ভারতে আসতে যাচ্ছে ইলন মাস্কের বৈদ্যুতিক গাড়ি কোম্পানি টেসলা, এ খবর এখন অনেকেরই জানা। এবার জানা গেল, ভারতের কোন শহরে টেসলার প্রথম বিক্রয় কেন্দ্র হতে যাচ্ছে, তা–ও একরকম ঠিক হয়ে গেছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়ে খুলতে চলেছে ইলন মাস্কের কোম্পানি টেসলার প্রথম বিক্রয়কেন্দ্র। এ ছাড়া মহারাষ্ট্রেই প্রথম কারখানা করতে চায় টেসলা।

মুম্বাইয়ের বান্দ্রা কুরলা কমপ্লেক্সের মতো অভিজাত এলাকায় খোলা হবে টেসলার এই বিক্রয়কেন্দ্র। ইতিমধ্যে জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। এ–সংক্রান্ত চুক্তিও চূড়ান্ত হয়ে গেছে বলে সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে। মুম্বাইয়ের পর ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে দ্বিতীয় বিক্রয়কেন্দ্র খুলবে টেসলা। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।

মুম্বাইয়ের বান্দ্রা কুরলা কমপ্লেক্সের একটি বাণিজ্যিক ভবনে চার হাজার বর্গফুটের জায়গা নিচ্ছে টেসলা। সেখানেই হবে টেসলার প্রথম বিক্রয়কেন্দ্র। এই বিক্রয়কেন্দ্রের ভাড়া হতে পারে মাসে ৩৫ লাখ রুপি। ওই জায়গা পাঁচ বছরের জন্য লিজ নিয়েছে টেসলা। লিজ নেওয়ার প্রক্রিয়াও শেষ হয়েছে বলে সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে। দিল্লির এরোসিটি কমপ্লেক্সে হবে টেসলার দ্বিতীয় বিক্রয়কেন্দ্র।

অনেক দিন ধরেই ভারতে আসি আসি করছিল টেসলা। এর আগে একাধিকবার ভারতে আসার পরিকল্পনা বাতিলও করেছেন ইলন মাস্ক। অভিযোগ, ভারতের বাজারে শুল্ক বেশি। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর বরফ গলতে শুরু করেছে।

ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের পর ইলন মাস্কের কোম্পানি টেসলার ভারতে আসার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে। ২০২৪ সালেই ভারতে টেসলা বিক্রয়কেন্দ্র খুলতে পারে বলে জানা গিয়েছিল, কিন্তু আমদানি শুল্ক–সংক্রান্ত জটিলতার জেরে তা থমকে যায়। এমনকি ভারত সফরও বাতিল করেছিলেন মাস্ক। ট্রাম্প দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় বসার পর থেকেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে শুরু করে। ট্রাম্পের চাপের মুখে মার্কিন পণ্যের আমদানি শুল্ক কমিয়েছে মোদি সরকার। এরপরই ভারতে বিক্রয়কেন্দ্র খোলার পদক্ষেপ নিতে শুরু করে মাস্কের সংস্থা টেসলা। প্রাথমিকভাবে জার্মানির কারখানায় তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ি ভারতে বিক্রি হবে। এর মধ্যে টেসলা ভারতে কারখানা খুলবে বলেও আলোচনা চলছে।

সংবাদে বলা হয়েছে, বৈদ্যুতিক গাড়ির কারখানা তৈরির জন্য টেসলার পছন্দের তালিকায় প্রথমে আছে মহারাষ্ট্র। এর পাশাপাশি টাটা মোটরসের সঙ্গেও যৌথভাবে বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির জন্য আলোচনা করছে টেসলা। টেসলা যে ভারতে নিজেদের কার্যক্রম বিস্তৃত করতে চাইছে, সেটা তাদের একাধিক কার্যক্রম থেকেই স্পষ্ট। ভারতে নিয়োগের জন্য লিঙ্কডইনে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে টেসলা।

২০২১ সালে মুম্বাইয়ের লোয়ার প্যারেলে টেসলার বিক্রয়কেন্দ্র খোলার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছিল। ২০২৩ সালেও ভারতে আগমন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে টেসলা কর্তৃপক্ষের আলোচনা হয়েছিল। ২০২৪ সালের এপ্রিলে ভারতে আসার কথা ছিল মাস্কের। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ভারত সফর বাতিল করেন বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি। আমদানি শুল্ক নিয়ে জটিলতার কারণেই টেসলার ভারতে আগমন বারবার ভেস্তে গেছে বলে জানা গেছে। নরেন্দ্র মোদির সাম্প্রতিক মার্কিন সফরের পর উচ্চ মূল্যের গাড়িতে আমদানি শুল্ক কমানোর কথা ঘোষণা করেছে সরকার।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ক রয়ক ন দ র খ ল ইলন ম স ক র প রথম ব ক র জন য আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

দেড় ঘণ্টায় শেষ সুলভ মূল্যের ডিম-দুধ, পাননি অনেকেই

নির্ধারিত এলাকায় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের গাড়ি পৌঁছায় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। এরপর শুরু হয় সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও গরুর মাংস বিক্রি। দুপুর ১২টার কিছুক্ষণ পরেই দেখা গেল গাড়িতে ডিম ও দুধ নেই। কেবল ১৬ কেজি গরুর মাংস অবশিষ্ট রয়েছে। অর্থাৎ মাত্র দেড় ঘণ্টায় শেষ হয়ে গেছে সুলভ মূল্যে বিক্রির জন্য আনা দুধ ও ডিম।

আজ সোমবার চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী ওয়্যারলেস এলাকায় দেখা গেছে এমন চিত্র। এদিন নগরের ওয়্যারলেস ও টেক্সটাইল এলাকায় এ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর। এই কর্মসূচির আওতায় পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে গরুর মাংসের দাম প্রতি কেজি ৭০০ টাকা, দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা ও ডিম প্রতি ডজন ১১০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ প্রতিটি গাড়িতে ২০০ লিটার দুধ, ১ হাজার ৫০০ পিস ডিম ও ৭৫ কেজি করে মাংস ছিল। সে হিসেবে মাত্র দেড় ঘণ্টায় ২০০ লিটার দুধ ও ১২৫ ডজন ডিম বিক্রি শেষ হয়ে গেছে। তবে দুপুর ১২টার দিকে তেমন ভিড় দেখা যায়নি সেখানে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, তাঁরা অনেকে আগে এসেও পণ্য পাননি।

এদিন অন্তত ১০ ক্রেতা দুধ-ডিম না পেয়ে ফেরত গেছেন। ডিম কিনতে আসা ক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, ‘আমি দুপুর ১২টার দিকে এসে ডিম পাই নাই। বাসা থেকে আসতে আসতেই দেখি সব শেষ। তাঁরা নাকি দেড় হাজার ডিম আনছে। তাহলে আমরা পাই নাই কেন?’

গাড়ি থেকে এসব পণ্য কেনার জন্য প্রথমে টাকা দিয়ে স্লিপ নিতে হয়। কর্মকর্তারা জানান, একজন সর্বোচ্চ এক ডজন ডিম, এক বা দুই লিটার দুধ ও এক কেজি মাংস কিনতে পারেন। কেউ চাইলে শুধু ডিম, দুধ অথবা মাংস কিনতে পারবেন। তবে মাংসের চাহিদা তুলনামূলক কম।

দ্রুত শেষ হয়ে যাওয়া নিয়ে কর্মকর্তারা বলেন, ঢাকায় ফ্রিজার ট্রাক রয়েছে। ফলে তারা দীর্ঘ সময়ের জন্য পণ্য নিয়ে আসতে পারে। কিন্তু চট্টগ্রামে সে সুযোগ নেই। তাই পরিমাণ কম। আবার দ্রুত ক্রেতাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে দায়িত্বে থাকা বোয়ালখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রুমন তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা এসেছেন, তাঁদের সবাইকে পণ্য দেওয়া হয়েছে। মাংসের চাহিদা কম থাকায় কিছু মাংস থেকে গেছে। ডিমের চাহিদা বেশি ছিল। দেড় থেকে দুই ঘণ্টায় শেষ হয়ে গেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ