মুকুলে ছেয়েছে গাছ স্বপ্ন বুনছেন চাষি
Published: 2nd, March 2025 GMT
গত কয়েক বছরে আম চাষে বদলে গেছে সাতক্ষীরার চাষিদের জীবনমান। চলতি বছর গাছে গাছে মুকুলের সমারোহে স্বপ্ন বুনছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা। মৌসুমের শুরুতেই কুয়াশা থাকলেও এখন প্রকৃতি বেশ অনুকূলে। বসন্তের বাতাসে আমের মুকুলের ঘ্রাণে চাঙ্গা হয়ে উঠছে চাষিদের মন।
আমচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর আবহাওয়া এখন পর্যন্ত আম চাষের অনুকূলে। মুকুল আসার শুরু থেকেই চাষিরা বাড়তি যত্ন শুরু করেছেন। গাছে গাছে যে পরিমাণ মুকুল দেখা যাচ্ছে, তা টিকে থাকলে আমের ফলন ভালো হবে। আবার আমের আগামে দামও পাওয়া যাবে। গত বছরে জেলায় আমের ফলন কম হওয়ায় এবার আশানুরূপ ফলনের আশায় বুক বেঁধেছেন তারা।
সাতক্ষীরা সদরের আলীপুর, দেবনগর, বলাডাঙ্গা, ছয়ঘরিয়া, ঝাউডাঙ্গাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব আম গাছেই প্রচুর পরিমাণে মুকুল এসেছে। ভরা আমের মুকুলে ভালো ফলনের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় কৃষকও বেশ আশাবাদী হয়ে উঠেছেন। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণ। মৌসুমের শুরুতে কুয়াশা থাকলেও এখন প্রকৃতিও বেশ অনুকূলে। চাষিরা স্প্রে করা, গাছের গোড়ায় পানি দেওয়া, পানি ছিটানোসহ মুকুল আটকাতে সব ধরনের যত্ন নেওয়া শুরু করেছেন। ব্যবসায়ীদের আনাগোনাও বেড়ে গেছে। আলাপকালে চাষিরা জানান, আমের ফলনের একটি প্রাকৃতিক রীতি আছে। এক বছর বেশি ফলন (অন ইয়ার) হয়, তো পরের বছর কম হয় (অফ ইয়ার)। মুকুল আসার পর প্রতিবছরই ব্যবসায়ীদের কাছে আমের বাগান আগাম বিক্রি করে দেন তারা।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, সময়ের আগেই কিছু গাছে মুকুল এসেছে। গোপালভোগ, ল্যাংড়া, আম্রপালিসহ অন্যান্য আমের মুকুল এবার আগাম হয়েছে। তাতে কৃষকের তেমন কোনো ক্ষতির আশঙ্কা নেই। গত বছর সাতক্ষীরায় ৪ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এ বছর আরও বেশি জমিতে আম চাষ হচ্ছে।
সাতক্ষীরা সদরের দেবনগর এলাকার চাষি আব্দুর রাজ্জাক জানান, আমের মুকুল এবার ভালোই আছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলন হবে বলে তিনি আশাবাদী।
কলারোয়া উপজেলার কামারালী গ্রামের সোলাইমান হোসেন বলেন, ‘আমাদের এলাকায় হিমসাগর, ন্যাংড়া ও আম্রপালি আমের জন্য বিখ্যাত। সঠিক দাম পেলে চাষিরা আরও লাভবান হবেন। আম চাষে লোকসান নেই বললেই চলে।’
এবার গত বছরের চেয়ে বেশি আমের ভালো মুকুল এসেছে জানিয়ে তালা উপজেলার মেহেদী হোসেন বলেন, সঠিক পরিচর্যা করলে ভালো ফলন হবে। আবহাওয়া ও দেশের পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে আমে এবার লাভবান হওয়া যাবে।
সদরের আলীপুর গ্রামের আম ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম জানান, ভালো লাভের আশায় তিনি চাষিদের কাছ থেকে আগাম বাগান কিনে রেখেছেন। আমের ফলন নিয়ে তিনি কিছুটা সন্দিহান।
সাতক্ষীরার জনপ্রিয় হিমসাগর আমসহ অন্যান্য আমের মুকুলে ছেয়ে গেছে জানিয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম বলেন, এ বছর এখন পর্যন্ত আকাশ পরিষ্কার। বৃষ্টি বা কুয়াশা নেই, ঝড়-বাতাসও নেই। চাষিরা যদি ভালো করে পরিচর্যা করে তাহলে আশানুরূপ ফলন হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। মুকুল আসার পর থেকেই এ বিষয়ে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চাষিদের নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আম র ম ক ল ব যবস য় অন ক ল আম চ ষ এখন প
এছাড়াও পড়ুন:
আইসিসি-এসিসির ইভেন্টেও ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ নিয়ে শঙ্কা
ভারতের জম্মু-কাশ্মিরে গত ২২ এপ্রিল সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে পর্যটকসহ অন্তত ২৬জন নিহত হয়েছেন। পাকিস্তানের দিক থেকে হামলা করার অভিযোগ তোলা হচ্ছে। সন্ত্রাসী এই হামলার প্রেক্ষিতে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আরও অবনতি হয়েছে। ক্রিকেট সম্পর্কেও তিক্ততার ছোঁয়া লেগেছে।
এরই মধ্যে জানা গেছে, ভারত জানিয়ে দিয়েছে পাকিস্তানের বিপক্ষে ক্রিকেটে কোন ধরনের সিরিজ খেলবে না তারা। গুঞ্জন ছড়িয়েছে- পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারত আইসিসি ও এসিসির ইভেন্টেও খেলতে চায় না। বিষয়টি পরিষ্কার করে বিসিসিআই চিঠি দিয়েছে আইসিসি ও এসিসিকে (এশিয়া ক্রিকেট কাউন্সিল)।
বিষয়টি নিয়ে বিসিসিআই-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজিব শুকলা জানিয়েছেন, এমন কোন চিঠি দেওয়া হয়নি। তবে এক্ষেত্রে বোর্ড ভারত সরকারের দেওয়া নির্দেশনা অনুসরণ করবে। বিসিসিআই-এর শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আইসিসি ও এসিসির ইভেন্টে ভারত-পাকিস্তানকে একই গ্রুপে না রাখা বিষয়ক একটি খবর তিনিও পেয়েছেন। তবে নিশ্চিত করতে পারেননি। বিষয়টি সংবেদনশীল হিসেবে দেখছে বিসিসিআই।
চলতি বছরে আইসিসি ও এসিসির দুটি ইভেন্ট আছে। একটি সেপ্টেম্বরে টি-২০ ফরম্যাটের এশিয়া কাপ। অন্যটি সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ। দুটি টুর্নামেন্টেরই আয়োজক বিসিসিআই। এর মধ্যে ছেলেদের এশিয়া কাপ নিরপেক্ষ ভেন্যুতে হবে। সেটি শ্রীলঙ্কা নাকি আরব আমিরাত তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। নারী বিশ্বকাপে পাকিস্তানের নিরপেক্ষ ভেন্যুতে ম্যাচ খেলার বিষয়টি আগেই চূড়ান্ত করা হয়েছে।
দ্বিপাক্ষিক সিরিজের মতো বড় ইভেন্টেও ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ না খেলার সিদ্ধান্ত নিলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে আইসিসি ও এসিসি। এই যেমন- চার বছরের জন্য এসিসি এশিয়া কাপের সম্প্রচার স্বর্ত বিক্রি করেছে ১৭০ মিলিয়ন ডলার বা দুই হাজার কোটি টাকা। এশিয়া কাপের প্রতি আসরে ভারত-পাকিস্তান অন্তত দু’বার মুখোমুখি হবে ধরেই এতো টাকায় বিক্রি করা হয়েছে এশিয়া কাপের সম্প্রচার স্বত্ব।
আইসিসি কিংবা এসিসির ইভেন্টে ভারত ও পাকিস্তান মুখোমুখি হবে কিনা তা আগামী মাসে জানা যেতে পারে। হাইব্রিড বা নিরপেক্ষ ভেন্যুতে অনুষ্ঠেয় আগামী সেপ্টেম্বরের এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বের সূচি মে মাসে চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও এখন টুর্নামেন্ট ও সূচি ঘোষণা ঝুলে যাওয়ার শঙ্কা বেশি।