ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এবি পার্টির নেতাদের মতবিনিময়
Published: 2nd, March 2025 GMT
ঢাকায় নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুইর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেছেন এবি পার্টি নেতারা। আজ রোববার সকালে রাজধানীর গুলশানে ফ্রান্স দূতাবাসে এ বৈঠক হয়।
বৈঠকে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ছিলেন দেশটির ঢাকা দূতাবাসের পলিটিক্যাল কাউন্সেলর ক্রিশ্চিয়ান বেক। অন্যদিকে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুর নেতৃত্বে বৈঠকে অংশ নেন দলের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক প্রধান নাসরীন সুলতানা, নারীবিষয়ক সম্পাদক ফারাহ নাজ সাত্তার, ইন্টারন্যাশনাল উইংয়ের সদস্য হাজেরা মেহজাবিন ও জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের ছাত্রী প্রতিনিধি ফারজানা আক্তার।
মতবিনিময়কালে এবি পার্টির নেতারা রাষ্ট্রদূতকে বলেন, রাজনীতিতে অতীতমুখিতা ও পরিবারতান্ত্রিক বন্দোবস্তের ধারণা থেকে সরে আসার সময় হয়েছে। তরুণেরা পুরোনো রাজনীতিতে ক্লান্ত এবং সত্যিকার অর্থেই একটি রূপান্তরমূলক পরিবর্তন দেখতে চান, যা এবি পার্টি ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন করতে বদ্ধপরিকর।
বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নের জন্য এবি পার্টির চিন্তা জানতে চান ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত। এর জবাবে দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়, এবি পার্টি সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছে এবং নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনে দলের প্রস্তাব তুলে ধরেছে। তারা একটি টেকসই পরিবর্তনের জন্য অত্যন্ত প্রগতিশীল ও সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছে।
ফ্রান্স-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও বেশি জনগণকেন্দ্রিক হওয়া উচিত এবং এটি অর্জনের জন্য ব্যাপক কার্যক্রম নেওয়া উচিত বলে বৈঠকে উল্লেখ করেন এবি পার্টির নেতারা। তাঁরা রাষ্ট্রদূতকে বলেন, ফরাসি গণতন্ত্র এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে কাজ করে, তা বোঝার জন্য আরও বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার সুযোগ দিতে হবে। এটি তাদের গণতন্ত্র সম্পর্কে ধারণা অর্জনে সাহায্য করবে।
বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের পূর্ণ সম্ভাবনার বিকাশে সাহায্য করার জন্য বাংলাদেশে আরও ভালো ব্যবসায়িক অনুশীলন মডেল স্থাপনে সহায়তা করার জন্য রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে ফ্রান্স সরকারের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে এবি পার্টি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
একটি নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার পথরেখা
আন্দোলনের রাজনীতি থেকে দল গঠন
১৯৯১ সালে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পরে ২০০৯ সাল পর্যন্ত অবাধ, নিরপেক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ দুবার এবং বিএনপি দুবার সরকার গঠন করে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এ দুই দল তাদের ক্ষমতার মেয়াদে গণতান্ত্রিক চর্চার উন্নয়নে লক্ষণীয়ভাবে কোনো কাজ করেনি;বরং তারা নিজেদের ক্ষমতাকে সংহত করা এবং বিজয়ীর জন্যই সব—এই রাজনৈতিক সংস্কৃতি চিরস্থায়ী করার জন্য ব্যস্ত ছিল।
বিএনপির কর্মীদের অনেকে দখলদারি ও চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েছেন। যার ফলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে যে পুরোনো অভ্যাসের মৃত্যু সহজে হয় না। এ ধরনের অভিযোগে অনেককে বহিষ্কার করা সত্ত্বেও এর দৌরাত্ম্য কমানো যায়নি।দ্বিদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে জুলাই গণ–অভু৵ত্থানের পরে আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে বিএনপি দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপির সরকার গঠন করার মতো সম্ভাবনাও অনেকে দেখছেন। সাধারণভাবে জনগণের মনোযোগ এদিকে নিবদ্ধ যে তারা উন্নততর গণতন্ত্রের চর্চাকারী হিসেবে ফিরে আসবে কি না। গণ–অভ্যুত্থানের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাষ্ট্র, সরকার ও গণতন্ত্রচর্চা নিয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের অনেক বক্তব্য মানুষের মধ্যে সমাদৃত হয়েছিল। মাঠপর্যায়ে আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতির ফলে ক্ষমতার যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, সে জায়গা দখল করেছেন বিএনপির কর্মীরা। এই শূন্যতার সুযোগ নিয়ে বিএনপির কর্মীদের অনেকে দখলদারি ও চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েছেন। যার ফলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে যে পুরোনো অভ্যাসের মৃত্যু সহজে হয় না। এ ধরনের অভিযোগে অনেককে বহিষ্কার করা সত্ত্বেও এর দৌরাত্ম্য কমানো যায়নি। স্থানীয় পর্যায়ের মানুষদের মধ্যে এ নিয়ে অসন্তোষ আছে। সাধারণ মানুষের এই অসন্তোষ বিএনপিকে আমলে নিতে হবে।
অধ্যাপক ইউনূস যে সংস্কারপ্রক্রিয়া শুরু করেছেন, ছাত্ররা সেটিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে আরও সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে এই সংস্কারপ্রক্রিয়াকে তাঁরা এগিয়ে নিতে চান। এ লক্ষ্যে ছাত্রদের একটি অংশ জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছে। এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে যেসব শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, তারা একটি নিজস্ব রাজনৈতিক ধারণা সামনে এনেছে। সেখানে তরুণ প্রজন্ম নিজেদের অবস্থান দৃঢ়ভাবে তুলে ধরতে শুরু করেছে। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে নিজেদের অগ্রণী ভূমিকার জন্য ছাত্ররা শ্রদ্ধা ও গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছেন, বিশেষ করে তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে। পুরোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থা যাতে স্থায়ীভাবে গেড়ে বসতে না পারে, সে জন্য তাঁরা যৌক্তিকভাবেই সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। একটি নতুন, আরও ন্যায্য ও সমতাভিত্তিক শাসনব্যবস্থা গড়ে তোলা নিশ্চিত করতে তাঁরা সত্যিকারের সংস্কার বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনে মানুষের আনন্দ–উল্লাস। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বিকেলে সংসদ ভবন এলাকায়