চট্টগ্রাম নগরে অভিযানে আসা পুলিশ দেখে এক আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছেন স্বজনেরা। নিহতের নাম লাল মিয়া (৬০)। তিনি নগরের খুলশী থানা ডেবারপাড় সি ইউনিট আওয়ামী লীগের সহকারী আপ্যায়ন সম্পাদক ছিলেন। আজ রোববার বিকেলে নগরের খুলশীর কুসুমবাগ এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

উত্তর লালখান বাজার দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও খুলশী থানা বিএনপির সদস্য ফারুক শিকদার প্রথম আলোকে বলেন, আজ বিকেলে মোটরসাইকেলে খুলশী থানার এসআই রবিউল আলম লাল মিয়ার মুদিদোকানের সামনে নামেন। তখন তাঁরা লাল মিয়াকে ১০ মিনিট সময় দিয়ে দোকান থেকে বের হতে বলেন। একপর্যায়ে দোকানের ভেতর পড়ে যান লাল মিয়া। তখন দোকানে লাল মিয়ার ছেলে রাকিবুল হাসানও ছিলেন। পরে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। লাল মিয়া দোকানের ভেতর পড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এসআই রবিউল মোটরসাইকেল নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যান।

ফারুক শিকদার আরও বলেন, এসআই রবিউল প্রায় এলাকার নিরীহ লোকজনকে হয়রানি করে আসছেন। লাল মিয়ার মৃত্যুর বিষয়ে মামলা কিংবা কোনো অভিযোগ করা হবে কি না প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, লাল মিয়ার পরিবার এলাকার সাধারণ একটি পরিবার। তারা মামলা করবে কি না, সেটা এখনো জানা যায়নি।

জানতে চাইলে খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, এসআই রবিউল অস্ত্র মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা এক আসামিকে গ্রেপ্তার করতে গিয়েছিলেন। লাল মিয়ার দোকানের পাশেই ওই আসামির বাসা। এ কারণে আসামি সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। কোনো ভয়ভীতি দেখাননি। এলাকার লোকজনকে হয়রানি সম্পর্কে ওসি বলেন, আসামি ছাড়া নিরীহ কাউকে আটক করেন না এসআই রবিউল। আটক আসামিকে ছাড়াতে না পারায় ক্ষুব্ধ লোকজন অপপ্রচার চালাচ্ছেন। এসআই রবিউলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, সেটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন বলে জানান ওসি মজিবুর রহমান।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

‘ভুয়া পুলিশ’ বলে এসআইকে মারধর, ওয়াকিটকি ছিনতাই

চট্টগ্রামে মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় এক পুলিশ কর্মকর্তাকে পরিকল্পিতভাবে মব তৈরি করে মারধর এবং মুঠোফোন ও ওয়াকিটকি ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে তাফসীর ইমাম ও মো. সাইমন নামের দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে নগরের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের চরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত ১১টার দিকে পতেঙ্গা থানার টহল টিমের দায়িত্বে থাকা এসআই ইউসুফ আলীর চোখে পড়ে চরপাড়াঘাট এলাকায় কিছু স্থানীয় যুবক মাদক (গাঁজা) সেবন করছেন। এসআই ইউসুফ আলী সেখানে গিয়ে যুবকদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ওই যুবকেরা ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান। এসআই ইউসুফ আলী তাঁদের সতর্ক করে ছেড়ে দেন।

আধা ঘণ্টা পর বেশ কিছু লোককে সঙ্গে নিয়ে পতেঙ্গা সৈকতে ফিরে আসেন ভুল স্বীকার করা দুই যুবক। এই সময় এসআই ইউসুফ আলী তাঁর সঙ্গে থাকা টহল গাড়ির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। যুবকেরা এসে তাঁকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি তো ভুয়া পুলিশ। আপনার আইডি কার্ড কই?’ এরপর মুহূর্তের মধ্যেই এসআই ইউসুফ আলীর ওপর আক্রমণ শুরু করেন। এলোপাতাড়ি মারধর করা হয় তাঁকে। ইউসুফ আলীর কাছ থেকে ওয়াকিটকি সেট, মুঠোফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পতেঙ্গা থানার পুলিশ এসআই ইউসুফ আলীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। রাতে অভিযান চালিয়ে জড়িত দুই যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে পতেঙ্গা থানায় মামলা হয়েছে।

পতেঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফরিদুল আলম আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার দুজনের কাছ থেকে এসআই ইউসুফ আলীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া ওয়াকিটকি, মুঠোফোন ও মানিব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত একটি চাকু ও মোটরসাইকেল পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তার আসামিদের নির্দিষ্ট কোনো পেশা নেই। তারা বখাটে প্রকৃতির।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মব তৈরি করে এসআইকে হেনস্থা, গ্রেপ্তার আরও ১০
  • পতেঙ্গা সৈকতে পুলিশের এস আইয়ের উপর হামলা, গ্রেপ্তার ১০ 
  • শরীয়তপুরে সকালেও ডাকাত সন্দেহে আরেকজনকে পিটুনি
  • চট্টগ্রামে এসআইর ওপর হামলা, দুই ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার
  • ‘ভুয়া পুলিশ’ বলে এসআইকে মারধর, ওয়াকিটকি ছিনতাই
  • উত্তরখানে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু