ওসির বাড়ি থেকে গরু নিয়ে গেল ডাকাত দল
Published: 3rd, March 2025 GMT
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের চড়াপাড়া এলাকার এক পুলিশ কর্মকর্তার বাড়ি থেকে তিনটি গরু ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার দিবাগত রাত একটা দিকে এ ঘটনা ঘটে। ডাকাতির পর ফাঁকা গুলি ছুড়ে পালিয়েছে ডাকাত দল।
যে পুলিশ কর্মকর্তার বাড়িতে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে, তাঁর নাম মো. জাহেদুল কবির। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে কর্মরত।
ওসি জাহেদুল কবিরের বাড়িতে তাঁর বাবা আহমদ কবির এবং ছোট ভাই মনিরুল কবির থাকেন। তাঁদের বসতঘরের পাশে একটি সেমিপাকা ঘর বানিয়ে গরু পালন করা হচ্ছিল। মনিরুল কবির এসব গরুর দেখাশোনা করে আসছেন।
জানতে চাইলে মনিরুল কবির প্রথম আলোকে বলেন, রাতে স্থানীয় এক ব্যক্তি তাঁকে ফোন করে জানান তাঁদের ঘরের ১০০ ফুট দূরত্বে থাকা সড়কে একটি পিকআপ ভ্যান দাঁড়িয়ে রয়েছে। খবরটি শুনে সন্দেহ হওয়ায় ঘর থেকে বের হতেই তাঁর দিকে টর্চের আলো ফেলেন ডাকাত দলের সদস্যরা। এরপর কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছুড়ে তাঁর দুটি ষাঁড় ও একটি বাছুর পিকআপ ভ্যানে তুলে নিয়ে পালিয়ে যান। তবে একটি গাভি গাড়িতে তুলতে না পেরে নিচে ফেলে রেখে যান ডাকাত দলের সদস্যরা।
ডাকাত দলে ১২ থেকে ১৩ জন ছিলেন জানিয়ে মনিরুল কবির অভিযোগ করেন, সম্প্রতি তাঁর পুলিশ কর্মকর্তা ভাইয়ের নেতৃত্বে এক জনপ্রতিনিধিকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই জনপ্রতিনিধি গরু চোর চক্রের নেতা হিসেবে এলাকায় পরিচিত। তাঁর চক্রের সদস্যরা এ ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে ধারণা করছেন মনিরুল।
জানতে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তা মো.
পেকুয়া থানার ওসি সিরাজুল মোস্তফা বলেন, ডাকাতির খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প ল শ কর মকর ত ড ক ত র ঘটন ড ক ত দল
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে পুরুষ আসামির সাক্ষাৎ
বগুড়ায় আলোচিত ১৭ মামলার আসামি তুফান সরকারকে আদালতের নারী হাজতখানায় পরিবারের পাঁচ সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে আদালত পুলিশের ২ সদস্যকে প্রত্যাহার ও ৫ সাক্ষাত প্রার্থীকে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়েছে।
সোমবার বিকেলে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যাহার করা পুলিশের ২ সদস্য হলেন- সহকারী টাউন উপ-পরিদর্শক (এটিএসআই) জয়নাল আবেদিন ও নারী কনস্টেবল ইকসানা খাতুন।
জানা যায়, তুফান সরকার বগুড়া শহর যুব শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার মজিবর সরকারের ছেলে। তিনি হত্যা, মাদক, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ ১৭ মামলার আসামি।
জানা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্বিতীয় তলায় নারী হাজতখানার দরজা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। ভেতরে তুফান সরকার, তার স্ত্রী, ছোট বোন, শাশুড়ি, স্ত্রীর বড় বোন এবং একজন আইনজীবীর সহকারী মিলে গল্প করছিলেন। পরে নারী হাজতখানায় পুরুষ আসামি ঢুকার বিষয়টি জানাজানি হলে আদালত চত্বরে হৈ চৈ পড়ে যায়। পরে দ্রুত তুফান সরকারকে প্রিজন ভ্যানে কারাগারে পাঠানো হয়।
এসময় তুফান সরকারের সঙ্গে দেখা করতে আসা নারী হাজত খানা থেকে ওই ৫ জন সরে যান। পরে তাদের আদালত চত্বর থেকে আটক করে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়।
আটক ৫ জন হলেন, তুফানের শাশুড়ি তাসলিমা বেগম, তুফান সরকারের স্ত্রী আশা বেগম, শ্যালিকা ফেরদৌসি বেগম, শ্যালক নয়ন, তুফানের আইনজীবীর সহকারী হারুনুর রশিদ।
বগুড়া আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, সকালে তুফান সরকারকে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত একটি মামলায় আদালতে হাজিরার জন্য কারাগার থেকে আনা হয়। কারাগার থেকে আনা অন্য সব হাজতিকে দুপুরের মধ্যেই প্রিজন ভ্যানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বাদ পড়ে তুফান সরকার। হাজতখানার চাবি এটিএসআই জয়নাল আবেদিনের কাছে থাকে। তুফান সরকারকে কারাগারে না পাঠিয়ে তাকে নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করার সুযোগ করে দেয় জয়নাল আবেদিন। আদালতের সবার অগোচরে ঘটনাটি ঘটে।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, পুরুষ আসামিকে নারী হাজত খানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে এটিএসআই জয়নাল আবেদিন ও এক নারী কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশের আরও যাদের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এক কলেজ ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে তুফান সরকারের বিরুদ্ধে। পরে শালিস ডেকে ভুক্তভোগী নারী ও তার মা'কে দোষী উল্লেখ করে মারধর করে এবং মা-মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয় তুফান সরকার। সেই ঘটনায় দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে তুফান সরকার গ্রেপ্তার হয়।