আরেক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আনিসুল, সালমানসহ ৬ জন
Published: 3rd, March 2025 GMT
আরেকটি হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্পবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ সোমবার সকালে এ আদেশ দেন।
গ্রেপ্তার দেখানো অপর চারজন হলেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন।
এ ছাড়া মোহাম্মদপুর থানার একটি হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
কাফরুল থানায় দায়ের করা আতিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় আনিসুল হক, সালমান এফ রহমান, কামাল আহমেদ মজুমদার, কামরুল ইসলাম, এ কে এম শহীদুল হক ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে আদালতে হাজির করে তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে পুলিশ। আদালত তাঁদের প্রত্যেককেই গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
এর আগে আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে আনিসুল হকসহ অন্যদের আদালতে হাজির করে পুলিশ।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ১৩ আগস্ট গ্রেপ্তার হন সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হক। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন মামলায় সালমান এফ রহমানের ৫৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। অন্যদিকে বিভিন্ন মামলায় আনিসুল হকের ৪৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন। এর পর থেকে তিনি কারাগারে আছেন। তাঁর ৮৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গত বছরের ১৮ নভেম্বর গ্রেপ্তার হন কামরুল ইসলাম। বিভিন্ন মামলায় তাঁর ১৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
গত বছরের ১৮ অক্টোবর গ্রেপ্তার হন কামাল আহমেদ মজুমদার। তাঁর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়।
গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হন এ কে এম শহীদুল হক। বিভিন্ন মামলায় তাঁর ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কাশ্মিরে হামলার সময় বেছে বেছে পুরুষদের গুলি চালানো হয়
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় গতকাল মঙ্গলবার পর্যটকদের ওপর হামলা করে বন্দুকধারীরা। এতে অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছেন এবং আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা বলছেন, বন্দুকধারীরা হামলা চালানোর সময় নারী-পুরুষদের আলাদা করে বেছে বেছে পুরুষদের লক্ষ্য করে গুলি করেছিল। খবর বিবিসির।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস আজ বুধবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভয়াবহ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ)।
আরো পড়ুন:
কাশ্মিরে হামলার দায় স্বীকার করল টিআরএফ
জালিয়াতির মামলা, মহেশ বাবুকে তলব
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, মাত্র কয়েক মিনিটের তাণ্ডবের নেপথ্যে ছিল মাত্র চার থেকে ছ’জন জঙ্গি। সবার হাতে ছিল একে-৪৭।
হামলার ঘটনায় কেউ স্বামী হারিয়েছেন, কেউ আবার পুত্র। পরিজনদের হারিয়ে শোকে পাথর অনেকেই। যাঁরা প্রাণ বাঁচিয়ে ঘটনাস্থল থেকে ফিরতে পেরেছেন তাদের চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ। আহতদের মধ্যে অনেকে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে একজন নারী বলেছেন, “জঙ্গিরা, আমি বলতে পারছি না ঠিক কতজন, একটি খোলা ছোট তৃণভূমির কাছের জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে গুলি চালাতে শুরু করে।”
তিনি বলেন, “স্পষ্টতই তারা মহিলাদের ছাড় দিচ্ছিলেন এবং পুরুষদের দিকে গুলি চালাতে থাকল, কখনও একটি একটি করে, আবার কখনো একাধারে গুলি চলছিল ঠিক ঝড়ের মতো।”
ভারতীয় সংবাদপত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পল্লবী রায় নামে আরেক নারীকে চিহ্নিত করেছে। যার স্বামী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতদের মধ্যে ছিলেন। তিনিও বলেছেন যে, পুরুষদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।
হিন্দুস্তান টাইমসের কাছে আশাবরী নামে এক তরুণী বলেন, “আমরা পাঁচ জনের একটি দল ছিলাম, আমার বাবা-মা সহ। আমরা পাহেলগাঁওয়ের কাছে বইসরান উপত্যকায় ছিলাম এবং যখন গুলি শুরু হয়েছিল তখন মিনি সুইজারল্যান্ড নামক একটি স্থানে ছিলাম। আমরা তৎক্ষণাৎ কাছের একটি তাঁবুতে সুরক্ষার জন্য ছুটে গেলাম। আরও ছয় থেকে সাতজন (পর্যটক)ও সেখানে উপস্থিত হলেন। গুলিবর্ষণের হাত থেকে রক্ষা পেতে আমরা সবাই মাটিতে শুয়ে পড়লাম। আমরা ভেবেছিলাম সন্ত্রাসী এবং নিরাপত্তা কর্মীদের মধ্যে গুলিবর্ষণ হয়েছে। কিন্তু তারপর জঙ্গিরা আমাদের তাঁবুতে এসে আমার বাবাকে বাইরে আসতে বলল। বাবাকে কিছু একটা পড়তে দিয়েছিল জঙ্গিরা। তিনি তা পড়তে না পারায় তিনটি গুলি করে।”
তার বাবার হত্যার পর তার চাচার দিকে এগোয় জঙ্গিরা। আশাবরী বলছেন, ‘আমার চাচা আমার পাশেই ছিলেন। সন্ত্রাসীরা তখন তাকে লক্ষ্য করে চার থেকে পাঁচটি গুলি চালায়। তারা ঘটনাস্থলে থাকা আরও কয়েকজনকে গুলি করে। সাহায্য করার জন্য কেউ ছিল না।’
কাশ্মির দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহের কেন্দ্রস্থল, কিন্তু পর্যটকদের উপর আক্রমণের ঘটনা বিরল।
এদিকে, হামলার ঘটনার পর পহেলগাঁও উপত্যকায় নিরাপত্তা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। জম্মু-কাশ্মিরের অন্যান্য জায়গাও নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার রাতেই কাশ্মিরে পৌঁছেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার সৌদি আরব সফরসূচি কাঁটছাঁট করে বুধবার সকালে দিল্লি ফিরে এসেছেন।
এখন পর্যন্ত হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা যায়নি। তাদের সন্ধানে বিভিন্ন জায়গায় চিরুনি তল্লাশি শুরু করেছে নিরাপত্তাবাহিনী।
ঢাকা/ফিরোজ