বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, নিন্ম আয়ের মানুষের জন্য আগামী বুধবার থেকে ৬৪ জেলায় ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে (ট্রাকসেল) টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হবে। ইতোমধ্যে এ কার্যক্রম ছয় জেলায় চলমান আছে। নতুন করে ৫৬ জেলায় কার্যক্রম যুক্ত হবে। আজ রোববার স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য বিক্রয় সংক্রান্ত এক ভার্চুয়াল সভায় জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশ্যে একথা বলেন তিনি।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, এক কোটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে টিসিবির পণ্য পৌঁছে দিতে চায় সরকার। প্রকৃত উপকারভোগী নির্বাচনে জেলা প্রশাসকদের ভূমিকা রাখতে হবে। চলতি মাসের ১৭ তারিখের মধ্য সকল উপকারভোগীকে স্মার্ট কার্ড পৌঁছে দিতে জেলা প্রশাসকদের আন্তরিকতার সাথে কাজ করার আহবান জানান তিনি।

জেলা প্রশাসকদের উদ্দ্যেশে উপদেষ্টা বলেন, ৫৭ লাখ উপকারভোগী স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে পণ্য পাবে। যাদের এখনও স্মার্টকার্ডের কার্যক্রম শেষ হয়নি কিন্তু তালিকায় নাম আছে তারাও পণ্য পাবে। এছাড়া ৬৪ জেলায় ট্রাকসেলের মাধ্যমে সর্বসাধারনের মাঝে আগামী ৫ মার্চ হতে পণ্য বিক্রি করা হবে।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, রমজানে কেউ যাতে মজুতদারী করতে না পারে জেলা প্রশাসকদের সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। একই সাথে ভোক্তারা যেন পুরো মাসের বাজার না করে সে বিষয়ে অনুপ্রাণিত করতে হবে। একসাথে পুরো মাস বা সাত দিনের পণ্য কিনলে সরবারহ সংকটে কেউ কেউ দাম বাড়িয়ে নেয়।
 
তিনি বলেন, আমরা ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে চাই। কারো প্রতি জুলুম করা হবেনা,তবে কেউ জুলুম করলে তাকে ছাড় দেওয়া হবেনা। এসময় অন্যায় প্রতিরোধে জেলা প্রশাসকদের সর্বশক্তি নিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার একদম প্রাথমিক ধাপ টিসিবির ন্যায় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির উপকারভোগী নির্বাচন করা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা নিশ্চিত করতে পারলে মানুষের মধ্যে আপনাদের (জেলা প্রশাসকদের) গ্রহণ যোগ্যতা বাড়বে। মানুষ আপনাদের ইজ্জত (সম্মান) দিবে।

এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) মো.

আব্দুর রহিম খান, ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) চেয়ারম্যান বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ফয়সল আজাদসহ বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ও ৬৪ জেলার জেলা প্রশাসক ভার্চুয়ালি অংশনেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ণ জ য উপদ ষ ট উপদ ষ ট ৬৪ জ ল

এছাড়াও পড়ুন:

নীলফামারীতে পৃথক বিস্ফোরণে দুই বোন ও দুই শ্রমিক দগ্ধ

নীলফামারীতে দুটি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরেণের ঘটনায় উত্তরা ইপিজেডের একটি কারখানায় ও ইপিজেডের পাশে একটি বাসায় পৃথক দুটি বিস্ফোরণের ঘটনায় দুই বোনসহ চার শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। তাঁদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ইপিজেডের সনিক কারখানায় (খেলনা তৈরির কারখানা) বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই কারখানার দুই শ্রমিক দগ্ধ হন। তাঁরা হলেন লিটন চন্দ্র রায় (২৫) ও দেলোয়ার হোসেন (২৮)।

উত্তরা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক আব্দুল জব্বার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উত্তরা ইপিজেড স্টেশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মো. খুরশীদ আলম বলেন, সনিক নামের একটি কারখানা থেকে দগ্ধ অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তরিত করা হয়।

বিস্ফোরণের পর ওই কারখানার শ্রমিকেরা বাইরে বের হয়ে বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শ্রমিক জানান, কারখানায় হঠাৎ করে কাজের চাপ বেড়ে গেছে। ২৪ ঘণ্টায় তিন পালায় শ্রমিকেরা কাজ করছেন। ফলে খেলনা তৈরির যন্ত্রগুলো বিশেষ করে ‘ডায়াস্টিক’ যন্ত্রটি বন্ধ করা হয় না। ধারণা করা হচ্ছে ওই যন্ত্র অতিরিক্ত গরম হয়ে বিস্ফোরিত হয়েছে। এ ঘটনার পর কাজ বন্ধ রেখেছেন শ্রমিকেরা।

শ্রমিকদের অভিযোগ, এর আগে ৬ এপ্রিল রাত আটটার দিকে ওই কারখানার ডায়াস্টিক যন্ত্র বিস্ফোরণের ঘটনায় রমজান আলী ও খায়রুল ইসলাম নামের দুই শ্রমিক দগ্ধ হয়েছিলেন। তাঁদের চিকিৎসার জন্য ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ১০ এপ্রিল খায়রুল ইসলাম এবং ১২ এপ্রিল রমজান আলী মারা যান। এরপরও সনিক কারখানাটির কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি।

এ বিষয়ে কথা বলতে নীলফামারী উত্তরা ইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক মো. আখতারুজ্জামানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
একই দিন সকাল ৬টার দিকে উত্তরা ইপিজেডসংলগ্ন এক ভাড়া বাসায় রান্না করার সময় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ইপিজেডের একটি পোশাক কারখানার দুই নারী শ্রমিক দগ্ধ হন। সম্পর্কে তাঁরা আপন দুই বোন। দগ্ধরা হলেন সুইটি আক্তার (২০) ও তাজকিনা আক্তার (২৩)। তাঁরা জেলার ডোমার উপজেলার হরিণচড়া ইউনিয়নের সেওটগাড়ি গ্রামের বাবুল হোসেনের মেয়ে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উত্তরা ইপিজেড স্টেশনের একটি দল দগ্ধ দুই বোনকে উদ্ধার করে প্রথমে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে তাঁদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তরিত করা হয়।

দুটি বিস্ফোরণের বিষয়ে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম আর সাঈদ প্রথম আলোকে বলেন, পৃথক দুই ঘটনায় দগ্ধ চার শ্রমিককে প্রথমে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য চারজনকেই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এ ছাড়া কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনার পর উত্তেজিত শ্রমিকেরা কারখানার সামনে আহতদের ক্ষতিপূরণসহ বিভিন্ন দাবিতে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন। পরে পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ