ঢাকার সাভারের ডায়নামিক সোয়েটার নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছে বিক্ষোভ করছেন। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উলাইল এলাকায় কয়েক শতাধিক শ্রমিক সড়ক অবরোধ করেন।

অবরোধে সড়কের উভয় পাশে অন্তত ৬ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই সড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা।

দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ওই পোশাক কারখানার শ্রমিকরা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে রাখেন। পরে শিল্প পুলিশ দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে শ্রমিকেরা মহাসড়ক ছেড়ে চলে যান।  

আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, তাদের বেতন ৯ শতাংশ হারে বাড়াতে হবে, হাজিরা বোনাস বৃদ্ধি করে ১ হাজার টাকা করা, রমজান মাসে ইফতারির বিল বাড়ানো, বন্ধের দিন কাজ করালে ওভারটাইম হারে বিল দিতে হবে। এছাড়াও ঈদ বোনাস বেতনের সমহারে প্রদান, বাৎসরিক ছুটির টাকা সমহারে দিতে হবে এবং ওভারটাইমের বকেয়া পাওয়া ও রমজান মাসে কর্মঘণ্টা কমানো এবং কয়েকজন স্টাফের চাকরিচ্যুত করার দাবি জানান শ্রমিকরা।

রাসেল নামে এক শ্রমিক জানান, ‘ম্যানেজমেন্ট আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। দুই মাস আগে আমরা ১৩ দফা দাবিতে আন্দোলন করি। সেসময় কারখানার কর্তৃপক্ষ সব দাবি মেনে নিয়েছে বলে জানায়। কিন্তু তারা শুধু ২টা দাবি মেনে নিয়েছে।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুয়েল মিঞা জানান, ডায়নামিক সোয়েটার নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মালিকপক্ষ ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করছে বলে জানান তিনি।

ওসি জানান, যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শিল্প, থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে পুরুষ আসামির সাক্ষাৎ

বগুড়ায় আলোচিত ১৭ মামলার আসামি তুফান সরকারকে আদালতের নারী হাজতখানায় পরিবারের পাঁচ সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে আদালত পুলিশের ২ সদস্যকে প্রত্যাহার ও ৫ সাক্ষাত প্রার্থীকে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়েছে।

সোমবার বিকেলে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যাহার করা পুলিশের ২ সদস্য হলেন- সহকারী টাউন উপ-পরিদর্শক (এটিএসআই) জয়নাল আবেদিন ও নারী কনস্টেবল ইকসানা খাতুন।

জানা যায়, তুফান সরকার বগুড়া শহর যুব শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার মজিবর সরকারের ছেলে। তিনি হত্যা, মাদক, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ ১৭ মামলার আসামি।

জানা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্বিতীয় তলায় নারী হাজতখানার দরজা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। ভেতরে তুফান সরকার, তার স্ত্রী, ছোট বোন, শাশুড়ি, স্ত্রীর বড় বোন এবং একজন আইনজীবীর সহকারী মিলে গল্প করছিলেন। পরে নারী হাজতখানায় পুরুষ আসামি ঢুকার বিষয়টি জানাজানি হলে আদালত চত্বরে হৈ চৈ পড়ে যায়। পরে দ্রুত তুফান সরকারকে প্রিজন ভ্যানে কারাগারে পাঠানো হয়।

এসময় তুফান সরকারের সঙ্গে দেখা করতে আসা নারী হাজত খানা থেকে ওই ৫ জন সরে যান। পরে তাদের আদালত চত্বর থেকে আটক করে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়।

আটক ৫ জন হলেন, তুফানের শাশুড়ি তাসলিমা বেগম, তুফান সরকারের স্ত্রী আশা বেগম, শ্যালিকা ফেরদৌসি বেগম, শ্যালক নয়ন, তুফানের আইনজীবীর সহকারী হারুনুর রশিদ।

বগুড়া আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, সকালে তুফান সরকারকে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত একটি মামলায় আদালতে হাজিরার জন্য কারাগার থেকে আনা হয়। কারাগার থেকে আনা অন্য সব হাজতিকে দুপুরের মধ্যেই প্রিজন ভ্যানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বাদ পড়ে তুফান সরকার। হাজতখানার চাবি এটিএসআই জয়নাল আবেদিনের কাছে থাকে। তুফান সরকারকে কারাগারে না পাঠিয়ে তাকে নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করার সুযোগ করে দেয় জয়নাল আবেদিন। আদালতের সবার অগোচরে ঘটনাটি ঘটে।

বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, পুরুষ আসামিকে নারী হাজত খানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে এটিএসআই জয়নাল আবেদিন ও এক নারী কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।  পুলিশের আরও যাদের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এক কলেজ ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে তুফান সরকারের বিরুদ্ধে। পরে শালিস ডেকে ভুক্তভোগী নারী ও তার মা'কে দোষী উল্লেখ করে মারধর করে এবং মা-মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয় তুফান সরকার। সেই ঘটনায় দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে তুফান সরকার গ্রেপ্তার হয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ