নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে মো. রাব্বি (২২) নামের এক তরুণ নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত আটটার দিকে পৌর শহরের টেংগাপাড়া এলাকায় রেলস্টেশন পুকুরপাড়ে এ ঘটনা ঘটে।

মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিহত রাব্বি পৌর শহরের টেংগাপাড়া এলাকার বাসিন্দা মাছ ব্যবসায়ী আনিছ মিয়ার ছেলে। তিনিও পেশায় মাছ ব্যবসায়ী ছিলেন।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যায় রাব্বি মোহনগঞ্জ পৌর শহরের মৎস্য আড়তে মাছ বিক্রি করছিলেন। রাত আটটার দিকে কয়েকজন এসে রাব্বিকে পাশে রেলস্টেশন পুকুরপাড়ে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় ওই দুর্বৃত্তরা। এদিকে ছুরিকাঘাতে রাব্বি গুরুতর আহত হন। প্রাণ বাঁচাতে পুকুরে লাফিয়ে পড়েন তিনি। তাঁর চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এসে তাঁকে উদ্ধার করে মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাত ১১টার দিকে ওই হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কিছু আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আওয়ামী লীগ পরিচয়ে মুক্তি, বিএনপির পদ পেতে মরিয়া

রৌমারীতে বিএনপির দুই নেতাকে নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। ২০২৩ সালে নিজেদের আওয়ামী লীগ পরিবারে সদস্য পরিচয়ে চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্রে একটি মামলা থেকে মুক্তি পান তারা। 

আন্দোলনে সরকার পতনের পর থেকে সেই তারাই আবার বিএনপির পদ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ দলটির স্থানীয় নেতাকর্মীর। এ ঘটনা কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের।

‘আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য’ পরিচয়ে প্রত্যয়নপত্র নেওয়া বিএনপির দুই নেতা হলেন– ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আজিজুর রহমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন। তারা দু’জনই নয়াচর বাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তবে নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তারা।

২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর রাজীবপুর থেকে মাইক্রোবাসে করে ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশে অংশ নিতে যাচ্ছিলেন আজিজুর রহমান ও দেলোয়ার হোসেনসহ ১১ নেতাকর্মী। পথিমধ্যে শেরপুরের শ্রীবরদী থানা এলাকায় পুলিশের তল্লাশিতে আটক হন তারা। তাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ। তাদের কাছ থেকে পাঁচটি অবিস্ফোরিত ককটেল ও ১০টি বাঁশের লাঠি উদ্ধার করে আলামত হিসেবে জব্দ তালিকা প্রস্তুত করে পুলিশ। ওই মামলায় আজিজুর ৩ নম্বর ও দেলোয়ারকে ৬ নম্বর আসামি করা হয়। 

মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জহুরুল ইসলামের ভাষ্য, আজিজুর ও দেলোয়ার মাস্টার বিএনপির পদে থেকেও মামলা থেকে বাঁচতে ও চাকরি বাঁচাতে আওয়ামী পরিবারের সদস্য পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু তাদের সঙ্গে গ্রেপ্তার অপর নেতাকর্মীকে মামলা থেকে রেহাই দেওয়া হয়নি। এখন আবারও পদ পেতে মরিয়া হয়েছে উঠেছেন তারা।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও শ্রীবরদী থানার তৎকালীন এসআই রিপন চন্দ্র সরকার বলেন, গ্রেপ্তারের দিন বিএনপি নেতাকর্মীর গাড়িতে করে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছিলেন আজিজুর ও দেলোয়ার। তাদের বিরুদ্ধে ওই মামলায় জড়িত থাকার কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া চিকিৎসাপত্র ও ইউপি চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্র পর্যালোচনা করে চার্জশিট থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। 

চার্জশিটের তথ্যমতে, বিএনপি নেতা আজিজুর ও দেলোয়ার বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলা থেকে বাঁচতে রাজীবপুরের মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি প্রত্যয়নপত্র নেন। চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত ওই প্রত্যয়নপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, আজিজুর ও দেলোয়ার দু’জনই আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। তারা কোনো রাষ্ট্রদ্রোহী কার্যকলাপে জড়িত নন।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আজিজুর ও দেলোয়ার। তাদের দাবি, তাদের বংশে কেউ আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত নেই। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কেন এবং কীভাবে তাদের চার্জশিট থেকে বাদ দিয়েছেন তা জানা নেই তাদের। 

 ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের ভাষ্য, আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য পরিচয় উল্লেখ করে তারাই প্রত্যয়নপত্র তৈরি করে এনেছিলেন। মানবিক দিক বিবেচনা করে স্বাক্ষর করে দিয়েছেন তিনি।

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘তারা বিএনপি হিসেবে জেল খেটেছেন। জেল থেকে বের হওয়ার পরও বিএনপিতে ছিল। তারা যদি এমন কিছু করে থাকে, সেটা আমরা ভালোভাবে দেখব না।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আওয়ামী লীগ পরিচয়ে মুক্তি, বিএনপির পদ পেতে মরিয়া