মেঠো পথের সৌন্দর্য বাড়াচ্ছে চোখ জুড়ানো ভাঁট ফুল
Published: 3rd, March 2025 GMT
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মেঠো পথের সৌন্দর্য বাড়াচ্ছে চোখ জুড়ানো ভাঁট ফুল। উপজেলার আঁকাবাঁকা গ্রামীণ পথে, আনাচে-কানাচে ফোঁটা সাদা এই ফুলটি দেখলে যে কারো চোখ জুড়িয়ে যায়।
গ্রাম্য রাস্তার দুই পাশে অযত্ন, অনাদর ও অবহেলায় বেড়ে ওঠা গ্রামবাংলার চিরপরিচিত গুল্মজাতীয় বুনো উদ্ভিদ ভাঁট। অঞ্চল ভেদে ভাঁট ফুলকে ভাইটা ফুল, ঘেটু ফুল, বনজুঁই ফুল বলা হয়। তবে, নড়াইলে এটি ভাঁট ফুল নামেই বেশি পরিচিত।
রবিবার (২মার্চ) বিকেলে লোহাগড়া উপজেলার মধুমতি নদীর কালনা সেতু উত্তর পাশের গ্রামীণ সড়কের দুই পাশে ভাঁট ফুলের সমারোহ দেখা যায়। এই ফুল দেখলে মনে হবে, প্রকৃতি যেন অপরূপ সাজে সেজেছে। সড়কে চলাচলকারী লোকজন অথবা বেড়াতে আসা দর্শনার্থীরাও এই ফুল দেখে মুগ্ধ হন।
বসন্তের আগমনে পলাশ-শিমুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভাঁট ফুল ফোটে। এই ফুলটিকে মূলত ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে দেখতে পাওয়া যায়। সাধারণত দুই থেকে চার মিটার লম্বা হয় ভাঁট ফুলের গাছ। চার থেকে সাত ইঞ্চি লম্বা হয় পাতা। দেখতে কিছুটা পান পাতার
আকৃতির ও খসখসে। ডালের শীর্ষে পুষ্পদণ্ডে ফুল ফোটে। পাপড়ির রং সাদা এবং এতে বেগুনি রঙের মিশ্রণ রয়েছে। রাতে বেশ সুঘ্রাণ পাওয়া যায় ফুলটি থেকে। মৌমাছিরা ভাঁট ফুলের মধু সংগ্রহ করে।
লোহাগড়া সরকারি আর্দশ কলেজের কৃষি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক কে এম ওবায়দুর রহমান সেন্টু বলেন, “ভাঁট শুধু সৌন্দর্য গুণেই নয়, মানবদেহের জন্য এই গাছের অনেক ওষুধি গুণাগুণও রয়েছে। চর্ম রোগীরা ভাঁট ফুলের রস দিনে দুইবার ক্ষত স্থানে মালিশ করলে যে কোনো চর্ম রোগ দ্রুত সেরে যায়। ভাঁট ফুলের পাতার রস কৃমি প্রতিরোধেও দারুণ উপকারী।”
নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দীপক কুমার রায় বলেন, “ভাঁট ফুল বা ঘেটু গুল্মজাতীয় দেশি বুনো পুষ্পক উদ্ভিদ। এই গাছের ভেষজ গুণাগুণও রয়েছে। এই ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করা যায়।”
ঢাকা/শরিফুল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দুই বাংলাদেশির সংস্থাকে ২৯ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার তথ্য সঠিক নয়: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক বৈদেশিক সাহায্য প্রদানকারী সংস্থা ইউএসএআইডির ২ কোটি ৯০ লাখ (২৯ মিলিয়ন) ডলারের প্রকল্প দুই বাংলাদেশির মালিকানাধীন সংস্থাকে দেওয়ার দাবি সত্য নয়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশে ইউএসএআইডির অর্থায়নে ২৯ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প ‘স্ট্রেংদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকল্পটি নিয়ে কিছু তথ্য দিয়েছেন, যা নিয়ে জনমনে ব্যাপক বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি অনুসন্ধান করেছে।
অনুসন্ধান থেকে জানা গেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ইউএসএআইডি যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালকে (ডিআই) নির্বাচিত করে। প্রকল্প প্রস্তাবনা আহ্বানের পর অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়। একটি স্বচ্ছ প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়া অনুসরণের মধ্য দিয়ে ইউএসএআইডি সিদ্ধান্তটি নেয়। ২০১৭ সালের মার্চে চুক্তি স্বাক্ষরের পর ডিআই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরু করে। পরে প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ানো হয় এবং এর অর্থ আসে ধাপে ধাপে।
এসপিএল প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ছিল, রাজনৈতিক সহিংসতা হ্রাস করে শান্তি ও সম্প্রীতি বাড়ানো, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান তৈরি, দলগুলোর সক্ষমতা বাড়ানো, দলগুলোর অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রচর্চার উন্নয়ন ও প্রতিনিধিত্বমূলক নেতৃত্বের বিকাশে উৎসাহ দেওয়া। প্রকল্পের অধীনে ডিআই বাংলাদেশে জরিপ কার্যক্রমও চালায়।
শুরুতে এসপিএল প্রকল্পটি ছিল পাঁচ বছর মেয়াদি এবং বাজেট ছিল ১৪ মিলিয়ন ডলার। প্রকল্পটির ব্যবস্থাপনায় ছিল ইউএসএআইডি এবং অর্থায়নে ছিল ইউএসএআইডি ও যুক্তরাজ্যের উন্নয়ন সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান ডিএফআইডি (বর্তমানে এফসিডিও)। এই প্রকল্পে ডিএফআইডির অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি ছিল ১০ মিলিয়ন ডলার।
মন্ত্রণালয় বলছে, ইউএসএআইডির প্রকল্পের ক্ষেত্রে মার্কিন সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা নীতি অনুসরণ করাটা বাধ্যতামূলক। এতে আর্থিক নিরীক্ষার প্রক্রিয়াটি কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়। প্রকল্প শেষ হওয়ার কয়েক বছর পরও এ-সংক্রান্ত নথিপত্র সংরক্ষণ করা হয়। প্রয়োজনে পুনর্নিরীক্ষণ করা হয়।