ন্যায্য মজুরিসহ নানা দাবিতে সাভারের উলাইল এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে সাভারের উলাইল এলাকার ডায়নামিক সোয়েটার ইন্ডাস্ট্রিস লিমিটেডের শ্রমিকেরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। বেলা ১১টার দিকে তাঁরা মহাসড়ক থেকে সরে শুধু ঢাকাগামী সার্ভিস লেনে বসে বিক্ষোভ করেন। এ সময় সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা তাঁদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন। আগামীকাল মঙ্গলবার মালিকপক্ষ শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে—আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এই আশ্বাস পেয়ে বেলা পৌনে একটার দিকে তাঁরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।

বিক্ষোভকারী শ্রমিকেরা জানান, বিভিন্ন অভিযোগ ও দাবি নিয়ে গতকাল রোববার তাঁরা কারখানার মধ্যে আন্দোলন করেন। কারখানার কর্মকর্তারা আশ্বাস দেন, আজ মালিকপক্ষ কারখানায় এসে বিষয়গুলো নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলবে। আজ সকালে তাঁরা এসে দেখেন, কারখানা বন্ধ রয়েছে। এর প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁরা মহাসড়ক অবরোধ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, সকালে ডায়নামিক সোয়েটার ইন্ডাস্ট্রিস লিমিটেডের শ্রমিকেরা আন্দোলন করার জন্য আশপাশের কয়েকটি কারখানার শ্রমিকদের ডাকাডাকি করেন। ওই সব শ্রমিক তাঁদের ডাকে সাড়া দেননি। তখন ডায়নামিক কারখানার কয়েকজন শ্রমিক ওই সব কারখানা লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন।

আরও পড়ুনকেয়া গ্রুপের দুই কারখানায় ২২০০ শ্রমিক ছাঁটাই, প্রতিবাদে বিক্ষোভ১ ঘণ্টা আগে

ডায়নামিক সোয়েটার কারখানার বিক্ষোভকারী শ্রমিকেদের অভিযোগ, তারা বিভিন্ন ক্যাটাগরির পোশাক তৈরি করেন। কাজের ভিন্নতা অনুযায়ী নির্দিষ্ট হারে তাদের মজুরি দেওয়া হতো। কিন্তু গত কয়েক দিন তাদের প্রতি স্টাইলের কাজে আগে যে মূল্য দেওয়া হতো, এখন সেটার রেট (মূল্য) কমিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া সকাল ছয়টা থেকে বিকেল সোয়া পাঁচটা পর্যন্ত তাঁদের কাজ করতে হয়। পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে শ্রমিকদের দাবি, তাঁরা সকাল সাতটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কাজ করবেন। এ ছাড়া শ্রমিকদের কারখানা বন্ধের সময় শ্রমিকদের বেসিক ১৩ হাজার টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও তাঁদের ৭ হাজার ৪০০ টাকা দেওয়া হয়। ঈদ বোনাস ৮ হাজার টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও ৩ হাজার টাকা দেওয়া হয়।

শ্রমিকদের অভিযোগ, প্রতি মাসে বেতনের আগে একাধিক বেতন শিটে তাঁদের সই নেওয়া হয়। তাঁদের যে বেতন দেওয়া হয়, তার বেশি বেতন উল্লেখ করে আরেকটি বেতন শিটে তাঁদের সই করানো হয়। এ ছাড়া কারখানার ব্যবস্থপকদের নিয়ে কোনো শ্রমিক যদি প্রতিবাদ জানান, তাহলে তাঁদের কারখানা থেকে বের করে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুয়েল মিয়া বলেন, ডায়নামিং সোয়েটার ফ্যাক্টরির শ্রমিকেরা বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে রাস্তা অবরোধ করেছিলেন। তাঁদের বোঝানোর জন্য থানার পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনী সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে। মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামীকাল শ্রমিকদের সঙ্গে মালিকপক্ষ বসবে—এমন আশ্বাসে শ্রমিকেরা রাস্তা ছেড়ে দিয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ল কপক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

শিবগঞ্জ সীমান্তে পেট্রোল বোমা ও ককটেলের বড় চালান আটক

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্তে বিস্ফোরকের একটি বড় চালান আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। দেশকে অস্থিতিশীল করতে চোরাইপথে ভারত থেকে আনা উপকরণ দিয়ে বানানো এসব সরঞ্জাম ব্যবহার করার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল বলে জানিয়েছে বিজিবির।

সীমান্ত বাহিনীটির দাবি, বোমাগুলো দেশীয়ভাবে তৈরির পর তা বন্দর এলাকা থেকে বিভিন্ন পণ্যের আড়ালে পাচার হওয়ার আগেই গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তা আটকে দেওয়া হয়।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার চকপাড়া সীমান্ত এলাকা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৯৯টি ককটেল এবং ৪০টি পেট্রোল বোমা উদ্ধার করে ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের একটি আভিযানিক দল। রাত ৮টায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া।

তিনি জানান, দুটি প্লাস্টিকের ক্যারেটসহ চকপাড়া সীমান্তের ১৮৪ মেইন পিলার হতে প্রায় এক কিলোমিটার দুরে কয়লাবাড়ি ট্রাক টার্মিনাল এলাকায় দুটি প্লাস্টিকের ক্যারেটসহ দুই ব্যক্তি দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় বিজিবির একটি অভিযানিক দল ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই তারা পালিয়ে গেলে একটি ক্যারেটে তল্লাশি চালিয়ে লাল স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো ৯৯টি ককটেল এবং অপর ক্যারেট থেকে ৪০টি পেট্রোল বোমা উদ্ধার করে।

তিনি আরও জানান, পেট্রোল বোমাগুলো কোকাকোলা বা এ ধরনের কাঁচের বোতলে বানানো হয়েছে এবং ককটেলগুলো জর্দ্দার কোটায় দেশীয় প্রযুক্তিতে বানানো হয়েছে।

অধিনায়কের দাবি, এসব বিস্ফোরক ভারত থেকে না আনলেও গান পাউডারসহ বিভিন্ন বিস্ফোরক উপকরণ সীমান্ত দিয়ে আনার পর সন্ত্রাসীরা সীমান্ত এলাকায় বোমা তৈরির পর সেগুলো সোনামসজিদ বন্দর রুট ব্যবসার করে বিভিন্ন পণ্যের আড়ালে ট্রাকে করে দেশের অভ্যন্তরে পাচারের চেষ্টা করছিল। তবে গোয়েন্দা নজরদারির কারণে সে পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। এসব কাজে জড়িতদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করছে। এ ঘটনায় জব্দকৃত বোমাগুলো শিবগঞ্জ থানায় জমা দেওয়া হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ