টিকিট বুকিং দিয়ে প্রতারণার শিকার ট্রাভেল এজেন্ট
Published: 2nd, March 2025 GMT
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এক কর্মীর কাছে টিকিট বুকিং দিয়ে এক ট্রাভেল এজেন্ট প্রতারণার শিকার হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সাদ্দাম হোসেন নামে বিমানের এক গ্রাউন্ড সার্ভিস অ্যাসিস্ট্যান্টের কাছে ৫১ জন ওমরাহ হজযাত্রীর জন্য ৭০ লাখ টাকা দিয়েছেন বলে দাবি ট্রাভেল এজেন্টের মালিক আসাদুল হকের। টিকিট বুকিংয়ের জন্য কেন প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তে এক কর্মীকে টাকা দিয়েছেন– এ প্রশ্নের তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
এদিকে প্রতারণার ঘটনায় ঝামেলা এড়াতে রাজধানীর খিলক্ষেত থানা পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পরে তিনি একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। দুই মাসেও এ জিডির তদন্তে কোনো অগ্রগতি নেই বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর।
খিলক্ষেত থানার এসআই তদন্ত কর্মকর্তা ফজলে রাব্বী সমকালকে বলেন, প্রতারণার ঘটনায় থানায় মামলা হলে ঝামেলা হয়। এ কারণে মামলা না নিয়ে জিডি করার পরামর্শ দেওয়া হয়। জিডি তদন্তে এখন পর্যন্ত জড়িত কাউকে শনাক্ত করা যায়নি।
শনিবার ভুক্তভোগী আসাদুল হক সমকালকে জানান, গত বছরের শেষ দিকে এক ট্রাভেল এজেন্সির কর্মী বাদল মিয়ার মাধ্যমে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের গ্রাউন্ড সার্ভিস অ্যাসিস্ট্যান্ট সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে পরিচয় হয়। আমি তাঁকে ৫১ জন ওমরাহ হজযাত্রীর জন্য টিকিট বুকিং বাবদ ডিসেম্বর মাসে কয়েকবারে ৭০ লাখ টাকা দিই। সর্বশেষ গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর ১৫ হজযাত্রীর টিকিট বুকিংয়ের জন্য টাকা দিই। পরদিন ফ্লাইটের সময় হাজিরা বিমানবন্দরে গিয়ে জানতে পারেন টিকিটগুলো ভুয়া। এ ঘটনায় খিলক্ষেত থানায় মামলা না নিয়ে জিডি করতে বলে পুলিশ। সেই জিডি তদন্তেও কোনো অগ্রগতি নেই।
জানতে চাইলে বিমানকর্মী সাদ্দাম হোসেন বলেন, বিমানের টিকিট বুকিং বিষয়ে একটি প্রতারক চক্র আমার ছবি, নাম ও পদবি ব্যবহার করেছে। এ বিষয়ে আমি আদালতে মামলা করেছি। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছে। এ ছাড়া টিকিট প্রতারণার বিষয়টি লিখিতভাবে বিমান কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নদীতে ভেসে উঠল আরেকজনের লাশ, নিহত বেড়ে ৫
শরীয়তপুরে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে নদীতে পড়ে নিখোঁজ আরো একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (৩ মার্চ) বেলা ১২টার দিকে সদর উপজেলার চিতলিয়া ইউনিয়নের কাশীপুর এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। তবে, তার পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে পাঁচ জনে দাঁড়াল।
স্থানীয়দের অভিযোগ, শুক্রবার রাতে মাদারীপুরের রাজারচর এলাকায় বাল্কহেডে ডাকাতির চেষ্টা করেন সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র। এ সময় এলাকাবাসী তাদের ধাওয়া দেন। ডাকাতদল পালিয়ে শরীয়তপুরের তেতুলিয়া এলাকায় এলে স্থানীয়রা বাল্কহেড দিয়ে ডাকাতদের স্পিড বোটের গতিপথ রোধ করার চেষ্টা করেন। এ সময় ডাকাতরা হাতবোমা ও গুলি ছুঁড়লে বেশ কয়েকজন আহত হন। একপর্যায়ে ডাকাতেরা স্পিড বোট ফেলে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় ক্ষুব্ধ জনতা তাদের গণপিটুনি দেয়। আর ধাওয়া দিয়ে সাত জনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ তাদের উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক দুই জনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত বাকি পাঁচজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো একজনের মৃত্যু হয়। তবে, স্পিড বোটে ঠিক কতজন ছিল সেটা জানা যায়নি।
এদিকে, এ ঘটনার পরে রবিবার বিকালে শরীয়তপুর জেলা লাগোয়া ও মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের বিদ্যাবাগীশ এলাকার কীর্তিনাশা নদী থেকে অজ্ঞাত একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সোমবার ভেসে উঠে আরো একজনের মরদেহ। তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকায় পুলিশ ধারণা করছে, নিহতরা ডাকাত চক্রের সদস্য। সেদিন গণপিটুনিতে নদীতে পড়ে যান তারা। দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ডাকাতির চেষ্টা ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় পালং মডেল থানায় পৃথক মামলা হয়েছে। গত শনিবার রাতে পালং থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে মামলাগুলো করেন। এতে গণপিটুনিতে আহত পাঁচ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৮-১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- মুন্সীগঞ্জের রিপন (৪০), শরীয়তপুরের আনোয়ার দেওয়ান (৫০), নড়িয়ার সাঈদ (২৫), মাদারীপুরের সজীব (৩০) ও শরীয়তপুরের রাকিব গাজী (৩০)। তাদের ঢাকা মেডিকেল থেকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
শরীয়তপুর জেলা পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘‘এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।’’
ঢাকা/আকাশ/রাজীব