মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক-২০২৫ পাচ্ছেন আবরার ফাহাদ। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০১৯ সালের অক্টোবরে তাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেন বর্তমানে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আজ সোমবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানান। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, আবরার ফাহাদ এবার মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক পাচ্ছেন।

সজীব ভূঁইয়ার পোস্টে ওই বলা হয়, ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সাহসিকতার প্রতীক, মুক্তচিন্তার এক প্রতিচ্ছবি—আবরার ফাহাদ। মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক ২০২৫-এ ভূষিত হওয়া তার আত্মত্যাগের স্বীকৃতি। তার আদর্শ আমাদের আলোকিত করে, ন্যায়বিচারের পথে এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা দেয়। জাতি তোমাকে ভুলবে না, আবরার!’

গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জাতীয় পুরস্কার-সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক হয়। এ কমিটির আহ্বায়ক শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছিলেন, যারা বাংলাদেশের জন্য জীবনব্যাপী অবদান রেখেছেন এবং নতুন কিছু তৈরি করেছেন যার ধারাবাহিকতা এখনো চলছে। সেটি যেকোনো ক্ষেত্রে—সংস্কৃতি, সাহিত্য, বিজ্ঞান বা সমাজসেবার ক্ষেত্রে নতুন ধারা, যেটি এখনো সারা দেশকে প্রভাবিত করে। কিন্তু আগে তাদের সেভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। তবে নাম চূড়ান্ত হয়নি জানিয়ে গতকাল ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছিলেন, এটি সুপারিশ।

আজ উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আজ তার ফেসবুকে জানালেন, আবরার ফাহাদ এবার মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক পাচ্ছেন।

জাতীয় পুরস্কার-সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সদস্য আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তিনি গতকাল বলেছিলেন, ‘আপনারা একুশে পদক দেখে খুশি হয়েছিলেন, এ পুরস্কার (স্বাধীনতা পদক) দেখে আপনারা আরও খুশি হবেন।’ এবার ১০ জনের কম মানুষকে এই পুরস্কার দেওয়া হবে বলে গতকাল জানান আইন উপদেষ্টা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আবর র ফ হ দ উপদ ষ ট গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

ই-কমার্সে ডিজিটাল নিরাপত্তা ও গ্রাহক আস্থা

পর্ব–২
ই-কমার্সের প্রাণভোমরা হলো আস্থা। যখন একজন ক্রেতা নিজের মোবাইল ফোনে বা ল্যাপটপে ক্লিক করে একটি অর্ডার দেন, তখন তিনি বিশ্বাস করেন যে তাঁর পছন্দের পণ্য ঠিকঠাক পৌঁছে যাবে। এই বিশ্বাসের ভিত্তি যদি দুর্বল হয়, তাহলে ই-কমার্সের অগ্রযাত্রা থমকে যায়। বাংলাদেশের ই-কমার্স খাতের দ্রুত প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি ডিজিটাল নিরাপত্তা ও গ্রাহক আস্থা নিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশে ই-কমার্স নিরাপত্তা পরিস্থিতি
ই–ক্যাব ও লাইটক্যাসল পার্টনার্সের যৌথ জরিপ অনুসারে, বাংলাদেশের ই-কমার্স ক্রেতাদের মধ্যে ৬৮ শতাংশ এখনো অনলাইন লেনদেনে শঙ্কা অনুভব করেন। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মতে, ২০২৩ সালে ই-কমার্স সংক্রান্ত অভিযোগের সংখ্যা ছিল প্রায় ৪০ হাজার। প্রধানত পণ্য না পাওয়া, ভিন্ন পণ্য সরবরাহ, টাকা ফেরতে বিলম্ব এবং গ্রাহকের তথ্য অপব্যবহার ছিল অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দু।

কেন গ্রাহক আস্থা হারাচ্ছে?
* অনলাইন লেনদেন ঝুঁকি: ফিশিং, স্ক্যাম, ক্লোনড পেমেন্ট পোর্টালের কারণে গ্রাহক আস্থা কমছে।
* ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা সংকট: অনেক প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের নাম, ফোন নম্বর ও ঠিকানার মতো তথ্য যথাযথভাবে সংরক্ষণ করে না।
* ফেক অফার ও প্রতারণা: ভুয়া পেজ, ছাড়ের নামে প্রতারণা ই-কমার্সকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
* রিফান্ড ও রিটার্ন নীতির জটিলতা: নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা ফেরত (রিফান্ড) না পাওয়া গ্রাহকদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করে।

বিশ্ব অভিজ্ঞতা: সফল নিরাপত্তা মডেল
চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার ই-কমার্স ইকোসিস্টেমে নিরাপত্তা ও আস্থা বিষয়ক কিছু কার্যকর মডেল অনুসরণ করা হয়।
* চীন: আলিবাবার বায়ার প্রটেকশন প্রোগ্রাম।
* ভারত: অ্যামাজনের এ টু জেড গ্যারান্টি ও ইউপিআই সিস্টেমে ফ্রড রেজোলিউশন সেন্টার।
* ইন্দোনেশিয়া: টকোপিডিয়ার সেলার ভেরিফিকেশন ও ইজি রিটার্ন পলিসি।

ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য মূল করণীয়
* ভেরিফায়েড সেলার প্রোগ্রাম চালু করা।
* সাইবার নিরাপত্তা মান বাধ্যতামূলক করা।
* ক্রেতার যাচাই করা রিভিউ ও রেটিং সিস্টেম চালু।
* কেন্দ্রীয় অভিযোগ নিষ্পত্তি সিস্টেম তৈরি (আইসিটি বিভাগ ও ই–ক্যাব)।
* ট্রাস্ট ব্যাজ ও ডিজিটাল সার্টিফিকেশন চালু করা।

গ্রাহক আস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য করণীয়
* রিফান্ড ও রিটার্ন প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুত করা।
* অনলাইন লেনদেন সুরক্ষায় ব্যাংক ও এমএফএস সহযোগিতা বাড়ানো।
* ক্রেতা সুরক্ষায় ডিজিটাল ভোক্তা অধিকার আইনের বাস্তবায়ন।
* সচেতনতামূলক প্রচারণা: ‘বাই ফ্রম ভেরিফায়েড সেলার’ প্রচারণা চালু করা।

বাংলাদেশ সরকার ও ই-ক্যাবের ভূমিকা
* সাইবার সিকিউরিটি সেল সক্রিয় করা (আইসিটি বিভাগ)।
* ই–ক্যাবের মাধ্যমে অনলাইন ব্যবসার সুশাসন নিশ্চিত করা।
* সেলার ব্ল্যাকলিস্ট ডেটাবেজ তৈরি করা।
* ব্যাংক ও লেনদেন গেটওয়ের সঙ্গে কনসোর্টিয়াম গঠন করে প্রতারণা প্রতিরোধ করা।

ফিনটেকের ভূমিকা
ফিনটেক ইকোসিস্টেমের সঙ্গে ই-কমার্সের সংযোগ আরও জোরদার করতে হবে। ডিজিটাল লেনদেন নিরাপত্তায় বিকাশ, নগদ, রকেটের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে গ্রাহক অভিযোগ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ করতে হবে।

ভবিষ্যতের লক্ষ্য
* ২০২৫ সালের মধ্যেই ৯৫ শতাংশ ই-কমার্স লেনদেন সুরক্ষিত ডিজিটাল মাধ্যমে করা।
* ১০০ শতাংশ ই-কমার্স সাইটে এসএসএল সার্টিফিকেট নিশ্চিত করা।
* রিফায়েড সেলারের সংখ্যা ১ লাখে উন্নীত করা।
* ই–ক্যাব সদস্যভুক্তদের জন্য বাধ্যতামূলক সাইবার নিরাপত্তা কমপ্লায়েন্স চালু করা।
ই-কমার্স কেবল প্রযুক্তির খেলা নয়, এটি মানুষের আস্থার খেলা। যেখানে নিরাপত্তা আছে, সেখানেই বাণিজ্য টেকে। বাংলাদেশের ই-কমার্স বিপ্লব সফল করতে হলে আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হতে হবে গ্রাহক আস্থা ও ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

(চলবে)


ড. মোহাম্মদ নূরুজ্জামান: ড্যাফোডিল ফ্যামিলির গ্রুপ সিইও ও গ্লোবাল এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশের কোষাধ্যক্ষ

আরও পড়ুনবাংলাদেশের ই-কমার্স: কোথায় আছি, কোথায় যেতে চাই২২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরীক্ষার সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি, আবার প্রবেশপত্র ডাউনলোড
  • নয় মাসে মুনাফা থেকে লোকসানে জেমিনি সি ফুড
  • মাদ্রাসা ও কারিগরির শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মচারীরা পাবেন অনুদান, করুন আবেদন
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (২৪ এপ্রিল ২০২৫)
  • পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে বাংলাদেশে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা
  • গৃহকর্মী সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নের দাবি
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে আবেদনের সময় আর ২দিন, পিছিয়েছে ভর্তি পরীক্ষা
  • ড্রাইভার পদে নিয়োগ দেবে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, আবেদন করুন দ্রুত
  • বাংলাদেশ ল্যাম্পসের ৯ মাসে লোকসান কমেছে ৫৪.৭৩ শতাংশ
  • ই-কমার্সে ডিজিটাল নিরাপত্তা ও গ্রাহক আস্থা