চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় জাল টাকার নোটসহ শাহ আলম (৩৫) নামের এক যুবক গ্রেপ্তার হয়েছেন। আজ রোববার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে উপজেলার পদুয়া বাজারে সেনাবাহিনী ও লোহাগাড়া থানা-পুলিশের যৌথ অভিযানে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার শাহ আলম একই উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব হাজারবিঘা এলাকার ফেরদৌস আহমদের ছেলে। গ্রেপ্তারের পর তাঁর কাছ থেকে ৫০০ টাকার ১০টি ও ১ হাজার টাকার ৬টি জাল নোট উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ জানায়, শাহ আলম ও তাঁর স্ত্রী জান্নাত আরা মিলে জাল নোটের ব্যবসা করে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেন। ২০২৩ সালেও তাঁরা দুজন জাল নোটসহ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। আজ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে শাহ আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার শাহ আলমের নামে থানায় নতুন করে আরও একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় তাঁকে আগামীকাল সোমবার সকালে চট্টগ্রাম আদালতে পাঠানো হবে।

লোহাগাড়া থানার ওসি আরিফুর রহমান জানান, জাল নোট ব্যবসায়ীদের একটি চক্র আছে। শাহ আলম ও তাঁর স্ত্রী ওই চক্রের সদস্য। ২০২৩ সালেও তাঁরা গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাঁরা এখনো ওই চক্রের সঙ্গে আছেন এবং জাল টাকা সংগ্রহ করে বাজারে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। কয়েক মাস আগেও শাহ আলমের স্ত্রী জান্নাত আরা জাল টাকাসহ জনতার হাতে আটক হন। তখন পর্যাপ্ত প্রমাণের অভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। এখন জান্নাত আরার সন্ধান করছে পুলিশ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ হ আলম ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

ফিনটেক ও ই-কমার্স ইকোসিস্টেম: বাংলাদেশের নতুন বাণিজ্যবিপ্লব

পর্ব–৩

একসময় যেখানে নগদ লেনদেনই ছিল প্রধান মাধ্যম, আজ সেখানে মোবাইল ফোনে ক্লিক করলেই কেনাকাটা, লেনদেন—সব সম্ভব। এই রূপান্তরের মূলে রয়েছে ফিনটেক এবং ই-কমার্সের অদ্ভুত এক সমন্বয়। বাংলাদেশেও এই নতুন বাণিজ্যবিপ্লবের ঢেউ লেগেছে। কিন্তু এই সম্ভাবনাকে কতটা কাজে লাগাতে পেরেছি আমরা?

বাংলাদেশে ফিনটেক ও ই-কমার্সের বর্তমান চিত্র

বাংলাদেশে ই-কমার্স লেনদেনের ৮০ শতাংশের বেশি হয় মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ব্যবহার করে (সূত্র: বাংলাদেশ ব্যাংক, ২০২৩)। বিকাশ, নগদ, রকেট, উপায়—এ চারটি মাধ্যম এখন গ্রাহকদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয়। পাশাপাশি এসএসএলকমার্জ, সূর্যপে, আমারপের মতো গেটওয়েগুলো এসএমই থেকে করপোরেট পর্যন্ত অনলাইন লেনদেনের একটি শক্ত ভিত্তি তৈরি করেছে।

কোভিড-১৯ ও ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার

কোভিড-১৯ মহামারির সময় অনলাইন কেনাকাটার পাশাপাশি ডিজিটাল লেনদেনের প্রবৃদ্ধি হয় প্রায় ৪৫ শতাংশ (সূত্র: লাইটক্যাল পার্টনারস ২০২৩)। বাজারে গিয়ে নগদে কেনাকাটার পরিবর্তে ঘরে বসে মোবাইলে লেনদেন করার প্রবণতা বেড়ে যায়। এই পরিবর্তন ই-কমার্স খাতকে দ্রুত প্রসারিত করেছে এবং একই সঙ্গে ফিনটেক সেবা গ্রহণের হার বাড়িয়েছে।

ফিনটেকের মাধ্যমে ই-কমার্সের সুবিধা

২৪/৭ লেনদেন সুবিধা।

নগদ ব্যবহারের ঝামেলা ছাড়া কেনাকাটা।

সুরক্ষিত পেমেন্ট সিস্টেম।

দ্রুত রিফান্ড ও ক্যাশব্যাক অফার।

গ্রামীণ অঞ্চলেও ডিজিটাল ব্যবসার সুযোগ বৃদ্ধি।

মূল চ্যালেঞ্জসমূহ

আন্তর্জাতিক লেনদেন সীমাবদ্ধতা: বাংলাদেশে পেপ্যাল, স্ট্রাইপের অনুপস্থিতি এখনো বড় বাধা।

ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ফিন্যান্সিং চ্যালেঞ্জ: অনেক এসএমই এখনো সহজ শর্তে ঋণসুবিধা পায় না।

সাইবার নিরাপত্তাঝুঁকি: অনলাইন লেনদেনে হ্যাকিং ও প্রতারণার ঝুঁকি রয়েছে।

ইন্টারঅপারেবিলিটি ঘাটতি: এক মাধ্যম থেকে আরেক মাধ্যমে লেনদেনে এখনো জটিলতা।

বিশ্ব অভিজ্ঞতা: শেখার মতো দৃষ্টান্ত

চীন: আলিপে ও উইচ্যাট পের মাধ্যমে পুরো ই-কমার্স ও সামাজিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ।

ভারত: ইপিআইয়ের (ইউনিফায়েড পেমেন্টস ইন্টারফেস) মাধ্যমে প্রতিদিন ৩০ কোটির বেশি লেনদেন।

ইন্দোনেশিয়া: গোজেক ও টোকোপিডিয়ার ডিজিটাল ওয়ালেট ইকোসিস্টেম।

বাংলাদেশের সম্ভাবনা

বাংলাদেশে বর্তমানে ১৮ কোটির বেশি মোবাইল ব্যবহারকারী ও ১২ কোটির বেশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে (সূত্র: বিটিআরসি, ২০২৪)। এই বিশালসংখ্যক ব্যবহারকারীই বাংলাদেশের ফিনটেক, ই-কমার্স ইকোসিস্টেমের মূল শক্তি। ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশের ই-কমার্স বাজার দেড় হাজার কোটি ডলারে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে, যদি ডিজিটাল লেনদেন ও ই-কমার্সের সংযোগ আরও শক্তিশালী হয়।

ভবিষ্যৎ করণীয়

ওপেন ব্যাংকিং চালু করে এসএমই উদ্যোক্তাদের সহজতর ঋণসুবিধা নিশ্চিত করা।

ফিনটেক স্টার্টআপদের জন্য ফিনটেক স্যান্ডবক্স (পরীক্ষাগার) তৈরি করা।

ডিজিটাল পরিচিতি ও ই-কেওয়াইসি ব্যবস্থার বিস্তার ঘটানো।

মোবাইল লেনদেন ব্যবস্থার মধ্যে ইন্টারঅপারেবিলিটি বাড়ানো।

আন্তর্জাতিক গেটওয়ে ও ক্রস-বর্ডার ট্রান্সফার সহজীকরণ।

ফিনটেক ও ই-কমার্স সংযোগের উদ্ভাবনী দিক

বাই নাউ পে লেটার (বিএনপিএল) মডেল চালু করা।

ইনভয়েসভিত্তিক ক্ষুদ্রঋণ সুবিধা বৃদ্ধি।

গ্রাহকভিত্তিক ডিজিটাল ক্রেডিট স্কোরিং চালু করা।

ওয়ালেটভিত্তিক লয়্যালটি ও টাকা ফেরত কর্মসূচির সম্প্রসারণ।

বাংলাদেশের ই-কমার্স ও ফিনটেক এখন একে অপরের পরিপূরক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ দুই খাতের সমন্বয় কেবল ব্যবসার প্রসার নয়, বরং পুরো দেশের অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার হাতিয়ার হতে পারে।

(চলবে)

ড. মোহাম্মদ নূরুজ্জামান: ড্যাফোডিল ফ্যামিলির গ্রুপ সিইও ও গ্লোবাল এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশের কোষাধ্যক্ষ

আরও পড়ুনবাংলাদেশের ই-কমার্স: কোথায় আছি, কোথায় যেতে চাই২২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পেহেলগাম হামলা: পাঁচ সন্দেহভাজনের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিল ভারত
  • পহেলগাম হামলা: পাঁচ সন্দেহভাজনের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিল ভারত
  • গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত প্রাণ হারালেন ২১২ ফিলিস্তিনি সাংবাদিক
  • সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নিয়ে রেকর্ড গড়লেন পবন
  • বন্দরে অটোচালক মাসুদ হত্যা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বাদীকে হুমকি
  • ২৭ বাংলাদেশির কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় ঘটনার মূলহোতা গ্রেপ্তার
  • ক্রস বর্ডার ই-কমার্স ও বাংলাদেশের সম্ভাবনা
  • হামাসকে ভাষায় প্রকাশযোগ্য নয়, এমন গালি দিলেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট আব্বাস
  • ফিনটেক ও ই-কমার্স ইকোসিস্টেম: বাংলাদেশের নতুন বাণিজ্যবিপ্লব
  • মুনাফা কমলেও রেকর্ড লভ্যাংশের ঘোষণা বাটা শুর