তিন বছর পর ঝালকাঠি জেলা বিএনপির সম্মেলন এপ্রিল মাসে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ঘোষণার পর থেকে সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীরা কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। দ্বন্দ্ব ও মতবিরোধের কারণে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। পাল্টাপাল্টি সভা-সমাবেশ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এতে শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। 
জেলা বিএনপির একটি পক্ষে রয়েছেন বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির নেতাকর্মীরা। সম্মেলন ঘিরে তারা প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। তাদের কোণঠাসা করতে তিন কেন্দ্রীয় নেতাকে নিয়ে একমঞ্চে সভা করছেন পদবঞ্চিতরা। তারা হলেন–সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুস, অপরজন কেন্দ্রীয় বিএনপির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, মহিলা দলের সিনিয়র সহসভাপতি জেবা আমিনা খান। তাদের নিয়ে নলছিটি ও রাজাপুরে দুটি সভা করা হয়েছে। এ পক্ষে আছেন সাবেক এমপি ইলেন ভুট্টো, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোস্তফা কামাল মন্টু, সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম নূপুর, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাহাবুব আলম খানসহ কয়েকজন।  দীর্ঘদিন পর তারা সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। এতদিনের নিষ্ক্রিয়তার কারণ হিসেবে তারা আহ্বায়ক কমিটিকে দায়ী করেছেন। তাদের দাবি, বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্তরা জেলার সম্মেলন ও কমিটি করতে পারেনি এখন পর্যন্ত। তারা কাউকে কিছু না জানিয়ে নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেন। 
এ পক্ষের জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম নূপুর বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে দুই-আড়াইশ কোটি টাকার কাজ সমঝোতা করে জেলায় রাজনীতি করা হচ্ছে। সারাবছর বিদেশে থেকে ৫ তারিখের পরে এসে তারাই এখন বিএনপির বড় নেতা। স্বেচ্ছাসেবক দল জেলা বিএনপির কমিটিকে না জানিয়ে ঝালকাঠি ও নলছিটিতে সভা করছে। এসব কি হচ্ছে। 
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আহ্বায়ক কমিটির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, বিগত দিনে আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে ছিলেন না মনিরুল ইসলাম নূপুরের সমর্থকরা। দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে সংস্কারপন্থিদের নেতা হয়েছেন সাবেক এমপি ইলেন ভুট্টো। যুগ্ম আহ্বায়ক মাহাবুব আলম খানের বাবা ওয়ারেচ আলী খান ২০২৩ সালের পোনাবালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলের নির্দেশ উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেন। দল তাঁকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে। বিনয়কাঠি ইউপি চেয়ারম্যান ও সাবেক সদর উপজেলা বিএনপি সভাপতিও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কৃত হয়েছেন। কোনো আন্দোলন সংগ্রামে পাওয়া যায়নি তাদের। এখন তারাই সম্মেলনের কথা শুনে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। কেন্দ্রের কাছে মিথ্যা অভিযোগ করছেন। 
আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শাহাদাত হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে তারা পকেট কমিটির অভিযোগ করেছে। তাদের কর্মকাণ্ড পরিষ্কারভাবে তুলে ধরেছি। 
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বরাত দিয়ে বরিশাল বিভাগের দায়িত্বে থাকা আব্দুল আউয়াল মিন্টু জানিয়েছেন, যারা গত তিন বছর আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে ছিলেন না; তারা কোনো পদে আসতে পারবেন না। এ নির্দেশনার পর থেকেই আমার ও আহ্বায়ক কমিটির বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে কয়েকজন বেশ তৎপর।   
সার্বিক বিষয়ে বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বপ্রাপ্ত আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, কমিটি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শাহাদাৎ বিএনপি নেতা, পিপি তাঁর ভায়রা, নিজে বারের সভাপতি। এখানে কি আর যোগ্য লোক নেই? এক পরিবার থেকে সবাইকে আসতে হবে কেন? অঙ্গসংগঠনের সভায় জেলা কমিটিকে দাওয়াত দেওয়া হয়নি। তাদের দাওয়াত দিলে সভার গুরুত্ব হতো। নেতাকর্মীরা এসব প্রশ্ন করছেন বলে জানান তিনি। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ র ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে সরকার একা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না: তথ্য উপদেষ্টা 

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া, দেশি-বিদেশি যারা আমাদের সহযোগী ও স্টেকহোল্ডার রয়েছে, তাদের পরামর্শ ছাড়া এ বিষয়ে সরকার একা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। জনগণ বারবার বলছে, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে। আমরা মনে করি, সরকার সবার সঙ্গে পরামর্শ-পর্যালোচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নেবে।

বুধবার লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের পূর্ব নারায়ণপুর ইসলামিয়া জুনিয়র দাখিল মাদ্রাসা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে বাড়িতে পৌঁছে মা-বাবাসহ স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার পর দাদা-দাদির কবর জিয়ারত করেন।

নির্বাচনের জন্য ডিসেম্বর এবং জুন দুটি টাইমলাইন আছে। এই টাইমলাইনের ভেতরেই  নির্বাচন হয়ে যাবে বলে জানান তথ্য উপদেষ্টা। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬-এর জুনের মধ্যে নির্বাচন দেবেন। এটি হচ্ছে সংস্কার কতটুকু হবে, কীভাবে হবে, তার ওপর নির্ভর করে। এর ভেতরেই নির্বাচন আমরা সীমিত রাখি। এর বেশি উচ্চাশা সরকারের ভেতর থেকেও নেই। আর এটা নিয়ে ধোঁয়াশারও কিছু নেই যে, কবে নির্বাচন হবে। নির্বাচন দিবে কি, দিবে না। অবশ্যই নির্বাচন হবে। রাজনৈতিক দলগুলো প্রস্তুতি নিক।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন মাহফুজ আলমের বাবা ও ইছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুর রহমান বাচ্চু মোল্লা, জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) সংগঠক হামজা মাহবুব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লক্ষ্মীপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক আরমান হোসেন, মুখপাত্র বায়েজীদ হোসেন ও মুখ্য সংগঠক সাইফুল ইসলাম মুরাদ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ