Risingbd:
2025-03-03@16:48:38 GMT

ইফতারে কোন দেশে কী খাওয়া হয়

Published: 3rd, March 2025 GMT

ইফতারে কোন দেশে কী খাওয়া হয়

দেশ ভেদে ইফতারের সংস্কৃতিতে রয়েছে নিজস্বতা। তবে কম বেশ সব দেশেই ভাজাপোড়া খাওয়ার চল রয়েছে। এ ছাড়া ইফতারে বিশেষ গুরুত্ব পায় ফল ও শরবত। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিভিন্ন দেশের ইফতার আয়োজন সম্পর্কে।

পাকিস্তান: বিশ্বের সবেচেয়ে বেশি মুসলিম বাস করে পাকিস্তানে। দেশটির ২৪ কোটি মানুষ মুসলিম। এই দেশে ইফতার আয়োজনে পানি এবং খেজুর থাকে। আরও থাকে মাংস ও রুটির মতো সেখানকার ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো। এ ছাড়া পাকিস্তানিরা ইফতারে নানা ধরনের কাবাব, তান্দুরি, কাটলেট, টিক্কা খেয়ে থাকে। ভাজাপোড়া খাবারের মধ্যে থাকে রোল, নিমকি, মাংস ও সবজি দিয়ে তৈরি করা এক ধরনের বিশেষ সমুচা, চপ ও পাকোড়া। ফলের তালিকায় থাকে নানারকম শরবত, ফল বা ফলের সালাদ, ছোলা-বুট, ফালুদা, জিলাপি। কিছু সংখ্যক মানুষ ইফতারে বিরিয়ানিও খেয়ে থাকেন। দেশটিতে ইফতারে বিশেষ কদর পায় রুহ আফজা।

ইন্দোনেশিয়া: ২৩ কোটি মানুষ মুসলিমের দেশ ইন্দোনেশিয়াতে ইফতারে থাকে বিভিন্ন রকম ফল এবং ফলের শরবত। আরও থাকে নানা রকম মিষ্টি জাতীয় খাবার। বুবুর চ্যান্ডিল নামক এক ধরনের মিষ্টান্ন রাখা হয় ইফতারে। যা মিষ্টি আলু দিয়ে তৈরি বিজি সালাক; কলা, মিষ্টি আলু অথবা কুমড়া দিয়ে তৈরি কোলাক; কলা দিয়ে তৈরি এস পিসাং ইজোসহ আরও নানা ধরনের ঐতিহ্যবাহী খাবার খায় ইন্দোনেশিয়ানরা।

আরো পড়ুন:

রোজাদারের জন্য আল্লাহর রয়েছে বিশেষ পুরস্কার

হিলিতে লেবুর দাম হালিতে বেড়েছে ৩০ টাকা

ভারত: ২০ কোটি মুসলিমের দেশ ভারত। দেশটিতে একেক রাজ্যের ইফতার আয়োজনে একেক খাবার জনপ্রিয়। যেমন, ভারতের হায়দ্রাবাদের মুসলিমরা ইফতারে হালিম খেতে পছন্দ করেন। আবার, কেরালা ও তামিলনাড়ুর মুসলমানরা ইফতার করেন 'নমবু কাঞ্জি' নামে এক ধরনের খাবার দিয়ে।যা মাংস, সবজি এবং পরিজের সমন্বয়ে তৈরি হয়। সামগ্রিকভাবে ইফতারে ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার খাওয়ার চল আছে। নানা ধরনের পাকোড়া, সমুচা, চপ ইত্যাদি বেশ জনপ্রিয়। দিল্লিসহ দেশটির উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে ইফতারের শুরুতে পানির সাথে থাকে খেজুর, ছোলা-বুট, নানরকম ফল ও ফলের শরবত। আরও থাকে দুধ, ডিম, দইয়ের মতো খাবার। বিভিন্ন ধরনের কাবাব, হালিম, কাটলেট, শর্মা, স্যুপ, বিরিয়ানিও থাকে ভারতীয় মুসলিমদের ইফতারে।

বাংলাদেশ: ১৫ কোটি মুসলিমের দেশ বাংলাদেশ। এদেশের মানুষ ইফতারে পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ এবং বিভিন্ন ধরনের সবজির পাকোড়া খেয়ে থাকে। আরও থাকে মুড়ি, ছোলা বুট, জিলাপি, হালিমসহ নানা রকমের শরবত ও ফল। এসব হালকা খাবারের পাশাপাশি অনেক পরিবারে ইফতারের সময় হাতে তৈরি নানা রকমের পিঠা-পুলি, তেহারি, বিরিয়ানি, খিচুড়ি, তন্দুরি চিকেনের মতো ভারী খাবার খাওয়ারও চল রয়েছে। তবে ফলের মধ্যে খেজুর প্রায় অপরিহার্যই বলা যেতে পারে। এটি ছাড়া বাংলাদেশি মুসলিমদের ইফতার টেবিল একরকম অসম্পূর্ণই বলা যায়। 

মিশর: দেশটির প্রায় ৭৯ শতাংশ মুসলিম জনগোষ্ঠী। এদেশে ইফতার মানেই একধরনের আনন্দ-উৎসব।মিশরের মুসলিমরা ইফতারের সময় মৃদু আলো দেয় এমন রঙ্গিন লণ্ঠন জ্বালিয়ে থাকেন। শুধু বাড়িতে নয়, পুরো রমজান জুড়ে সেখানকার পথেঘাটেও বিভিন্ন ধরনের রঙ্গিন আলো জ্বলতে দেখা যায়।
মিশরীয়দের ইফতারে আতায়েফ যা এক ধরনের প্যানকেক ও কুনাফা যা এক ধরনের সিরাপ থাকে।  দেশটির অনেক পরিবার ইফতারে বাদামি রুটি এবং মটরশুঁটি, টমেটো, বাদাম ও অলিভ অয়েল দিয়ে তৈরি ‘ফুল মেদেমাস’ খেতেও পছন্দ করেন। আরও থাকে বিভিন্ন ধরনের ফল, ফলের রস, সবজি ইত্যাদিও থাকে।

তথ্যসূত্র: বিবিসি

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর রমজ ন ব ভ ন ন ধরন র এক ধরন র র ইফত র ইফত র র আরও থ ক

এছাড়াও পড়ুন:

রোজা শুরুর আগেই লেবু শসা ও বেগুনে উত্তাপ

অন্য বছরের তুলনায় এবার রোজার আগে বেশির ভাগ নিত্যপণ্যের দাম বলা চলে এক প্রকার স্বাভাবিক। তবে কয়েকটি পণ্যে রোজার আঁচ লেগেছে। বিশেষ করে এ তালিকায় রয়েছে লেবু, বেগুন, শসাসহ ইফতারিতে ব্যবহার হয় এমন পণ্য। চাহিদা বাড়ার সুযোগে পণ্যগুলোর দর কিছুটা বেড়েছে।

শুক্রবার ছুটির দিনে কারওয়ান বাজারসহ রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। শনিবার চাঁদ দেখা গেলে রোববার থেকে শুরু হবে পবিত্র মাহে রমজান। এর আগে সবাই অগ্রিম বাজার করে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। এর কিছুটা প্রভাবও পড়েছে বাজারে।

খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা বলেন, এখন লেবুর মৌসুম নয়। ফলে প্রায় এক মাস ধরে দর বাড়তি। এ ছাড়া বেগুন, শসাসহ যেগুলোর দাম বেড়েছে তার মূল কারণ ক্রেতাদের বেশি পরিমাণে কেনা। রোজার আগমুহূর্তে প্রতিবছরই এসব পণ্যের দর বাড়ে। তবে পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে সামনের দিনগুলোতে দর বাড়ার সম্ভাবনা কম বলে মনে করেন তারা।

শরবত তৈরির অন্যতম উপাদান লেবু। রমজানে ইফতারে কমবেশি সবাই শরবত খাওয়ার চেষ্টা করেন। ফলে লেবুর চাহিদা বেড়ে যায়। আর এ সুযোগে বাড়তি দাম নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে প্রতি হালি শরবতি বা সুগন্ধি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা এবং আকারভেদে অন্য লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। মাসখানেক আগে অন্তত ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে কেনা গেছে লেবুর হালি। তবে এখনও বাড়লেও গত বছরের এ সময়ের তুলনায় কিছুটা কম রয়েছে দাম।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি লেবু ব্যবসায়ী জালাল আহমেদ সমকালকে বলেন, লেবুর উৎপাদন কম। কারণ, এখন লেবুর মৌসুম নয়। তাছাড়া অনেক দিন ধরে বৃষ্টিপাত নেই। এ জন্য ফলন ভালো হচ্ছে না। সেজন্য বাজারে লেবু কম আসছে। কিন্তু রোজার কারণে মানুষ আগেভাগে লেবু কিনছেন। মূলত এ জন্য দর বাড়তি।

বাজারে এখন ভরপুর শসা রয়েছে। হাইব্রিড ও দেশি শসার পাশাপাশি ছোট আকারের খিরাও পাওয়া যাচ্ছে। হাইব্রিড শসা ও খিরার কেজি ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেনা গেলেও দেশি জাতের শসা কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। সপ্তাহখানেক আগে এসব শসা অন্তত ১০ থেকে ৩০ টাকা কমে কেনা গেছে। অবশ্য, এ দর গেল রমজানের চেয়ে বেশ কম। গত বছর এ সময় শসার কেজি সর্বোচ্চ ১১০ টাকা ছুঁয়েছিল।

এখনও টমেটোর ভর মৌসুম চলছে। ফলে বাজারে দেশি টমেটোর পর্যাপ্ত সরবরাহ দেখা গেছে। সেজন্য দাম এখনও নাগালে। কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৪০ টাকায়।
বেগুনি তৈরি করতে লম্বা বেগুনের দরকার হয়। সেজন্য রোজার সময় লম্বা বেগুনের চাহিদা বেড়ে যায়। যার প্রভাব পড়েছে দামে। পাঁচ-ছয় দিন আগেও প্রতি কেজি লম্বা বেগুন কেনা গেছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। প্রায় দ্বিগুণের মতো দর বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। তবে পাড়া-মহল্লায় ভ্যান থেকে কিনতে গেলে ক্রেতাকে কেজিতে বাড়তি গুনতে হচ্ছে অন্তত আরও ১০ টাকা। বছরের অন্য সময়ে গোল বেগুনের দর বেশি থাকলেও এখন স্বাভাবিক। প্রতি কেজি কেনা যাবে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।

কারওয়ান বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা ইয়াকুব আলী বলেন, এখনও শীতের সবজিতে বাজার ভরপুর। লম্বা বেগুনের চাহিদা বেশি। এ কারণে কেউ কেউ দর বেশি নিচ্ছে। তবে অন্য জায়গায় দর বাড়লেও কারওয়ান বাজারে বাড়েনি বলে দাবি করেন এই বিক্রেতা।

গাজরের সরবরাহ রয়েছে বেশ ভালো। ফলে দর বাড়ার তালিকায় উঠতে পারেনি মিষ্টি জাতীয় সবজিটি। প্রতি কেজি গাজর কেনা যাচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। গত বছরের তুলনায় এ বছর কম দরে মিলছে পেঁয়াজ। মানভেদে দেশি প্রতি কেজি পেঁয়াজ কেনা যাচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়।

রমজানে কাঁচামরিচের চাহিদা বেশি থাকে। তবে এবার ঝালজাতীয় পণ্যটির দর নাগালের মধ্যেই রয়েছে। কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। মাস দুই-তিনেক ধরে এ দরের আশপাশেই বিক্রি হচ্ছে মরিচ।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ও ঢাকা বিভাগীয় প্রধান বিকাশ চন্দ্র দাস সমকালকে বলেন, রোজা উপলক্ষে রোববার থেকে ঢাকা মহানগরে ১০টি বিশেষ তদারকি দল মাঠে নামবে। তারা বিভিন্ন বাজারে তদারকি করবে। রমজানজুড়ে চলবে এ তদারকি কার্যক্রম। রোববার সকালে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কারওয়ান বাজারে এ তদারকি কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লেবুর দাম হালিতে বেড়েছে ৩০ টাকা
  • ইফতারের শরবতের লেবুর দামে আগুন, সিলেটে ৫ টাকার লেবু এখন ২৫ টাকা
  • ইফতারে লেবুর শরবতের বিকল্প কী হতে পারে
  • রিকশাভ্যানে শরবত ও পপকর্ন বিক্রি করে সংসার চলছে কাদিরের
  • রোজা শুরুর আগেই লেবু শসা ও বেগুনে উত্তাপ