মৃত্যুর আগ পর্যন্ত রাজনীতি করবো না : আদালতকে কামাল আহমেদ মজুমদার
Published: 3rd, March 2025 GMT
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আর রাজনীতি না করার কথা আদালতকে জানিয়েছেন সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী ও ঢাকা- ১৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার।
সোমবার (৩ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্রের আদালতে কাফরুল থানায় আতিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানিতে তিনি একথা জানান।
কামাল আহমেদ মজুমদারসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাফরুল থানার সাব-ইন্সপেক্টর জুয়েল ইসলাম। অপর আসামিরা হলেন- সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, কামরুল ইসলাম, শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক দুই আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক এবং চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানির তারিখ ৩ মার্চ রাখেন।
এদিন শুনানিকালে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
এরপর কামাল আহমেদ মজুমদার আদালতকে বলেন, “আমি কিছু বলবো।”
এরই মাঝে মোহাম্মদপুর থানার আরেক হত্যা মামলায় আনিসুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। আদালত আনিসুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
পরে আদালতে কামাল আহমেদ মজুমদারকে বলেন, “আপনি কিছু বলবেন?”
এরপর তিনি কথা বলেন। কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, “আমার ৭৬ বছর বয়স। আমার চোখে সমস্যা। ৭০ শতাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। কারা কর্তৃপক্ষ ডায়াবেটিস মাপার যন্ত্র দিচ্ছে না। কোরআন বা ডিজিটাল কোরআনও দিচ্ছে না। একের পর এক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছি। আপনার কাছে আবেদন, ডায়াবেটিস মাপার যন্ত্র দেওয়ার যেন অনুমতি দেওয়া হয়। পরিবারের সাথে কথা বলতে পারি না। কি অবস্থায় আছে তাও জানি না।”
তিনি বলেন, “আমার বয়স ৭৬ বছর। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আর রাজনীতি করবো না। আপনার (আদালত) কাছে সুবিচার চাই, প্রার্থণা করছি।”
তিনি বলেন, “একের পর এক মামলা দেওয়া হচ্ছে। একের পর এক নির্যাতন করা হচ্ছে। এ বয়সে নাতি-নাতনীদের সাথে খেলার সময়। এই বয়সে আমার ওপরে জুলুম চালানো হচ্ছে। আল্লাহকে ডাকা ছাড়া কোনো উপায় নেই। আছি কারাগারে। আপনার কাছে অনুরোধ, কারাগারে ডায়াবেটিস চেক করার জন্য ডিজিটাল কোনে যন্ত্র বা ওষুধ দেওয়া হয়। পবিত্র কোরআন শরীফও যেন দেওয়া হয়।”
আইনজীবীদের সাথেও কথা বলতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এসময় বিচারক বলেন, “আপনার সবগুলো দাবি আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করুন। পরে আদালত এজলাস থেকে নেমে যান।”
শুনানি শেষে আদালত থেকে ঢাকা সিএমএম আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশ সদস্যদের কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, “কথাও বলতে দিচ্ছেন না।”
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “রাজনীতি থেকে একদম অব্যাহতি নিয়েছি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সদস্য পদ থেকেও অব্যাহতি নিয়েছি। আর কোনো দলীয় পদে নাই। অব্যাহতি নিয়েছি বলতে পারেন। আজকে থেকে অব্যাহতি। আর রাজনীতি করবো না। কারাগার থেকে আর রাজনীতি করবো না।”
তিনি বলেন, “এদেশে রাজনীতি করার কোনো পরিবেশ নেই। ৭৬ বছর বয়স। এ বয়সে রাজনীতি করার করা সম্ভব না। যার কারণে রাজনীতি থেকে অব্যাহতি নিয়েছি। আমরা চাই, নতুন যুব নেতৃত্ব আসুক।”
পরে তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই বিকেলে রাজধানীর কাফরুল থানাধীন বিআরটিএ অফিসের পেছনের রাস্তায় গুলিবিদ্ধ হন আতিকুল ইসলাম। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত ২৩ ডিসেম্বর তার স্বজন ব্যবসায়ী আহসান হাবীব রাজধানীর কাফরুল থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় আনিসুল হক ৪, সালমান এফ রহমান ৬, কামরুল ইসলাম ৮, কামাল আহমেদ মজুমদার ১০, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ১১, শহীদুল হক ২৭ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।
ঢাকা/মামুন/টিপু
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ফর ল থ ন ল ইসল ম আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপ বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ
আজ বিশ্ব দেখেছে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাল্টা (রেসিপ্রোকাল) শুল্ক আরোপের মাধ্যমে বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় এক অভূতপূর্ব পরিবর্তন, যা দীর্ঘ দিন ধরে GATT/WTO কাঠামোর মূল স্তম্ভ হিসেবে থাকা ‘সর্বাধিক অনুকূল দেশ’ (MFN) নীতির সমাপ্তি বা অন্তত উল্লেখযোগ্য রূপান্তরের সংকেত বহন করছে। এই নীতির ভবিষ্যৎ এখন অন্ধকার, কারণ বিভিন্ন মার্কিন বাণিজ্যিক অংশীদারের ওপর ভিন্ন ভিন্ন পারস্পরিক শুল্ক হার আরোপিত হচ্ছে এবং নির্দিষ্ট পণ্যের ক্যাটেগরির ওপর শুল্কের হারও পরিবর্তিত হচ্ছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে বিজয়ী ও পরাজিত দেশ নির্ধারণ করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ছে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিবেশ আরও অস্থির ও অনিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশসহ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এই পরিবর্তন একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে, কারণ তারা এমন এক অনিশ্চিত ব্যবস্থায় কঠিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারে। এই নতুন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে, বাংলাদেশকে তার অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য নীতি পুনর্বিবেচনা করতে হবে, বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থার সংস্কারে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে এবং মূল বাণিজ্যিক অংশীদারদের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক শক্তিশালী করতে হবে, যাতে বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় তার অবস্থান নিরাপদ থাকে।