ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী শাসক শেখ হাসিনার শাসনামলে সংঘটিত সকল নৃশংসতার সঠিক নথিভুক্তির ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।এর মধ্যে শাপলা চত্বরে আন্দোলনকারীদের ওপর দমনপীড়ন, দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার পর আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের নিষ্ঠুরতা এবং বছরের পর বছর ধরে ঘটে যাওয়া বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই দেশে জনগণের বিরুদ্ধে সংঘটিত সকল নৃশংসতার যথাযথ নথিভুক্তির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। যদি এসব ঘটনার যথাযথ নথিভুক্তি না করা হয়, তাহলে সঠিক তথ্য জানা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা কঠিন হবে।’

রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুইন লুইস এবং জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারীর দপ্তরের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খান প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ বলেন। খবর বাসসের

আবাসিক সমন্বয়কারী লুইস বলেন, ‘জনগণের ওপর ঘটে যাওয়া নৃশংসতার ঘটনাসমূহ যথাযথ অধিভুক্ত করতে জাতিসংঘ প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশের মানুষের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। এটি এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ এবং সত্য প্রতিষ্ঠার একটি প্রক্রিয়া।’

২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টে আন্দোলনের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের বিষয়ে অনুসন্ধানীমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করায় প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘকে ধন্যবাদ জানায়।

তিনি বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত খুশি যে জাতিসংঘ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ওপর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এটি প্রকাশ করা সহজ কাজ ছিল না, তবে যথা সময়ে এটি তারা প্রকাশ করেছে।

আবাসিক সমন্বয়কারী লুইস প্রধান উপদেষ্টাকে জানান যে, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ফোলকার তুর্ক আগামী ৫ মার্চ জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫৫তম অধিবেশনে এই প্রতিবেদনের বিষয়ে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে ব্রিফ করবেন।

আবাসিক সমন্বয়কারী আশা প্রকাশ করেন যে, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আসন্ন বাংলাদেশ সফরকালে রোহিঙ্গা সঙ্কটকে পুনরায় বৈশ্বিক মনোযোগে আনবেন, বিশেষ করে যখন এক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা হ্রাস পাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা আর্থিক সহায়তা হ্রাস পাওয়ার বিষয়ে খুবই উদ্বিগ্ন।’

তিনি বলেন, প্রতি মাসে শুধুমাত্র রোহিঙ্গাদের খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন হয়, যা অন্যান্য মৌলিক চাহিদার সঙ্গে যুক্ত।

জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস আগামী ১৩ থেকে ১৬ মার্চ বাংলাদেশ সফর করবেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা ও চট্টগ্রামে আ’লীগের ১৩ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার 

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঝটিকা মিছিলে অংশ নেওয়া নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের আরও ১১ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল বৃহস্পতিবার ডিএমপির মিডিয়া শাখার বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে বুধ ও বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবির একাধিক দল। এ ছাড়া চট্টগ্রাম নগরীতে ঝটিকা মিছিলের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণ এবং জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি ও দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ রয়েছে। 

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন– যুবলীগ নেতা আসাদুল্লাহ শিপলু, আওয়ামী লীগ নেতা শাকিল আহমেদ, হাবিবুর রহমান হাবিব, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সহসম্পাদক আসলাম চৌধুরী ইমন, যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগ নেতা ও অর্থ সরবরাহকারী মোবাশ্বের রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমীন, সাবেক মেয়র ও কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক কামাল হোসেন শেখ, উত্তরা পশ্চিম থানা শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল, স্থলবন্দর শ্রমিক লীগের সম্পাদক ও সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থানার বালিজুড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন, শেরেবাংলা নগর থানা যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক রেজাউল করিম (রানা) ও মিরপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজালাল। তবে চট্টগ্রামে গ্রেপ্তার দু’জনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। 

এদিকে, চট্টগ্রাম নগরের লাভ লেন এলাকায় ঝটিকা মিছিল বের করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। গতকাল ভোরে মিছিলটি বের করা হয়। এ ঘটনায় দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুল করিম বলেন, ভোরে লোকজনের চলাচল কম ছিল। দোকানপাটও বন্ধ ছিল। এ সময় তারা কয়েক মিনিটের ঝটিকা মিছিল করে পালিয়ে গেছে। পরে অভিযান চালিয়ে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ