানুয়ারি জাতীয় সুশাসন সম্মেলনে তিনি দুনীর্তির বিরুদ্ধে তার জিরো টলারেন্স অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, “আমি কারো অবস্থান বা প্রভাব নিয়ে চিন্তা করি না। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা ইতিমধ্যেই এটি শুরু করেছি।
তবে সমালোচকরা আনোয়ারকে দুর্নীতির অভিযোগ ব্যবহার করে বিরোধীদের চুপ করিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন, যার মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ এবং প্রয়াত সাবেক অর্থমন্ত্রী দাইম জয়নুদ্দিনও রয়েছেন।আনোয়ার ইব্রাহিম তাদের বিরুদ্ধে পদের মাধ্যমে নিজেদের সমৃদ্ধ করার অভিযোগ এনেছিলেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে মাহাথির মোহাম্মদ আনোয়ার ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে ১৫০ মিলিয়ন রিঙ্গিত মানহানির মামলা দায়ের করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
গত মাসে মাহাথির মোহাম্মদ তার ব্লগে লিখেছিলেন, “আনোয়ার যখন মুখ খোলেন, তখন তিনি মিথ্যা বলেন।”
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নদীতে ভেসে উঠল আরেকজনের লাশ, নিহত বেড়ে ৫
শরীয়তপুরে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে নদীতে পড়ে নিখোঁজ আরো একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (৩ মার্চ) বেলা ১২টার দিকে সদর উপজেলার চিতলিয়া ইউনিয়নের কাশীপুর এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। তবে, তার পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে পাঁচ জনে দাঁড়াল।
স্থানীয়দের অভিযোগ, শুক্রবার রাতে মাদারীপুরের রাজারচর এলাকায় বাল্কহেডে ডাকাতির চেষ্টা করেন সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র। এ সময় এলাকাবাসী তাদের ধাওয়া দেন। ডাকাতদল পালিয়ে শরীয়তপুরের তেতুলিয়া এলাকায় এলে স্থানীয়রা বাল্কহেড দিয়ে ডাকাতদের স্পিড বোটের গতিপথ রোধ করার চেষ্টা করেন। এ সময় ডাকাতরা হাতবোমা ও গুলি ছুঁড়লে বেশ কয়েকজন আহত হন। একপর্যায়ে ডাকাতেরা স্পিড বোট ফেলে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় ক্ষুব্ধ জনতা তাদের গণপিটুনি দেয়। আর ধাওয়া দিয়ে সাত জনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ তাদের উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক দুই জনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত বাকি পাঁচজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো একজনের মৃত্যু হয়। তবে, স্পিড বোটে ঠিক কতজন ছিল সেটা জানা যায়নি।
এদিকে, এ ঘটনার পরে রবিবার বিকালে শরীয়তপুর জেলা লাগোয়া ও মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের বিদ্যাবাগীশ এলাকার কীর্তিনাশা নদী থেকে অজ্ঞাত একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সোমবার ভেসে উঠে আরো একজনের মরদেহ। তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকায় পুলিশ ধারণা করছে, নিহতরা ডাকাত চক্রের সদস্য। সেদিন গণপিটুনিতে নদীতে পড়ে যান তারা। দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ডাকাতির চেষ্টা ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় পালং মডেল থানায় পৃথক মামলা হয়েছে। গত শনিবার রাতে পালং থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে মামলাগুলো করেন। এতে গণপিটুনিতে আহত পাঁচ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৮-১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- মুন্সীগঞ্জের রিপন (৪০), শরীয়তপুরের আনোয়ার দেওয়ান (৫০), নড়িয়ার সাঈদ (২৫), মাদারীপুরের সজীব (৩০) ও শরীয়তপুরের রাকিব গাজী (৩০)। তাদের ঢাকা মেডিকেল থেকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
শরীয়তপুর জেলা পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘‘এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।’’
ঢাকা/আকাশ/রাজীব