নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মেঠো পথের সৌন্দর্য বাড়াচ্ছে চোখ জুড়ানো ভাঁট ফুল। উপজেলার আঁকাবাঁকা গ্রামীণ পথে, আনাচে-কানাচে ফোঁটা সাদা এই ফুলটি দেখলে যে কারো চোখ জুড়িয়ে যায়। 

গ্রাম্য রাস্তার দুই পাশে অযত্ন, অনাদর ও অবহেলায় বেড়ে ওঠা গ্রামবাংলার চিরপরিচিত গুল্মজাতীয় বুনো উদ্ভিদ ভাঁট। অঞ্চল ভেদে ভাঁট ফুলকে ভাইটা ফুল, ঘেটু ফুল, বনজুঁই ফুল বলা হয়। তবে, নড়াইলে এটি ভাঁট ফুল নামেই বেশি পরিচিত। 

রবিবার (২মার্চ) বিকেলে লোহাগড়া উপজেলার মধুমতি নদীর কালনা সেতু উত্তর পাশের গ্রামীণ সড়কের দুই পাশে ভাঁট ফুলের সমারোহ দেখা যায়। এই ফুল দেখলে মনে হবে, প্রকৃতি যেন অপরূপ সাজে সেজেছে। সড়কে চলাচলকারী লোকজন অথবা বেড়াতে আসা দর্শনার্থীরাও এই ফুল দেখে মুগ্ধ হন।

বসন্তের আগমনে পলাশ-শিমুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভাঁট ফুল ফোটে। এই ফুলটিকে মূলত ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে দেখতে পাওয়া যায়। সাধারণত দুই থেকে চার মিটার লম্বা হয় ভাঁট ফুলের গাছ। চার থেকে সাত ইঞ্চি লম্বা হয় পাতা। দেখতে কিছুটা পান পাতার
আকৃতির ও খসখসে। ডালের শীর্ষে পুষ্পদণ্ডে ফুল ফোটে। পাপড়ির রং সাদা এবং এতে বেগুনি রঙের মিশ্রণ রয়েছে। রাতে বেশ সুঘ্রাণ পাওয়া যায় ফুলটি থেকে। মৌমাছিরা ভাঁট ফুলের মধু সংগ্রহ করে।

লোহাগড়া সরকারি আর্দশ কলেজের কৃষি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক কে এম ওবায়দুর রহমান সেন্টু বলেন, “ভাঁট শুধু সৌন্দর্য গুণেই নয়, মানবদেহের জন্য এই গাছের অনেক ওষুধি গুণাগুণও রয়েছে। চর্ম রোগীরা ভাঁট ফুলের রস দিনে দুইবার ক্ষত স্থানে মালিশ করলে যে কোনো চর্ম রোগ দ্রুত সেরে যায়। ভাঁট ফুলের পাতার রস কৃমি প্রতিরোধেও দারুণ উপকারী।”

নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দীপক কুমার রায় বলেন,‍ ‍‍“ভাঁট ফুল বা ঘেটু গুল্মজাতীয় দেশি বুনো পুষ্পক উদ্ভিদ। এই গাছের ভেষজ গুণাগুণও রয়েছে। এই ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করা যায়।”

ঢাকা/শরিফুল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এই ফ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে পুরুষ আসামির সাক্ষাৎ

বগুড়ায় আলোচিত ১৭ মামলার আসামি তুফান সরকারকে আদালতের নারী হাজতখানায় পরিবারের পাঁচ সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে আদালত পুলিশের ২ সদস্যকে প্রত্যাহার ও ৫ সাক্ষাত প্রার্থীকে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়েছে।

সোমবার বিকেলে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যাহার করা পুলিশের ২ সদস্য হলেন- সহকারী টাউন উপ-পরিদর্শক (এটিএসআই) জয়নাল আবেদিন ও নারী কনস্টেবল ইকসানা খাতুন।

জানা যায়, তুফান সরকার বগুড়া শহর যুব শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার মজিবর সরকারের ছেলে। তিনি হত্যা, মাদক, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ ১৭ মামলার আসামি।

জানা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্বিতীয় তলায় নারী হাজতখানার দরজা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। ভেতরে তুফান সরকার, তার স্ত্রী, ছোট বোন, শাশুড়ি, স্ত্রীর বড় বোন এবং একজন আইনজীবীর সহকারী মিলে গল্প করছিলেন। পরে নারী হাজতখানায় পুরুষ আসামি ঢুকার বিষয়টি জানাজানি হলে আদালত চত্বরে হৈ চৈ পড়ে যায়। পরে দ্রুত তুফান সরকারকে প্রিজন ভ্যানে কারাগারে পাঠানো হয়।

এসময় তুফান সরকারের সঙ্গে দেখা করতে আসা নারী হাজত খানা থেকে ওই ৫ জন সরে যান। পরে তাদের আদালত চত্বর থেকে আটক করে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়।

আটক ৫ জন হলেন, তুফানের শাশুড়ি তাসলিমা বেগম, তুফান সরকারের স্ত্রী আশা বেগম, শ্যালিকা ফেরদৌসি বেগম, শ্যালক নয়ন, তুফানের আইনজীবীর সহকারী হারুনুর রশিদ।

বগুড়া আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, সকালে তুফান সরকারকে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত একটি মামলায় আদালতে হাজিরার জন্য কারাগার থেকে আনা হয়। কারাগার থেকে আনা অন্য সব হাজতিকে দুপুরের মধ্যেই প্রিজন ভ্যানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বাদ পড়ে তুফান সরকার। হাজতখানার চাবি এটিএসআই জয়নাল আবেদিনের কাছে থাকে। তুফান সরকারকে কারাগারে না পাঠিয়ে তাকে নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করার সুযোগ করে দেয় জয়নাল আবেদিন। আদালতের সবার অগোচরে ঘটনাটি ঘটে।

বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, পুরুষ আসামিকে নারী হাজত খানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে এটিএসআই জয়নাল আবেদিন ও এক নারী কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।  পুলিশের আরও যাদের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এক কলেজ ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে তুফান সরকারের বিরুদ্ধে। পরে শালিস ডেকে ভুক্তভোগী নারী ও তার মা'কে দোষী উল্লেখ করে মারধর করে এবং মা-মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয় তুফান সরকার। সেই ঘটনায় দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে তুফান সরকার গ্রেপ্তার হয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ