গঙ্গা নদীর পানি চুক্তি পর্যালোচনা ও বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) ৮৬তম বৈঠকে যোগ দিতে কলকাতায় এসে পৌঁছেছেন বাংলাদেশের সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। 

সোমবার (৩ মার্চ) ভারতীয় সময় সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ প্রতিনিধি দলটি কলকাতার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। এরপরেই সড়কপথে তারা যান হাওড়া রেল স্টেশন। হাওড়া থেকে শতাব্দী এক্সপ্রেস ধরে তারা যাবেন মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কায়। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের পাশাপাশি ভারতের নদী কমিশনের সদস্যরাও যৌথভাবে ফারাক্কা পরিদর্শন করবেন। পরে ফিরে এসে অংশ নেবেন বৈঠকে। 

বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জয়েন্ট রিভার কমিশনের (জেআরসিবি) সদস্য মোহাম্মদ আবুল হোসেন। তার নেতৃত্বে আছেন জেআরসিবি উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মিদরী জাহান, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ শামছুজ্জামান, জেআরসিবি সদস্য (কারিগরি কমিটি) মোহাম্মদ আবুল হোসেন, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (সিলেট) অতিরিক্ত মুখ্য প্রকৌশলী মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (কুমিল্লা) অতিরিক্ত মুখ্য প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু তাহের, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (ঢাকা) হাইড্রো ইনফরমেটিক্স এবং ফ্লাড ফোরকাস্টিং বিভাগের সুপারিন্টেডেন্ট প্রকৌশলী ড.

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন। 

আরো পড়ুন:

গঙ্গা পানি চুক্তি নবায়ন: ভারত যাচ্ছে বাংলাদেশের দল

মণিপুর নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বড় সিদ্ধান্ত 

কলকাতায় আয়োজিত বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের হয়ে অংশ নেবেন বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া-১ অনুবিভাগের পরিচালক মো. মনোয়ার মোকাররম, কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনের কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) তুষিতা চাকমা, দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) আফজল মেহদাত আদনান প্রমুখ।

এদিন বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে মোহাম্মদ আবুল হোসেন জানান, এই সফরে তিস্তা জরিপ হবে না। এমনকি বৈঠকেও তিস্তা বিষয়ক কোনো আলাপও হবে না। এর জন্য একটা টেকনিক্যাল টিম আছে, তারা আলোচনা করবে।

মোহাম্মদ আবুল হোসেন বলেন, এই পরিদর্শন ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। কারণ এই সফরে কোনো বড় ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে না। মূলত কারিগরি বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। ১৯৯৬ সালে দুই দেশের মধ্যে সম্পাদিত গঙ্গার চুক্তির বাস্তবায়নের জন্য প্রতিবছর আমরা এই সফর করে থাকি।

গঙ্গার পানি বাংলাদেশের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ- এমন এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ গঙ্গার পানির ওপর নির্ভরশীল। মূলত দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এই পানির যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে।

জানা গেছে, পাঁচ দিনের এই সফরে আগামী ৪ মার্চ ফারাক্কায় গঙ্গা নদীর সন্নিহিত এলাকা পরিদর্শন করবেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা। ফারাক্কায় গঙ্গা নদীতে পানির স্তর, পানির প্রবাহ সংক্রান্ত পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখবেন তারা। ৫ মার্চ ফারাক্কা থেকে দুই দেশের যৌথ নদী কমিশনের সদস্যরা কলকাতায় ফিরবেন। এরপর ৬ এবং ৭ তারিখ ভারতের রিভার কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে কলকাতার একটি পাঁচতারকা হোটেলে বৈঠক হবে।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রবাহিত গঙ্গার পানিবণ্টন নিয়ে ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ওই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। তাতে স্বাক্ষর করেছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া ও বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চুক্তির মেয়াদ ছিল ৩০ বছরের। ২০২৬ সালে সেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা।

বাংলাদেশের সাথে গঙ্গা কিংবা তিস্তার পানি বন্টন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আপত্তি জানিয়ে আসছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কলক ত য জ আরস সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রমিকদের আইনি সুরক্ষা ও জাতীয় ন্যূনতম মজুরির সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন

সব শ্রমিকের আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন। দেশে আট কোটি শ্রমজীবী মানুষ আছেন। তার মধ্যে ৮৫ শতাংশ বা ৭ কোটি শ্রমিকের আইনি সুরক্ষা নেই। শ্রমবিষয়ক সংস্কার কমিটি এই শ্রমিকদের আইনি সুরক্ষা নিশ্চিতের সুপারিশ করেছে।

কর্মক্ষেত্রে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে বিশেষ সুপারিশ করেছে কমিশন। সেগুলো হলো, শ্রম আইনে মহিলা শব্দের পরিবর্তে নারী শব্দ ব্যবহার এবং কর্মক্ষেত্রে তুই/তুমি সম্বোধন বন্ধ করা।

আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে শ্রম সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এরপর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সুপারিশ সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করেন প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দেশের শ্রমিকদের জন্য জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের সুপারিশ করেছে কমিশন। লক্ষ্য হলো, কোনো শ্রমিক যেন তার চেয়ে কম মজুরি না পান, তা নিশ্চিত করা। সেই সঙ্গে শ্রমিকদের নিবন্ধন থেকে শুরু করে পরিচয়পত্র দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। সাম্প্রতিক শ্রমিক আন্দোলনে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা করা হয়েছে, সেসব মামলা দ্রুত প্রত্যাহার করারও কথাও বলেছে কমিশন।

শ্রমিকদের সংগঠন করার অধিকার নিশ্চিত এবং তাঁদের দর-কষাকষি করার প্রক্রিয়া যেন আরও সহজ হয়, তা নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি দূর করতে ২০০৯ সালের হাইকোর্টের নির্দেশনার আলোকে যৌন নিপীড়নবিরোধী নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে কমিশন। সেই সঙ্গে নারীদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস করার কথা বলা হয়েছে, যে সুপারিশ অন্যান্য কমিশনও করেছে।

শ্রমিকদের কল্যাণে সর্বজনীন তহবিল করার সুপারিশ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে শ্রম আদালতসহ আপিল বিভাগের সর্বক্ষেত্রে যেন বাংলা প্রচলন করা হয়, তা নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারী-পুরুষের সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম। গত সরকারের মন্ত্রীরা বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন, এ বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার পলাতক মন্ত্রীদের ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। এরপর যে সরকার ক্ষমতায় আসবে, তাদেরও নৈতিক দায়িত্ব হবে, এই প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন–২০২৫’–এ যোগ দিতে আজ সোমবার সন্ধ্যা সাতটার বিমানে কাতার যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন মোহাম্মদ শফিকুল আলম।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২০২৪ সালের ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিআইএলএস) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদকে প্রধান করে ১০ সদস্যের একটি শ্রম সংস্কার কমিশন গঠন করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘র‍্যানডম’ কাজটি হয়ে গেছে: মৌসুমী নাগ
  • আমার ব্রেনে এই শহরে কোনো কাজ হয়নি: কেসিসির পরিকল্পনা কর্মকর্তা
  • তৃতীয় দিনটা বৃষ্টি আর নাজমুলের
  • চিত্রনায়িকা শাবানা হঠাৎ কেন দেশ ছেড়েছিলেন, এখন কেমন আছেন
  • মানুষই মানুষের কর্মকাণ্ডে শিউরে ওঠে : আফজাল হোসেন 
  • মানুষই মানুষের কর্মকান্ডে শিউরে ওঠে : আফজাল হোসেন 
  • চিন্তা যেভাবে ইবাদত হয়ে ওঠে
  • ভ্যাটিকান থেকে ওড়া ধোঁয়ায় কীভাবে বোঝা যায় নতুন পোপ নির্বাচিত হয়েছেন
  • ট্রেনে যৌন হয়রানির ঘটনার বিবরণ দিলেন অভিনেত্রী
  • শ্রমিকদের আইনি সুরক্ষা ও জাতীয় ন্যূনতম মজুরির সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন