জয়-পরাজয়ের যাত্রাই জীবন: জাহিদা ফিজ্জা কবির
Published: 2nd, March 2025 GMT
‘জয়-পরাজয়ের যাত্রাই জীবন, বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে সামনে এগিয়ে চলাই একমাত্র সমাধান, একমাত্র শান্তি’- কথাগুলো দেশের শীর্ষস্থানীয় অলাভজনক প্রতিষ্ঠান সাজিদা ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী জাহিদা ফিজ্জা কবিরের। সাজিদা ফাউন্ডেশনের সূচনাকাল থেকে শক্ত হাতে প্রতিষ্ঠানটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন তিনি। নিজেকে তিনি ভাবেন এমন একজন মানুষ, যার কাছে রয়েছে সবার ঠাঁই।
'সবার জন্য উদারতা এবং সহমর্মিতা রয়েছে আমার মধ্যে। কিন্তু একই সাথে, সবসময়ে ডুবে রয়েছি কাজে, ব্যস্ততায়। কাউকে দেওয়ার মতো খুব বেশি সময় হয়ে ওঠে না। যেন ঢেউয়ের মতো, কখনোই বিশ্রাম নেই, সবসময়ে নিবিষ্ট, নিমজ্জিত রয়েছি নিজের দায়িত্বে', বলেন জাহিদা ফিজ্জা কবির।
মাত্র ২ জন মানুষ নিয়ে শুরু করে এখন ৬ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে সাজিদা ফাউন্ডেশনে, আর এতে উপকৃত হচ্ছেন প্রায় ৬০ লাখ মানুষ, যাদের বেশিরভাগই নারী।
'যখন দেখি নতুন প্রজন্ম আমার মূল্যবোধ নিজের মাঝে লালন করছে, মানুষের প্রতি যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা প্রদর্শন করছে, তখন আমার গর্ব হয়। জীবনভর শ্রম দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেছি এবং এখন সেটি নতুন প্রজন্মের হাতে তুলে দেওয়া আমার জন্য গর্বের বটে', বলেন তিনি।
জাহিদা ফিজ্জা কবির বলেন, 'আমি মনে করি, ঐক্যবদ্ধ নারীদের মাঝে রয়েছে কঠোর শ্রম এবং লক্ষ্য অর্জনের পূর্ণ ক্ষমতা। একতার মাধ্যমেই তারা নিজের প্রতিভা বিকশিত করে দেশ ও পৃথিবীর উন্নয়নে অবদান রাখতে পারেন। নিজস্ব এই শক্তিকে কাজে লাগিয়ে নারীরা সমাজের কল্যাণে ভূমিকা রাখতে পারেন।'
ইউনিভার্সিটি অব দ্যা ফিলিপাইনস থেকে সোশ্যাল ওয়ার্ক বিষয়ে স্নাতক করেন জাহিদা ফিজ্জা কবির। এরপর ভারমন্টের স্কুল ফর ইন্টারন্যাশনাল ট্রেইনিং থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড ইন্টারকালচারাল ম্যানেজমেন্টে। এছাড়া অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে তার একটি পিজি ডিপ্লোমা রয়েছে অর্গানাইজেশনাল লিডারশিপ বিষয়ে।
সাজিদা ফাউন্ডেশনের পক্ষে 'আইকনিক কম্পানিজ ক্রিয়েটিং আ বেটার ওয়ার্ল্ড ফর অল' সম্মাননা পেয়েছেন জাহিদা ফিজ্জা কবির। ওম্যান্স ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডব্লিউআইসিসিআই) বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া বিজনেস কাউন্সিল (বিআইবিসি) থেকে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়।
জরুরি পরিস্থিতিতে সহায়তা প্রদানের জন্য বহু বছর ধরে জাহিদ ফিজ্জা কবিরের সহায়তায় সাজিদা ফাউন্ডেশনের সঙ্গে কাজ করছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ। বিশ্ব নারী দিবস-২০২৫ এ 'এক্সেলারেট অ্যাকশন- এম্পাওয়ার্ড ওমেন, এম্পাওয়ারিং দা ফিউচার' ক্যাম্পেইনে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে তার অবদান।
উন্নতির জন্য কাজ করে চলেছেন যে নারীরা- তাদের জন্য জাহিদা ফিজ্জা কবিরের বার্তা হলো, 'নিজের প্রতি মনোযোগী হতে হবে, জানতে হবে নিজের সুপ্ত প্রতিভা কোথায় এবং খুঁজে বের করতে হবে নিজের দুর্বলতাগুলো। কাজ করতে গিয়ে নিজের সুখ-শান্তি বিসর্জন দেওয়া যাবে না, নিজের যত্ন নিতে হবে, বজায় রাখতে হবে আত্মসম্মান। এতে করে সবার উপকার করা সহজ হবে। জীবনের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য থাকতে হবে স্পষ্ট।'
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশ থেকে চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করার হুমকি ত্রিপুরার মহারাজার
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মহারাজা ও টিপরা মোথা নেতা প্রদ্যোৎ মাণিক্য বাংলাদেশ থেকে চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করার হুমকি দিয়েছেন। মঙ্গলবার এনডিটিভি অনলাইন ও হিন্দুস্তান টাইমস এ তথ্য জানিয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দুটির দাবি, সম্প্রতি চীন সফরের সময় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নাকি বলেছিলেন, “উত্তর-পূর্বে ভারতের সাতটি রাজ্য স্থলবেষ্টিত অঞ্চল। তাদের সমুদ্রে পৌঁছনোর কোনো উপায় নেই। এই অঞ্চলে আমরাই সমুদ্রের দেখভাল করি। এটি একটি বিশাল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে। এটি চীনা অর্থনীতির একটি সম্প্রসারণ হতে পারে।”
প্রদ্যোৎ মাণিক্য দাবি করেছেন, ১৯৪৭ সালে চট্টগ্রামের পাহাড়ি মানুষজন ভারতের সঙ্গেই থাকতে চেয়েছিলেন। তখন চট্টগ্রাম বন্দর হাতছাড়া করা ভারতের জন্যে ঠিক হয়নি।
তিনি হুমকি দিয়ে বলেছেন, “চট্টগ্রাম বন্দর ত্রিপুরা থেকে খুব একটা দূরে নয়। বাংলাদেশের মধ্যে দিয়েই ভারতের রাস্তা করে নেওয়া উচিত।”
তিনি বলেছেন, “আমাদের আদিবাসীদের সমর্থন করে সমুদ্রে যাওয়ার পথ তৈরি করার সময় এসেছে ভারতের। একসময় চট্টগ্রাম শাসন করত এই আদিবাসীরাই। তাই আমরা আর এই অকৃতজ্ঞ শাসনের উপর নির্ভরশীল নই। ভারতের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল ১৯৪৭ সালে বন্দরটি ছেড়ে দেওয়া। সেখানে বসবাসকারী পাহাড়ি জনগণ ভারতের অংশ হতে চাইতেন। জনাব ইউনুস মনে করতে পারেন যে, তিনি সমুদ্রের অভিভাবক, কিন্তু বাস্তবতা হল তিনি প্রায় ৮৫ বছর বয়সি একজন স্টপ-গ্যাপ নেতা। ভুলে গেলে চলবে না, তিনি যে বন্দরের কথা বলছেন তা ত্রিপুরা থেকে মাত্র কয়েক মাইল দূরে।”
চিকেনস নেক করিডরে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের ওপর জোর না দিয়ে বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার পরামর্শ দিয়ে ত্রিপুরার মহারাজা বলেন, “উদ্ভাবনী ও চ্যালেঞ্জিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করার পরিবর্তে আমরা বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলতে পারি এবং সমুদ্রে যাওয়ার জন্যে আমাদের নিজস্ব রাস্তা পেতে পারি। পার্বত্য চট্টগ্রামে সবসময় আদিবাসী উপজাতিদের বসবাস ছিল। তারা ১৯৪৭ সাল থেকে সবসময় ভারতের অংশ হতে চেয়েছিল। সেখানে লাখ লাখ ত্রিপুরী, গারো, খাসি এবং চাকমা জনগোষ্ঠী রয়েছে। তারা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে বসবাস করছে।”
ঢাকা/শাহেদ