বরিশালে যুবদল নেতাকে কুপিয়ে হত্যা, অভিযুক্ত ব্যক্তির বাড়িতে স্থানীয়দের আগুন
Published: 2nd, March 2025 GMT
বরিশাল নগরের কাউনিয়া হাউজিং এলাকায় জমি বিক্রিসংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে এক যুবদল নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীদের ধারালো অস্ত্রের কোপে আরও একজন আহত হয়েছেন। রোববার রাত আটটার দিকে কাউনিয়া শের–ই–বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পেছনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মো. সুরুজ গাজী (৩৫) কাউনিয়া হাউজিং এলাকার কাঞ্চন গাজীর ছেলে। তিনি বরিশাল সিটি করপোরেশেনর ৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। আহত নয়ন গাজী কাউনিয়া হাউজিং এলাকার তসলিম গাজীর ছেলে।
কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল নিশাত হত্যাকাণ্ডের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, নিহত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাউজিং এলাকার বাসিন্দা ও স্থানীয় ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মো.
এ সময় সুরুজকে রক্ষায় নয়ন হাওলাদার নামের অপর এক যুবক এগিয়ে গেলে তাঁকেও কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন দুজনকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন। সেখানে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক সুরুজকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত নয়ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এদিকে এ ঘটনায় স্থানীয় জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে অভিযুক্ত শাহিনের বাড়িতে আগুন দেন। রাত ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নেভানোর চেষ্টা চালাচ্ছিলেন বলে কাউনিয়া থানা–পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
কাউনিয়া থানার ওসি নাজমুল নিশাত বলেন, তুচ্ছ ঘটনার জেরে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে কুপিয়েছে। এতে একজন নিহত ও আরেকজন আহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তির পরিবারকে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। যাঁরা জড়িত, তাঁদের সুনির্দিষ্ট নাম পেলে গ্রেপ্তার করা হবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদের নামাজ শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, বিএনপি-আ.লীগ সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ২
নাটোরের লালপুর উপজেলায় ঈদের নামাজ শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনার জেরে বিএনপির নেতাকর্মীর ওপরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা ও গুলিবর্ষণ করে। এতে সুজাত আলী ও সাব্বির নামে দুইজিন গুলিবিদ্ধ হন। এর মধ্যে একজন বিএনপিকর্মী বলে জানা গেছে। গুলিবিদ্ধ দু’জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ঈদগাহে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৯ জনকে আটক করে করেছে পুলিশ।
প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানান, ঈদের নামাজ শেষে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় বিএনপি ও স্থানীয়দের ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণ করেনে তারা। এতে সুজাত আলী ও সাব্বির (২৪) নামের দুইজন গুলিবিদ্ধ হন। লুকমান হোসেন নামের আরও একজন আহত হন। আহত সাব্বির হোসেনকে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। গুলিবিদ্ধ দুজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার প্রতিবাদে লালপুর ইউনিয়ন বিএনপি এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে বক্তব্য দেন সাবেক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আশরাফুল ইসলাম লুলু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবি, বিএনপি নেতা এটিএম জাহিদুল আলম ডলার ও জিয়া। তারা অভিযোগ করেন, ফ্যাসিবাদী শক্তি পরিকল্পিতভাবে ঈদের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে এবং প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে, যা জনমনে প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে।
বিএনপি নেতারা হুঁশিয়ারি দেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
নাটোরের পুলিশ সুপার (এসপি) আমজাদ হোসাইন বলেন, দুই যুবক ঈদ মাঠে জয় বাংলা স্লোগান দিয়েছে এ রকমটা জানতে পেরেছি। মারামারিতে সম্পৃক্ত ছিল এরকম ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়রা বলছে। তবে এতে যিনি ভুক্তভোগী হয়েছেন, তাকে এখনো আমরা পাইনি। এটা নিয়েও যাচাই-বাছাই করছি।
এসপি আমজাদ হোসাইন আরও বলেন, ঘটনাস্থলে ডিবি টিম, পুলিশ, যৌথবাহিনীর সদস্যরা রয়েছে সেখান থেকে রিপোর্ট আসলে পুরো ঘটনাটি জানতে পারব। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।