ঘরে বৌ-শ্যালিকার লাশ, যুবক লাপাত্তা
Published: 3rd, March 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার একটি বাড়ি থেকে এক তরুণী ও তার কিশোরী বোনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে নিহত তরুণীর স্বামী পালাতক রয়েছেন।
সোমবার (৩ মার্চ) সকাল সোয়া ১০টার দিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। কসবা থানার ওসি মো. আব্দুল কাদের এতথ্য জানিয়েছেন।
মারা যাওয়ারা হলেন- জ্যোতি আক্তার (২০) ও তার বোন স্মৃতি আক্তার (১৩)।
আরো পড়ুন:
বারনই নদী থেকে ভ্যানচালকের লাশ উদ্ধার
মা-মেয়ের বিভৎস হত্যাকাণ্ডের পর অভিযুক্তের বাড়িতে আগুন
পালাতক যুবকের নাম আমীর হোসেন (২৮)। তিনি কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার জামতলী গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে। তিনি নিহত জ্যোতি আক্তারের স্বামী।
সাবেক ইউপি মেম্বার মো.
গোপীনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কিভাবে কি হয়েছে সেটা জানার চেষ্টা করছে। আমীর হোসেন পালিয়ে গেছে।
কসবা থানার ওসি মো. আব্দুল কাদের বলেন, “রবিবার রাত ১১টা থেকে সোমবার ভোর ৫টার মধ্যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিহতদের মধ্যে অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া স্মৃতি আক্তারের গলায় একটু দাগ আছে, তবে জ্যোতির শরীরের কোথাও কোনো দাগ নেই।”
তিনি আরো বলেন, “ধারণা করা হচ্ছে, বালিশ চাপ দিয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে। লাশ দুইটি ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতালে পাঠানো হবে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর হত্যার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”
ঢাকা/মাইনুদ্দীন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে পুরুষ আসামির সাক্ষাৎ
বগুড়ায় আলোচিত ১৭ মামলার আসামি তুফান সরকারকে আদালতের নারী হাজতখানায় পরিবারের পাঁচ সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে আদালত পুলিশের ২ সদস্যকে প্রত্যাহার ও ৫ সাক্ষাত প্রার্থীকে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়েছে।
সোমবার বিকেলে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যাহার করা পুলিশের ২ সদস্য হলেন- সহকারী টাউন উপ-পরিদর্শক (এটিএসআই) জয়নাল আবেদিন ও নারী কনস্টেবল ইকসানা খাতুন।
জানা যায়, তুফান সরকার বগুড়া শহর যুব শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার মজিবর সরকারের ছেলে। তিনি হত্যা, মাদক, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ ১৭ মামলার আসামি।
জানা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্বিতীয় তলায় নারী হাজতখানার দরজা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। ভেতরে তুফান সরকার, তার স্ত্রী, ছোট বোন, শাশুড়ি, স্ত্রীর বড় বোন এবং একজন আইনজীবীর সহকারী মিলে গল্প করছিলেন। পরে নারী হাজতখানায় পুরুষ আসামি ঢুকার বিষয়টি জানাজানি হলে আদালত চত্বরে হৈ চৈ পড়ে যায়। পরে দ্রুত তুফান সরকারকে প্রিজন ভ্যানে কারাগারে পাঠানো হয়।
এসময় তুফান সরকারের সঙ্গে দেখা করতে আসা নারী হাজত খানা থেকে ওই ৫ জন সরে যান। পরে তাদের আদালত চত্বর থেকে আটক করে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়।
আটক ৫ জন হলেন, তুফানের শাশুড়ি তাসলিমা বেগম, তুফান সরকারের স্ত্রী আশা বেগম, শ্যালিকা ফেরদৌসি বেগম, শ্যালক নয়ন, তুফানের আইনজীবীর সহকারী হারুনুর রশিদ।
বগুড়া আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, সকালে তুফান সরকারকে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত একটি মামলায় আদালতে হাজিরার জন্য কারাগার থেকে আনা হয়। কারাগার থেকে আনা অন্য সব হাজতিকে দুপুরের মধ্যেই প্রিজন ভ্যানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বাদ পড়ে তুফান সরকার। হাজতখানার চাবি এটিএসআই জয়নাল আবেদিনের কাছে থাকে। তুফান সরকারকে কারাগারে না পাঠিয়ে তাকে নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করার সুযোগ করে দেয় জয়নাল আবেদিন। আদালতের সবার অগোচরে ঘটনাটি ঘটে।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, পুরুষ আসামিকে নারী হাজত খানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে এটিএসআই জয়নাল আবেদিন ও এক নারী কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশের আরও যাদের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এক কলেজ ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে তুফান সরকারের বিরুদ্ধে। পরে শালিস ডেকে ভুক্তভোগী নারী ও তার মা'কে দোষী উল্লেখ করে মারধর করে এবং মা-মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয় তুফান সরকার। সেই ঘটনায় দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে তুফান সরকার গ্রেপ্তার হয়।