কীর্তিনাশায় ভেসে উঠল পিটুনিতে নিহত আরেক ডাকাতের লাশ
Published: 2nd, March 2025 GMT
মাদারীপুরের কীর্তিনাশা নদীতে বাল্কহেডে ডাকাতি করতে এসে স্থানীয় বাসিন্দাদের পিটুনিতে নদীতে পড়ে নিখোঁজ হওয়া এক ডাকাতের লাশ দুই দিন পর নদীতে ভেসে উঠেছে। আজ রোববার বিকেলে সদর উপজেলার রাজারচর এলাকার নদী থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে তাঁর পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
গত শুক্রবার রাতে মাদারীপুর-শরীয়তপুর দুই জেলার সীমান্তবর্তী খোয়াজপুর-টেকেরহাট বন্দর এলাকায় ডাকাতির খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন নদীতে নেমে ধাওয়া দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পালানোর সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের পিটুনির শিকার হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় ডাকাত দলের ছোড়া গুলিতে মাদারীপুরের পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় ট্রলার নিয়ে ধাওয়া দিলে স্পিডবোট নিয়ে ডাকাতেরা দ্রুত শরীয়তপুরের দিকে পালিয়ে যায়। পরে তিন ডাকাতের লাশ শরীয়তপুর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের রাজারচর এলাকার স্থানীয় লোকজন কীর্তিনাশা নদীতে হাত–পা ধুতে গিয়ে একটি লাশ ভাসতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে। পরে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়।
রাজারচর এলাকার বাসিন্দা রুবেল হাওলাদার বলেন, ‘আমি নদীতে হাত-পা ধুতে গেলে দেখি একটি লাশ ভাসছে। আমি লোকজনকে ডাক দিলে পরে তারা এসে থানায় খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। লাশটির শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সবার ধারণা, লাশটি একজন ডাকাতের। কারণ, ওই দিন স্থানীয় লোকজন ডাকাতদের পিটুনি দিয়ে নদীতে ফেলে দেয়। তাদের মধ্যে একজনের এই লাশ।’
আহতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদের নামাজ শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, বিএনপি-আ.লীগ সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ২
নাটোরের লালপুর উপজেলায় ঈদের নামাজ শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনার জেরে বিএনপির নেতাকর্মীর ওপরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা ও গুলিবর্ষণ করে। এতে সুজাত আলী ও সাব্বির নামে দুইজিন গুলিবিদ্ধ হন। এর মধ্যে একজন বিএনপিকর্মী বলে জানা গেছে। গুলিবিদ্ধ দু’জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ঈদগাহে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৯ জনকে আটক করে করেছে পুলিশ।
প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানান, ঈদের নামাজ শেষে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় বিএনপি ও স্থানীয়দের ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণ করেনে তারা। এতে সুজাত আলী ও সাব্বির (২৪) নামের দুইজন গুলিবিদ্ধ হন। লুকমান হোসেন নামের আরও একজন আহত হন। আহত সাব্বির হোসেনকে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। গুলিবিদ্ধ দুজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার প্রতিবাদে লালপুর ইউনিয়ন বিএনপি এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে বক্তব্য দেন সাবেক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আশরাফুল ইসলাম লুলু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবি, বিএনপি নেতা এটিএম জাহিদুল আলম ডলার ও জিয়া। তারা অভিযোগ করেন, ফ্যাসিবাদী শক্তি পরিকল্পিতভাবে ঈদের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে এবং প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে, যা জনমনে প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে।
বিএনপি নেতারা হুঁশিয়ারি দেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
নাটোরের পুলিশ সুপার (এসপি) আমজাদ হোসাইন বলেন, দুই যুবক ঈদ মাঠে জয় বাংলা স্লোগান দিয়েছে এ রকমটা জানতে পেরেছি। মারামারিতে সম্পৃক্ত ছিল এরকম ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়রা বলছে। তবে এতে যিনি ভুক্তভোগী হয়েছেন, তাকে এখনো আমরা পাইনি। এটা নিয়েও যাচাই-বাছাই করছি।
এসপি আমজাদ হোসাইন আরও বলেন, ঘটনাস্থলে ডিবি টিম, পুলিশ, যৌথবাহিনীর সদস্যরা রয়েছে সেখান থেকে রিপোর্ট আসলে পুরো ঘটনাটি জানতে পারব। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।