ইউক্রেনের সুরক্ষায় ‘কোয়ালিশন অব উইলিং’ গঠনের ঘোষণা স্টারমারের
Published: 3rd, March 2025 GMT
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ও রাশিয়ার হাত থেকে ইউক্রেনকে রক্ষায় চার দফা কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন।
স্টারমার জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং অন্য দেশগুলোর একটি জোট (কোয়ালিশন অব দ্য উইলিং) গড়ার মাধ্যমে তাদের প্রচেষ্টা জোরদার করবে এবং ইউক্রেনের প্রতি তাদের এই সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্রকে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করবে।
সোমবার (৩ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
আরো পড়ুন:
জেলেনস্কিকে ‘পূর্ণ সমর্থন’ দিলেন স্টারমার
ট্রাম্পের সঙ্গে ঝড় তুলে লন্ডনে জেলেনস্কি, যুদ্ধের পরিণতি কী
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রবিবার (২ মার্চ) লন্ডনে ইউরোপের ১৮ জন নেতা ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে নিয়ে এক সম্মেলনের পর স্টারমার বলেন, “আজ আমরা ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে আছি।”
জেলেনস্কি বলেন, “সম্মেলনে ইউরোপের অতি উচ্চ স্তরের এক ঐক্য দেখা গেছে যা দীর্ঘদিন দেখা যায়নি।”
এতে ইউক্রেন ‘শক্তিশালী সমর্থন’ অনুভব করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিবিসি জানিয়েছে, লন্ডনে শীর্ষ এই সম্মেলন হয়েছে হোয়াইট হাউজে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বাদানুবাদের দুই দিন পরে।
শীর্ষ সম্মেলন শেষে জেলেনস্কি বলেন, “সত্যিকার শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চয়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতার একটি ভিত্তি খুঁজে পেতে ইউরোপে আমরা সবাই একসাথে কাজ করছি।”
ইউরোপীয় নেতাদের এই বৈঠকের পরপরই এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেন, চারটি বিষয়ে তারা একমত হয়েছেন:
১.
২. কোনো দীর্ঘমেয়াদি শান্তির ক্ষেত্রে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা অবশ্যই নিশ্চিত করা এবং যেকোনো শান্তি আলোচনায় ইউক্রেনের আবশ্যিক উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
৩. একটি শান্তি চুক্তির ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ আক্রমণ প্রতিহত করতে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা জোরদার করা।
৪. ইউক্রেনে একটি চুক্তি রক্ষা করতে এবং এরপর শান্তি নিশ্চিত করতে ‘কোয়ালিশন অব দ্য উইলিং’ গঠন করা।
এর পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ইউক্রেনকে পাঁচ হাজারেরও বেশি এয়ার ডিফেন্স ক্ষেপণাস্ত্র কেনার জন্য অতিরিক্ত দুই বিলিয়ন ডলারের সহায়তা ঘোষণা দিয়েছেন। এই ঘোষণার একদিন আগেই ইউক্রেনকে রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদের মুনাফা থেকে ২ দশমিক ২ বিলিয়ন পাউন্ডের সামরিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছিল যুক্তরাজ্য।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অতীতের ভুল থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। রাশিয়া সহজে ভেঙে ফেলতে পারে এমন দুর্বল কোনো চুক্তি আমরা গ্রহণ করতে পারি না, চুক্তি হতে হবে শক্তিশালী।”
ইউক্রেনের সুরক্ষায় প্রস্তাবিত জোট বা ‘কোয়ালিশন অব উইলিং’- যোগ দিতে কোন কোন দেশ সম্মত হয়েছে তা তিনি জানাননি। তবে বলেছেন, যারা অঙ্গীকার করেছেন তারা জরুরি ভিত্তিতে কাজ করবেন। যুক্তরাজ্য তার অঙ্গীকার রক্ষা করবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
স্টারমার বলেন, “ইউরোপকে অবশ্যই বড় অগ্রগতি অর্জন করতে হবে।”
তবে তিনি আরো বলেন যে, “এ সমঝোতায় যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন প্রয়োজন হবে এবং রাশিয়াকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তবে মস্কোকে কোনো শর্ত নির্ধারণের সুযোগ দেয়া হবে না।”
স্টারমার বলেন, “আমরা ট্রাম্পের সঙ্গে জরুরি শান্তির প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত হয়েছি। এখন সবার একযোগে কাজ করার পালা।”
ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র একটি অবিশ্বস্ত সহযোগী কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন “গত শুক্রবার যা ঘটেছে সেটি কেউ দেখতে চায়নি। কিন্তু আমি মনে করি না যে যুক্তরাষ্ট্র অবিশ্বস্ত সহযোগী।”
সম্মেলনে অংশ নেওয়া দেশগুলো হলো- ফ্রান্স, পোল্যান্ড, সুইডেন, তুরস্ক, নরওয়ে, চেক রিপাবলিক, ডেনমার্ক, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, রোমানিয়া, ফিনল্যান্ড, ইতালি, স্পেন ও কানাডা।
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন ইউক র ন র প র ইউর প
এছাড়াও পড়ুন:
ইলন মাস্ক শিগগির দায়িত্ব ছাড়ছেন, বলেছেন ট্রাম্প
ইলন মাস্ক আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের দায়িত্ব থেকে সরে যাচ্ছেন বলে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যসহ ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের জানিয়েছেন।
টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্ককে নবগঠিত সরকারি দক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) দায়িত্ব দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এটা সরকারের সরাসরি কোনো অংশ নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যয় ও কর্মীবহর কমানো ছিল এই বিভাগের কাজ।
ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার পর পর মাস্কের পরামর্শে অনেকগুলো বড় বড় সিদ্ধান্ত নেন। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা ইউএসএইডি বন্ধ করা এবং লাখ লাখ সরকারি চাকরিজীবীকে অবসরে পাঠানোর মতো সিদ্ধান্ত দেশটিতে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিল।
ইলন মাস্কের সরে যাওয়া নিয়ে প্রেসিডেন্টের ওই বক্তব্য সম্পর্কে অবগত তিনটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ইলন মাস্ক এখন তাঁর ব্যবসায়িক কাজে ফিরে যাবেন। পাশাপাশি তিনি সরকারকে সহায়তার একটি ভূমিকা পালন করবেন।
মাস্ক ও তাঁর বিভাগের কার্যক্রম নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন ট্রাম্প। তবে সম্প্রতি দুজনেই এই বিষয়ে একমত হন যে, মাস্কের সরে দাঁড়ানোর সময় হয়েছে।
ডিওজিইর দায়িত্ব গ্রহণের মধ্য দিয়ে মাস্ক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। কিন্তু চঞ্চল মনোভাবের কারণে ট্রাম্প প্রশাসনের ভেতরের লোকজন এবং প্রশাসনের বাইরের অনেক মিত্র মাস্ককে অপছন্দ করা শুরু করেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের পাল্লা ভারী হতে থাকে। অন্যদিকে বিশ্বের শীর্ষ এই ধনীকে সম্পদের পরিবর্তে রাজনৈতিক দায় হিসেবে দেখতে শুরু করেন ট্রাম্পের দলের রাজনীতিবিদরা।
ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় একজন কর্মকর্তা বলেছেন, দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেও মাস্ক সম্ভবত প্রেসিডেন্টের অনানুষ্ঠানিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করবেন। মাঝে–মধ্যে তাঁকে হয়তো হোয়াইট হাউসে দেখা যাবে।