শেরপুর সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও শেরপুর সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক এজিএস মো. গোলাম জাকারিয়া (বাদল) হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার তিনজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় শেরপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

কারাগারে পাঠানো তিনজন হলেন সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের রঘুনাথপুর ভূইয়ারচর গ্রামের লালন মিয়া (২৮), সৌরভ মিয়া (২৬) ও খুনুয়া চরপাড়া গ্রামের মাজাহারুল ইসলাম মুরাদ (২৮)। তাঁরা বিএনপি নেতা গোলাম জাকারিয়া হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি।

শেরপুর সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো.

নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ অভিযান চালিয়ে শনিবার বিকেলে ফেনী জেলার দাগনভূঁঞা উপজেলার রাজপুর এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে। পরে রোববার সকালে তাঁদের শেরপুর সদর থানা হেফাজতে আনা হয়। ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে তাঁদের শেরপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালতের বিচারক তাঁদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গোলাম জাকারিয়া হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুবায়দুল আলম।

এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও দলীয় দ্বন্দ্বের জেরে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রতিপক্ষের হামলার সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম জাকারিয়া নিহত হন। তিনি উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের ভীমগঞ্জ গ্রামের মৃত আবদুল আজিজের ছেলে।

এ ঘটনায় নিহত গোলাম জাকারিয়ার স্ত্রী পপি বেগম বাদী হয়ে গত শুক্রবার রাতে সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় কামারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা নূরে আলম সিদ্দিকী, কামারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মো. লুৎফর রহমানসহ ২৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১০ থেকে ১৫ জনকে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সদর থ ন উপজ ল ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

শতবর্ষী রাস্তার ওপর সবজি চাষ আওয়ামী লীগ নেতার

চারঘাটের সরদহ ইউনিয়নের খোর্দগোবিন্দপুর মাঠপাড়ার গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে শত বছর ধরে গ্রামের মানুষ চলাচল করছেন। রাস্তাটি পাকা করতে দরপত্রও করা হয়েছে। সেই রাস্তার জমি নিজের দাবি করে পটোল রোপণ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সমজান আলী। এতে মানুষের চলাচল ও মাঠের ফসল পরিবহনে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয়রা প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এক যুগে কয়েক দফা কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় শতবর্ষী মাটির রাস্তাটির সংস্কার করা হয়। উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ থেকে রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য দরপত্র হয়েছে। এর মধ্যে পাশের জমির মালিক সমজান আলী শ্রমিক দিয়ে রাস্তা কেটে ফসলি জমি বানিয়েছেন। তিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হলেও গত পাঁচ আগস্টের পর থেকে বিএনপি-জামায়াতের লোকজনের সঙ্গে চলাফেরা করছেন।
সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, দৈর্ঘ্যে ১২০ ফুট ও প্রস্থে ৪ ফুট অংশ কেটে নিজের জমির সঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছেন সমজান আলী। সেখানে পটোল রোপণ করা হয়েছে। ১৩ ফুট প্রস্থের সড়ক থেকে আরও ৪ ফুট কেটে নেওয়া হবে বলে স্থানীয়দের জানিয়েছেন তিনি। এ অবস্থায় প্রকৌশল বিভাগের রাস্তা পাকাকরণ কাজ অনিশ্চয়তায় পড়েছে। স্থানীয়রা বাধা দিলেও রাস্তা কাটা বন্ধ না করে উল্টো হুমকি দেন সমজান আলী।
স্থানীয় ষাটোর্ধ্ব রেজাউল করিম বলেন, রাস্তাটি পাকাকরণের দরপত্র হয়েছে। এখন সেই রাস্তার বেশির ভাগ অংশ নিজের দাবি করে কেটে ফেলেছেন আওয়ামী লীগ নেতা সমজান আলী।
নাইমুর রহমান বলেন, বাবা-দাদা সবাই এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করেছেন। এখন শত শত মানুষের চলাচল। মাঠপাড়ার ফসল ভ্যান, ট্রলি ও মিনি ট্রাকে করে এই রাস্তা দিয়ে বাজারে নেওয়া হয়। কাউকে কিছু না জানিয়ে রাস্তাটি কেটে ফেলা হলো। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছি।
সমজান আলী বলেন, রাস্তার বেশির ভাগ অংশই আমার জমিতে। এ জন্য কিছু অংশ কেটে নিয়েছি। শুধু আমি রাস্তায় জমি দেব– তা হবে না। অন্যদেরও দিতে হবে। জমির কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি বলেন, কাগজপত্র এখন কাছে নেই। তবে স্থানীয় আমিন সুবল চন্দ্র ছয় মাসে দুই দফা জমি পরিমাপ করেছে। মাপ অনুযায়ী রাস্তার বেশির ভাগ অংশ আমার জমিতে পড়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
স্থানীয় আমিন বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবল চন্দ্র বলেন, জমিটি দেড় থেকে দুই বছর আগে পরিমাপ করেছি। কিছু অংশ রাস্তার ভেতরে ছিল। রাস্তাটি এখন সরকারি সম্পদ। তাই সমজান আলী জমি নিতে পারবে না– এ তথ্য তাঁকে জানানো হয়েছিল। 
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ হোসেন বলেন, কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের জন্য শুনানির নোটিশ করা হয়েছে। কাগজপত্র নিয়ে সমজান আলীকে আসতে বলা হয়েছে। তবে কোনো জমি ব্যক্তির সম্পত্তি হলেও ২০ বছর সেখানে মানুষজন হাঁটলেই তা সরকারি হয়ে যাবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ