কুমিল্লার দেবীদ্বার পৌর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ সরকারকে (৪৫) আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। আজ রোববার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে যুবলীগের নেতা ওয়াহেদ দেবীদ্বার পৌরসভায় ঠিকাদারি কাজের বিল আনতে গেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে তাঁকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়।

যুবলীগের নেতা আবদুল ওয়াহেদ সরকার দেবীদ্বার পৌরসভার দেবীদ্বার গ্রামের পুরাতন বাজার এলাকার বাসিন্দা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির নেতা–কর্মীরা পুলিশের কাছে দাবি করেন, ওয়াহেদ গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে দেবীদ্বারে নিহত আবদুর রাজ্জাক ওরফে রুবেল হত্যা মামলার আসামি। তবে থানায় হস্তান্তরের পর পুলিশ যাচাই করে দেখে, যুবলীগের নেতা ওয়াহেদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।

আবদুর রাজ্জাক হত্যা মামলার বাদী এবং দেবীদ্বার পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো.

আবুল কাসেম সরকার বলেন, আবদুর রাজ্জাক হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি না হলেও ওয়াহেদ সরকার বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী। তিনি পেশায় একজন ঠিকাদার ছিলেন। ঠিকাদারি কাজের বিল আনতে গেলে তাঁদের কিছু সমর্থক তাঁকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে বলে শুনেছেন।

রাত সাড়ে আটটার দিকে দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামসুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির কিছু লোকজন ওয়াহেদ সরকারকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। যে হত্যা মামলার কথা বলা হচ্ছে, তিনি ওই মামলার আসামি নন। তবে ওয়াহেদ সরকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হওয়া সহিংসতার মামলার সন্দিগ্ধ আসামি। তাঁকে সহিংসতার একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোমবার কুমিল্লার আদালতে পাঠানো হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য বল গ র ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

স্বামী-স্ত্রীর গতিরোধ করে যুবক বললেন, ‘বিশ্বাসের মেয়েকে নিয়ে পালাচ্ছিস কোথায়? দাঁড়া সমন্বয়ক আসছে’

কুড়িগ্রামের রাজীবপুরে শ্লীলতাহানি, অপহরণচেষ্টা ও মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টার মামলায় মেহেদী হাসান নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলার বটতলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

এর আগে, সকালে রাজীবপুর থানায় চারজনের নাম উল্লেখসহ আরও ৪-৫ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে মামলা করেন ভুক্তভোগী নারীর বাবা আব্দুল লতিফ বিশ্বাস। 

গ্রেপ্তার মেহেদী হাসান রাজীবপুর সদর ইউনিয়নের মরিচাকান্দি এলাকার আলীর ছেলে। 

মামলার বাদী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস অভিযোগ করে বলেন, ‘মেয়ে, মেয়ের স্বামী, ননদ ও দেবর দাওয়াত খেয়ে সন্ধ্যার পর বাড়ি ফিরছিল। তারা উপজেলার বটতলা এলাকা থেকে তাদের পিছু নেয় মেহেদী হাসান, নিশাত, মো. আশাসহ আরও কয়েকজন যুবক। পরে মরিচাকান্দি এলাকায় একটি সেতুর ওপর তাদের বহনকারী ইজিবাইকটি গতিরোধ করে তারা। এ সময় মেহেদী হাসান মেয়ে জামাই শিহাবকে বলেন, বিশ্বাসের মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছ কোথায়? তখন শিহাব উত্তরে বলেন, আমি আমার স্ত্রীকে পালিয়ে নিয়ে যাব কেন? প্রয়োজনে আমার শ্বশুরের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে নিশ্চিত হন। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে মেহেদী হাসান, রঞ্জু মিয়া নামের আরেকজনকে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে দলবল নিয়ে ঘটনাস্থলে আসতে বলে। এ সময় তাঁর জামাই শিহাব অভিযুক্তদের কাছে জানতে চান, কাকে ডাকছেন? তখন মেহেদী বলেন, দাঁড়া আমার বড় ভাই সমন্বয়ক, সে আসছে। একপর্যায়ে আমাদের আত্মীয়-স্বজনদের বহনকারী আরেকটি ইজিবাইক ঘটনাস্থলে পৌঁছালে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।’

ভুক্তভোগী শিহাব বলেন, ‘মরিচাকান্দি এলাকায় সেতুর ওপর গতিরোধ করে বেশ কয়েকজন যুবক। এ সময় তারা নিজেদের ‘সমন্বয়ক’ পরিচয় দিয়ে আমার স্ত্রী ও চাচাতো বোনের শ্লীলতাহানি করে এবং অপহরণের চেষ্টা করে। তারা মুক্তিপণও চায়। একপর্যায়ে তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। পরে আমাদের আরও একটি ইজিবাইক সেখানে এলে তারা পালিয়ে যায়।’

রাজীবপুর থানার দায়িত্বরত এসআই আতিকুর জামান বলেন, ‘অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামি মেহেদী হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তাকে কুড়িগ্রাম আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়েই চলেন তারা (মামলার আসামিরা)।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ