উত্তরাঞ্চলের মো. সিরাজ-উদ-দৌলা চৌধুরী বেতন-ভাতা ছাড়া ১০১ দিন উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করার সুযোগ চেয়েছেন। সোমবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন তিনি।

লিখিত বক্তব্যে সিরাজ-উদ-দৌলা বলেন, ‘আমাদের দেশ এখন উন্নতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে, তবে উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য সকল অঞ্চলের সঠিক প্রতিনিধিত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ছিল এবং এই অঞ্চলের জনগণের স্বার্থ ও সমস্যাগুলো নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় সঠিকভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতিনিধিরা অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন, যা প্রশংসনীয়। কিন্তু, দুঃখজনকভাবে উত্তরাঞ্চলের কোনো প্রতিনিধি উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত হননি। এটি এই অঞ্চলের জনগণের জন্য হতাশাজনক এবং তাদের উন্নয়ন ও নীতিনির্ধারণে যথাযথ কণ্ঠস্বরের অভাব সৃষ্টি করেছে।’

সিরাজ-উদ-দৌলা চৌধুরী প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমি বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি, অবিলম্বে উত্তরাঞ্চলের একজন উপযুক্ত ও যোগ্য ব্যক্তিকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করুন। এতে শুধু উত্তরাঞ্চলের জনগণই উপকৃত হবে না, বরং এটি সুষম উন্নয়ন এবং জাতীয় ঐক্যের প্রতিফলন ঘটাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এতদিনেও বৃহত্তর রংপুর, দিনাজপুরসহ উত্তরবঙ্গ থেকে কোনো উপদেষ্টা নির্বাচিত হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে, আমি মোহাম্মদ সিরাজ-উদ-দৌলা চৌধুরী নিজেকে একজন সিনিয়র উপদেষ্টা হিসেবে যোগ্যতা সম্পন্ন মনে করি। তাই আমি বেতন-ভাতা ছাড়াই ১০১ দিনের জন্য উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করার সুযোগ চাই। আমি বিশ্বাস করি, সিনিয়র উপদেষ্টা হিসেবে আমি অন্যান্য উপদেষ্টাদের তুলনায় আরও ভালো কাজ করতে পারব। ইনশাল্লাহ।’

আশা প্রকাশ করে সিরাজ-উদ-দৌলা চৌধুরী বলেন, ‘ব্যক্তিগত জীবনে আমি কোনো দলের সাধারণ সদস্যপদ নেইনি। কিন্তু সিনিয়র রাজনীতিবিদদের সান্নিধ্যে থেকে রাজনীতিতে স্বশিক্ষিত হয়েছি। এই আত্মবিশ্বাস থেকে আমি বলতে পারি আমাকে উপদেষ্টা পরিষদের সিনিয়র সদস্য হিসেবে নিয়োগ দিলে উত্তরাঞ্চলকে সারাদেশের মধ্যে দৃষ্টান্ত মডেল হিসেবে উপস্থাপন করতে পারব। আমি আশা করি, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমার এই যৌক্তিক দাবিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবেন।’

মাত্র ২ সপ্তাহের মধ্যে আইন ও বিচার বিভাগ ঠিক করার কথা জানিয়ে সিরাজ-উদ-দৌলা চৌধুরী বলেন, ‘আমি সিনিয়র উপদেষ্টা হলে মাত্র দুই সপ্তাহে দেশের ‘ল’ অ্যান্ড অর্ডার ইনশাল্লাহ পুরোপুরি ঠিক করে দেব। উত্তরবঙ্গের মানুষের প্রতি তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা না দিয়ে দিল্লি যে অবিচার আমাদের প্রতি করছে, সেরকমই উত্তরবঙ্গের প্রতি উপদেষ্টা না দিয়ে চরম অবিচার করছে ঢাকা।’

তিনি বলেন, ‘আমি সিনিয়র উপদেষ্টা হলে গাভির কাছ থেকে যেভাবে গোয়াল দুধ দোহন করে সেভাবে ভারতের কাছ থেকে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করব ইনশাআল্লাহ।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট র উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

রন হক সিকদারের নামে থাকা ১০০ একর জমি জব্দের আদেশ

এবার শিল্পগোষ্ঠী সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রন হক সিকদারের নামে পূর্বাচলে বরাদ্দ দেওয়া ১০০ একর জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন আজ সোমবার এ আদেশ দেন।

দুদক আদালতকে বলেছে, ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, নামে–বেনামে জনগণের আমানতের অর্থ লুটপাটসহ ঘুষের বিনিময়ে ঋণ দেওয়ার অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। সেই অনুসন্ধানে দেখা গেছে, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ১৯ নম্বর সেক্টরের ১০০ একর জমি রন হক সিকদারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান পাওয়ারপ্যাক হোল্ডিংয়ের নামে বরাদ্দ দেওয়া। এই জমিতে ১০০ থেকে ১৪২ তলা আইকনিক টাওয়ার নির্মাণ করার অনুমোদন দেয় রাজউক। প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বরাদ্দ দেওয়া হয় তিন হাজার কোটি টাকায়। মাত্র ২৭০ কোটি টাকার একটি কিস্তি দিয়ে ওই সম্পদ নিরাপত্তারক্ষী দিয়ে দখলের নেন রন হক সিকদার।

দুদক আদালতকে আরও জানিয়েছে, রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই রন হক সিকদারের প্রতিষ্ঠান সেখানে তিনতলা একটি ভবন নির্মাণ করছিল। ভুয়া তথ্য দিয়ে ১১০ কোটি টাকার ঋণ নেয় রন হকের প্রতিষ্ঠান। পরে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই ১০০ একর সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্টের আগপর্যন্ত ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের বেশির ভাগ ছিলেন সিকদার পরিবারের সদস্য। তাঁরা তখন ব্যাংকে থাকা জনগণের আমানতের হাজার হাজার কোটি টাকা বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ দিয়ে পাচার করেছেন।

এর আগে গত ৯ মার্চ রন হক, তাঁর মা মনোয়ারা সিকদারসহ তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ৪২টি বিও হিসাব (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছিলেন আদালত।

দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে আরও জানানো হয়, সিকদার পরিবারের বেশির ভাগ সদস্য বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করছেন। তাঁরা বিদেশে থেকে বিও হিসাবগুলো হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন।

এর আগে গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর সিকদার গ্রুপের রন হক, তাঁর মাসহ তাঁদের পরিবারের কয়েকজন সদস্যের নামে থাকা মোট ১৫টি ভবন ও ফ্লোর জব্দের আদেশ দেওয়া হয়।

ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক চেয়ারম্যান মনোয়ারা সিকদার। ব্যাংকটির সাবেক পরিচালক রন হক সিকদার ও তাঁর ভাই রিক হক সিকদার। তাঁরা জনগণের আমানতের অর্থ আত্মসাৎ করে নিজেদের, পরিবারের সদস্যদের ও নিকট আত্মীস্বজনের নামে-বেনামে প্রচুর সম্পদ গড়েছেন। এমনকি তাঁরা প্রভাব খাটিয়ে ব্যাংকটির বিপুল অর্থ লুট ও বিদেশে পাচার করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৩১ দফা বাস্তবায়নই হবে বিএনপির ওপর নির্যাতনের প্রতিশোধ: তারেক রহমান
  • প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে সাবধান করলেন মির্জা আব্বাস
  • ঢাকার দুই সিটিকে এক করার প্রস্তাব
  • কাতারে ড. ইউনূস: পৃথিবীর জন্য আশার বাতিঘর হতে চায় বাংলাদেশ
  • পৃথিবীর জন্য আশার বাতিঘর হতে চায় বাংলাদেশ: প্রধান উপদেষ্টা
  • ২ কিলোমিটার সড়ক, ২০ হাজার শ্রমিকের দুর্ভোগ 
  • আমরা পৃথিবীর জন্য আশার এক বাতিঘর হিসেবে দাঁড়াতে চাই: ড. ইউনূস
  • শেষ ভাষণে ফিলিস্তিনিদের নিয়ে যা বলেছিলেন পোপ ফ্রান্সিস
  • রন হক সিকদারের ১০০ একর জমি জব্দের আদেশ 
  • রন হক সিকদারের নামে থাকা ১০০ একর জমি জব্দের আদেশ