সিদ্ধিরগঞ্জে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে ৮ জন দগ্ধ
Published: 3rd, March 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জে বাড়িতে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে নারী-শিশুসহ আটজন দগ্ধ হয়েছেন। আজ সোমবার ভোরে উপজেলার ২ নম্বর ঢাকেশ্বরী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের গুরুতর অবস্থায় রাজধানীর জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।
দগ্ধ ব্যক্তিরা হলেন ওই এলাকার বাসিন্দা সাব্বির (১৬), মো.
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের উপপরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন প্রথম আলোকে বলেন, একটি টিনশেড বাড়িতে গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে নারী-শিশুসহ আটজন দগ্ধ হয়েছেন। তাঁদেরকে গুরুতর অবস্থায় জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের ধারণা, গ্যাসের চুলার লিকেজ থেকে জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণে এই ঘটনা ঘটেছে।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন শাওন বিন রহমান প্রথম আলোকে জানান, গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে দগ্ধ আটজনের মধ্যে ছয়জনেরই শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের সবাইকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ত্বকী হত্যার বিচার শুরু করার দাবি জানিয়ে দেশের ১৫ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি
নারায়ণগঞ্জের মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দ্রুত আদালতে জমা দিয়ে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করার দাবিতে দেশের ১৫ বিশিষ্ট নাগরিক বিবৃতি দিয়েছেন। রোববার দুপুরে সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্যসচিব হালিম আজাদ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিশিষ্ট নাগরিকেরা বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, ‘২০১৩ সালের ৬ মার্চ নারায়ণগঞ্জে কিশোর তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীকে দুর্বৃত্তরা হত্যা করে। হত্যার ১২ বছর পূর্ণ হচ্ছে, অথচ আজও এর অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়ে বিচারকার্য শুরু হয়নি। আমরা এ দীর্ঘ সময় বহুবার বিবৃতি দিয়ে, সংবাদ সম্মেলন করে, সমাবেশ ও সংবাদপত্রে লেখনীর মাধ্যমে এ হত্যার বিচার চেয়েছি। কিন্তু বিগত সরকারের সময় তাদের ইচ্ছাতে সাড়ে ১১ বছর এ বিচারকার্য বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। গত ৫ আগস্টের পরিবর্তনের পর অপরাধী কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিলে মামলাটিতে নতুন করে গতি সঞ্চার হয় এবং আমরা আশাবাদী হয়ে উঠি। কিন্তু আমরা লক্ষ করলাম, এখন আবার বিচারপ্রক্রিয়ায় স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। আমরা সব অপরাধীকে আইনের আওতায় এনে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়ে দ্রুত বিচারকার্য শেষ করার দাবি জানাচ্ছি।’
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন ভাষাসংগ্রামী ও বিশিষ্ট লেখক আহমদ রফিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক শিক্ষাবিদ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক যতীন সরকার, মানবাধিকারকর্মী বদিউল আলম মজুমদার, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিক, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, শিক্ষাবিদ সলিমুল্লাহ খান, আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম, লেখক ও নারীনেত্রী মালেকা বেগম, মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির, কবি ও সাংবাদিক সোহরাব হাসান, গণশিল্পী কফিল আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খান এবং বিশিষ্ট আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরের শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দুই দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। একই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়।
২০১৪ সালের ৫ মার্চ তদন্তকারী সংস্থা র্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, ‘নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদেরই টর্চারসেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে। অচিরেই তারা অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করবে।’ তবে সে অভিযোগপত্র আজও পেশ করা হয়নি। ত্বকী হত্যার পর থেকে বিচার শুরু ও চিহ্নিত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ আলোক প্রজ্বালনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।