মাত্র দুইদিনের ব্যবধানে ৩০ টাকা দাম বেড়ে দিনাজপুরের হিলি বাজারে লেবু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা হালি দরে। অথাৎ প্রতিপিস লেবু ১৫ টাকায় কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। রোজা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে এভাবে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।

ব্যবসায়ীরা জানান, মৌসুম না হওয়ার কারণে লেবু বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের।

রবিবার (২ মার্চ) সন্ধ্যায় হিলি সবজি বাজারে সবজি ক্রেতারা জানান, প্রায় সবজির দোকানে সাজানো আছে লেবু। এসব লেবু অপরিপক্ক। পরিপক্ক হতে এখনো মাসখানেক সময় লাগবে। রমজানে ইফতারে শরবত তৈরির জন্য লেবুর চাহিদা থাকে প্রচুর। যে কারণে সাবাই এই পণ্যটি কিনছেন। এই সুযোগে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। 

আরো পড়ুন:

কোন কোন ভুলে রোজা রেখেও ওজন কমে না

এবার জিনিসপত্রের দাম গতবারের চেয়ে কম: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

তারা আরো জানান, রমজান শুরুর দুইদিন আগেও বাজারে লেবু বিক্রি হচ্ছিল ৩০ টাকা হালি। রমজানের প্রথম দিন থেকেই লেবু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা হালি। ইফতারের অন্যান্য পণ্যের দাম স্বাভাবিক থাকলেও লেবুর দাম দ্বিগুণ হওয়ায় ক্ষুদ্ধ ক্রেতারা। 

হিলি বাজারে সবজি কিনতে আসা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “রমজান শুরু হয়েছে। ইফতারের সময় লেবুর রস দিয়ে শরবত খুব জরুরি। তাই বাজারে লেবু কিনতে এসেছি। লেবুর দাম শুনে চমকে গেছি। ৬০ টাকা হালি। আগামীতে লেবুর দাম আরো বাড়লেও কিছু করার নেই। ৩০ টাকা দিয়ে দুইটি ‍লেবু কিনলাম।”

আব্দুল খালেক নামে অপর ক্রেতা বলেন, “দুইদিন আগে লেবুর হালি ছিল ৩০ টাকা। আজ সেই একই দামে লেবু কিনেছি দুইটি। আমার বাড়িতে লেবুর গাছ আছে, গাছে লেবু হয়েছে। সেগুলো এখনো খাওয়ার উপযুক্ত হয়নি। লেবু পরিপক্ক হতে এখনো এক মাস সময় লাগবে।”

হিলি বাজারে লেবু ব্যবসায়ী মোফাজ্জল হোসেন বলেন, “আমাদের এই অঞ্চলের লেবু এখনো বাজারে তেমন ওঠেনি। মাসখানেক সময় লাগবে লেবু বাজারে আসতে। এখন নাটোর জেলা থেকে লেবু এনে বিক্রি করছি। ১০ থেকে ১১ টাকা পিস হিসেবে পাইকারি কিনে আনছি। বড় লেবুগুলো ১৫ টাকা পিস এবং ছোট লেবু ১২টাকা পিস হিসেবে খুচরা বিক্রি করছি।”

ঢাকা/মোসলেম/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর রমজ ন ৩০ ট ক রমজ ন সময় ল

এছাড়াও পড়ুন:

রোজা শুরুর আগেই লেবু শসা ও বেগুনে উত্তাপ

অন্য বছরের তুলনায় এবার রোজার আগে বেশির ভাগ নিত্যপণ্যের দাম বলা চলে এক প্রকার স্বাভাবিক। তবে কয়েকটি পণ্যে রোজার আঁচ লেগেছে। বিশেষ করে এ তালিকায় রয়েছে লেবু, বেগুন, শসাসহ ইফতারিতে ব্যবহার হয় এমন পণ্য। চাহিদা বাড়ার সুযোগে পণ্যগুলোর দর কিছুটা বেড়েছে।

শুক্রবার ছুটির দিনে কারওয়ান বাজারসহ রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। শনিবার চাঁদ দেখা গেলে রোববার থেকে শুরু হবে পবিত্র মাহে রমজান। এর আগে সবাই অগ্রিম বাজার করে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। এর কিছুটা প্রভাবও পড়েছে বাজারে।

খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা বলেন, এখন লেবুর মৌসুম নয়। ফলে প্রায় এক মাস ধরে দর বাড়তি। এ ছাড়া বেগুন, শসাসহ যেগুলোর দাম বেড়েছে তার মূল কারণ ক্রেতাদের বেশি পরিমাণে কেনা। রোজার আগমুহূর্তে প্রতিবছরই এসব পণ্যের দর বাড়ে। তবে পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে সামনের দিনগুলোতে দর বাড়ার সম্ভাবনা কম বলে মনে করেন তারা।

শরবত তৈরির অন্যতম উপাদান লেবু। রমজানে ইফতারে কমবেশি সবাই শরবত খাওয়ার চেষ্টা করেন। ফলে লেবুর চাহিদা বেড়ে যায়। আর এ সুযোগে বাড়তি দাম নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে প্রতি হালি শরবতি বা সুগন্ধি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা এবং আকারভেদে অন্য লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। মাসখানেক আগে অন্তত ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে কেনা গেছে লেবুর হালি। তবে এখনও বাড়লেও গত বছরের এ সময়ের তুলনায় কিছুটা কম রয়েছে দাম।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি লেবু ব্যবসায়ী জালাল আহমেদ সমকালকে বলেন, লেবুর উৎপাদন কম। কারণ, এখন লেবুর মৌসুম নয়। তাছাড়া অনেক দিন ধরে বৃষ্টিপাত নেই। এ জন্য ফলন ভালো হচ্ছে না। সেজন্য বাজারে লেবু কম আসছে। কিন্তু রোজার কারণে মানুষ আগেভাগে লেবু কিনছেন। মূলত এ জন্য দর বাড়তি।

বাজারে এখন ভরপুর শসা রয়েছে। হাইব্রিড ও দেশি শসার পাশাপাশি ছোট আকারের খিরাও পাওয়া যাচ্ছে। হাইব্রিড শসা ও খিরার কেজি ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেনা গেলেও দেশি জাতের শসা কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। সপ্তাহখানেক আগে এসব শসা অন্তত ১০ থেকে ৩০ টাকা কমে কেনা গেছে। অবশ্য, এ দর গেল রমজানের চেয়ে বেশ কম। গত বছর এ সময় শসার কেজি সর্বোচ্চ ১১০ টাকা ছুঁয়েছিল।

এখনও টমেটোর ভর মৌসুম চলছে। ফলে বাজারে দেশি টমেটোর পর্যাপ্ত সরবরাহ দেখা গেছে। সেজন্য দাম এখনও নাগালে। কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৪০ টাকায়।
বেগুনি তৈরি করতে লম্বা বেগুনের দরকার হয়। সেজন্য রোজার সময় লম্বা বেগুনের চাহিদা বেড়ে যায়। যার প্রভাব পড়েছে দামে। পাঁচ-ছয় দিন আগেও প্রতি কেজি লম্বা বেগুন কেনা গেছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। প্রায় দ্বিগুণের মতো দর বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। তবে পাড়া-মহল্লায় ভ্যান থেকে কিনতে গেলে ক্রেতাকে কেজিতে বাড়তি গুনতে হচ্ছে অন্তত আরও ১০ টাকা। বছরের অন্য সময়ে গোল বেগুনের দর বেশি থাকলেও এখন স্বাভাবিক। প্রতি কেজি কেনা যাবে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।

কারওয়ান বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা ইয়াকুব আলী বলেন, এখনও শীতের সবজিতে বাজার ভরপুর। লম্বা বেগুনের চাহিদা বেশি। এ কারণে কেউ কেউ দর বেশি নিচ্ছে। তবে অন্য জায়গায় দর বাড়লেও কারওয়ান বাজারে বাড়েনি বলে দাবি করেন এই বিক্রেতা।

গাজরের সরবরাহ রয়েছে বেশ ভালো। ফলে দর বাড়ার তালিকায় উঠতে পারেনি মিষ্টি জাতীয় সবজিটি। প্রতি কেজি গাজর কেনা যাচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। গত বছরের তুলনায় এ বছর কম দরে মিলছে পেঁয়াজ। মানভেদে দেশি প্রতি কেজি পেঁয়াজ কেনা যাচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়।

রমজানে কাঁচামরিচের চাহিদা বেশি থাকে। তবে এবার ঝালজাতীয় পণ্যটির দর নাগালের মধ্যেই রয়েছে। কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। মাস দুই-তিনেক ধরে এ দরের আশপাশেই বিক্রি হচ্ছে মরিচ।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ও ঢাকা বিভাগীয় প্রধান বিকাশ চন্দ্র দাস সমকালকে বলেন, রোজা উপলক্ষে রোববার থেকে ঢাকা মহানগরে ১০টি বিশেষ তদারকি দল মাঠে নামবে। তারা বিভিন্ন বাজারে তদারকি করবে। রমজানজুড়ে চলবে এ তদারকি কার্যক্রম। রোববার সকালে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কারওয়ান বাজারে এ তদারকি কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইফতারে কোন দেশে কী খাওয়া হয়
  • ইফতারের শরবতের লেবুর দামে আগুন, সিলেটে ৫ টাকার লেবু এখন ২৫ টাকা
  • ইফতারে লেবুর শরবতের বিকল্প কী হতে পারে
  • রিকশাভ্যানে শরবত ও পপকর্ন বিক্রি করে সংসার চলছে কাদিরের
  • রোজা শুরুর আগেই লেবু শসা ও বেগুনে উত্তাপ