গ্যাস না দেওয়ায় আশুগঞ্জ সার কারখানা বন্ধ
Published: 2nd, March 2025 GMT
কয়েক মাসের ব্যবধানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ সার কারখানায় ফের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের ‘মৌখিক’ নির্দেশে বিতরণকারী কর্তৃপক্ষ বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশান কোম্পানি লিমিটেড (বিজিডিসিএল) গত শনিবার সন্ধ্যায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে। এতে কারখানাটিতে ইউরিয়া উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। এর আগে গত বছর প্রায় ৯ মাস (ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪ নভেম্বর) কারখানাটিতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ ছিল।
বিজিডিসিএল এবং কারখানা সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর শ্রমিকদের সভা-সমাবেশ ও দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ নভেম্বর কারখানায় গ্যাস সরবরাহ দেয় বিজিডিসিএল কর্তৃপক্ষ। তবে গ্যাসের চাপ নির্ধারিত মাত্রায় না থাকা এবং কিছু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সার উৎপাদন শুরু হয় গত ২৩ জানুয়ারি। এর এক মাস পার হতে না হতেই ফের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা হলো।
আশুগঞ্জ সার কারখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, কারখানাটি চালু থাকলে দৈনিক ১১‘শ থেকে সাড়ে ১১‘শ টন ইউরিয়া উৎপাদন সম্ভব।
এদিকে কারখানায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কারখানার শ্রমিক নেতারা। এ বিষয়ে কারখানার সিবিএর সাধারণ সম্পাদক আবু কাউছার বলেন, এটি সরকারের ভুল সিদ্ধান্ত। এতে একদিকে ডলারের বিনিময়ে সার আমদানি বৃদ্ধি পাবে, অন্যদিকে নিজেদের কারখানাটি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে।
তিনি জানান, গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ কারখানায় সরবরাহ করতে তাদের কারখানায় গ্যাস বন্ধ করা হয়। অথচ এই কারখানা কৃষির জন্য জরুরি সার উৎপাদন করে।
বিজিডিসিএলের ডিজিএম (সঞ্চালন) প্রকৌশলী জাহিদুর রেজা বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে শনিবার সন্ধ্যা থেকে আশুগঞ্জ সার কারখানার গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা হয়। সার কারখানার এমডি প্রদীপ কুমার নাথ বলেন, গ্যাস সরবরাহ না থাকায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব জ ড স এল
এছাড়াও পড়ুন:
রমজানের শুরুতেই খুলনায় নিত্য পণ্যের বাজারে আগুন
খুলনায় রমজানের শুরুতেই বেড়েছে ইফতার ও সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম। সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও কয়েক দিনের ব্যবধানে সবজির দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক।
ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চাল, ডাল, ভোজ্য সয়াবিনের দাম। দোকানে পণ্যের মূল্য তালিকা সাঁটানো ও বাজার দর মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার থাকলেও কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না।
রমজান শুরুর আগেই বেড়েছে ইফতার সামগ্রীর দাম। ইফতারের অন্যতম চাহিদায় রয়েছে বেগুন, শসা ও লেবু। চাহিদা বিবেচনায় এই তিনটি পণ্যের দামও দ্বিগুণ হয়েছে। বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এসব পণ্য।
নগরীর কেসিসির সন্ধ্যা বাজারে প্রকার ভেদে বেগুন কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগেও ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতো। শসা কেজি প্রতি ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকায়। লেবুর হালি ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন দ্বিগুণের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর মিস্ত্রিপাড়া বাজার, রুপসা বাজার, ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজার ঘুরে জানা যায়, ব্রয়লার মুরগি কেজি প্রতি ২০০ থেকে ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগি কেজি প্রতি ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা, লেয়ার ৩২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতিকেজি করলা ৮০ টাকা, ঢেঁড়শ ৮০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ টাকা, পটল ১২০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, শীতকালীন সিম ৩০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, খিরাই ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, টমেটো ১০ টাকা, প্রতিহালি কাঁচকলা ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দেশি পেঁয়াজ আড়াই কেজি ১০০ টাকা, চায়না রসুন ২৪০ টাকা, আলু চার কেজি একশ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতিকেজি করলা ৬০ টাকা, ঢেঁড়শ ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, শীতকালীন সিম ৩০ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, ক্ষিরই ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, আলু ২০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, চায়না রসুন ২৩৫ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা দরে বিক্রি হয়।
এদিকে, মাসের পর মাস চড়া দামে চলছে চালের বাজার। নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতিকেজি মোটা চাল (স্বর্ণা) ৫৪ টাকা, আঠাশ বালাম ৬৫ টাকা, মিনিকেট ভালোমানের ৭৫ টাকা, মিনিকেট নিম্নমানের ৬৫ টাকা, বাসমতি ৭৫ থেকে ৭৬ টাকা, কালোজিরা ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে কমছে না ভোজ্য সয়াবিন তেলের দাম। বোতলজাত ফ্রেশ, তীর, বসুন্ধরা সয়াবিন (৫লিটার) বিক্রি হচ্ছে ৮৭৫ টাকা দরে। যা লিটার প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকা। লুজ সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। খুচরা বাজারে প্রতিলিটার সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকা দরে। কমছে না মশুর ডালের দাম। খুচরা বাজার প্রতিকেজি মশুর ডাল (সরু) ১৪০ টাকা, মশুর ডাল (মোটা) ১০৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
অপরদিকে, মুরগি বিক্রি হচ্ছে চড়া মূল্যে। কেজিপ্রতি ব্রয়লার মুরগি ২০০ টাকা, লেয়ার ২৮০ টাকা, কক ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে গরুর মাংস কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা দরে।
কেসিসি সুপার মার্কেটে আসা ক্রেতা জাহিদুল ইসলাম বলেন, “সবজির দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। চাল, ডাল, তেল, মুরগিসহ বেশকিছু পণ্য ও জিনিস বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। রমজানেই দাম বাড়ানো হলো জিনিস পত্রের। অথচ কেউ দেখছে না।”
নগরীর সন্ধ্যা বাজারে আসা কলেজ শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, “সবজির দাম বেড়েই চলেছে। চাল, ডাল, সয়াবিন তেলের দাম কোনভাবেই কমছে না।”
তাসলিমা বেগম নামে এক ক্রেতা বলেন, “এ বছর রমজানে বাজার স্বাভাবিক থাকবে ভাবছিলাম কিন্তু চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে দামও বেড়ে যাচ্ছে।”
সন্ধ্যা বাজারের বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, “খামার থেকে মুরগি কম সরবরাহ হওয়ার কারণে এখন দাম একটু বাড়তি।”
অপর বিক্রেতা মফিজুর রহমান জানান, দুদিনের ব্যবধানে আড়তে পণ্যের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। সরবরাহ আগের মত রয়েছে। বাজারে চাহিদা থাকার কারণে আড়ৎদাররা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা সাধারণ ক্রেতার কাছে জবাবদিহিতার শিকার হচ্ছি।
ঢাকা/নুরুজ্জামানান/এস