ভোলায় প্রায় দুই কিলোমিটার সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করে রাখা হয়েছে। তিন মাসের অধিক সময় ধরে ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে সড়ক ফেলে রাখায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে কয়েক লাখ মানুষ। 
ভোলার ইলিশা বাসস্ট্যান্ড থেকে হাওলাদার মার্কেট পর্যন্ত সড়কের নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগ করায় মাঝপথে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে ওই  রাস্তার একাংশে যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। কিছু রাস্তা খুঁড়ে বালু ফেলে রাখায় মানুষের স্বাভাবিক হাঁটাচলাও বন্ধের পথে। খান্দাখন্দের কারণে বাকি অংশও এখন চলাচলের অযোগ্য। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ সড়কের সংস্কার ও বর্ধিতকরণের কাজ  শেষ করার কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে মাঝপথে থেমে রয়েছে উন্নয়নকাজ। ভোগান্তি লাঘবে দ্রুত সংস্কারকাজ শেষ করার 
দাবি এলাকাবাসীর।     
এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ভোলা শহরের ইলিশা বাসস্ট্যান্ড থেকে কলঘাট, জাঙ্গালিয়া হয়ে পশ্চিম ইলিশার হাওলাদার মার্কেট পর্যন্ত পৌনে ১০ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার ও বর্ধিতকরণের জন্য ২৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়। ১২ ফুট চওড়া রাস্তাটিকে ১৮ ফুট চওড়া করে ভারী যানবাহন চলাচলের উপযোগী করতে ২০২৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইএফটিসিএলের অনুকূলে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এক বছরের মধ্যে ওই  সংস্কারকাজ শেষ করার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে পর কাজ শুরু হয়। এর পর অনিয়মের অভিযোগে তিন মাস আগেই বন্ধ করে দেয় স্থানীয়রা। এতে ভোগান্তি কমার পরিবর্তে আরও বেড়ে যায়। 
সরেজমিন দেখা যায়, কার্যাদেশের শর্ত না মেনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইএফটিসিএল সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশার হাওলাদার মার্কেট থেকে 
পাঙ্গাশিয়া বাজার পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমটার পুরোনো রাস্তার পিচের কার্পেটিং এক্সক্যাভেটর দিয়ে তুলে ফেলে। পরে রোলার করে নতুন রাস্তার নির্মাণকাজ শুরু করে। স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওই কাজ ফেলে তার দক্ষিণ দিকে আরও এক কিলোমিটার রাস্তার মাটি খুঁড়ে বেজমেন্টে বালু ফেলে কাজ বন্ধ করে দেয়। ফলে ব্যস্ততম ওই রাস্তায় যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। বালুর কারণে এখন মানুষ হেঁটেও চলতে পারছে না ওই রাস্তায়। 
বাঘারহাট এলাকার ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম ও ছালাউদ্দিন জানান, শুরুতে কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজ করছিলেন না ঠিকাদার। এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে তারা কার্যাদেশ অনুযায়ী রাস্তা প্রশস্ত করা ও বেজমেন্টের কাজ শুরু করে। প্রায় এক কিলোমিটার পর্যন্ত পুরোনো রাস্তা খুঁড়ে বালু ফেলে এর পর রহস্যজনকভাবে কাজ বন্ধ করে চলে যায়। 
কলেজছাত্র আমির হোসেন জানান, আগের ভাঙা রাস্তায় হাঁটা গেলেও এখন বালুর মধ্য দিয়ে হাঁটাচলা করা যায় না। জরুরি প্রয়োজনে রোগী হাসপাতালে নিতে সমস্যা হচ্ছে। কৃষিপণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে গেছে। বর্ষার আগে রাস্তার কাজ শেষ না হলে ভোগান্তি আরও বেড়ে যাবে। 
রাস্তার কাজ বন্ধ রেখে মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলার প্রতিবাদে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভ ও ভোলা প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন এলাকাবাসী। তারা অবিলম্বে রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। 
এ বিষয়ে কথা বলতে কাজের সাইটে গেলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাউকে পাওয়া যায়নি। এ কারণে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। 
কবে নাগাদ কাজ শুরু হবে, বলতে পারেননি সদর উপজেলা প্রকৌশলী মো.

আবু আশরাফুল হাসান। তাঁর ভাষ্য, রাস্তার স্থায়িত্ব বাড়াতে 
কাজের ডিজাইন পরিবর্তন করে ঢাকায় প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে প্রকৌশলীরা এসে দেখে গেছেন। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা এলেই কাজ শুরু করা হবে। 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বিমসটেক সদস্যদের বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করার আহ্বান ঢাকার

বিমসটেকের সব সদস্য রাষ্ট্রকে বাণিজ্যসংক্রান্ত ছয়টি মৌলিক চুক্তির সময়মত চূড়ান্তকরণ নিশ্চিত করতে পূর্ণ সহযোগিতা প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব রাষ্ট্রদূত মো. জসিম উদ্দিন। 

ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের আগে বুধবার (২ এপ্রিল) থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠকের (এসওএম) ২৫তম অধিবেশন শুরু হয়েছে। সেখানে পররাষ্ট্রসচিব রাষ্ট্রদূত মো. জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠকে (এসওএম) অংশগ্রহণ করেছে।

পররাষ্ট্রসচিব ‘সমুদ্র অর্থনীতিসহ বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং উন্নয়ন’ খাতের অগ্রগতি সম্পর্কে একটি বক্তব্য দিয়েছেন।

তিনি বিমসটেক মুক্তবাণিজ্য অঞ্চলের কাঠামো চুক্তির বাণিজ্য ও শুল্ক বিষয়ে পারস্পরিক সহায়তা, বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতি এবং প্রক্রিয়া, বাণিজ্য সুবিধা, বিনিয়োগ এবং পরিষেবায় বাণিজ্য সম্পর্কিত ছয়টি উপাদান চুক্তি চূড়ান্তকরণ নিশ্চিতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে তাদের পূর্ণ সহযোগিতা প্রদানের আহ্বান জানান। 

তিনি জানান, এই অঞ্চলের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) বাস্তবায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আসন্ন উচ্চ-স্তরের বৈঠকের প্রস্তুতি হিসেবে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আগামীকাল অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ২০তম বিমসটেক মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের খসড়া এজেন্ডা   আলোচনা ও চূড়ান্ত করেন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠকে (এসওএম) ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের খসড়া এজেন্ডা ও ঘোষণা চূড়ান্ত করা হয়।

ঢাকায় বিমসটেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ২৬তম বৈঠকের আয়োজন করা হবে।

ঢাকা/হাসান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিমসটেক সদস্যদের বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করার আহ্বান ঢাকার