পিরোজপুর জেলা জজ আদালত চত্বর থেকে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের পাঁচ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ রোববার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের ওপর হামলা করেন বিএনপি’র বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।

গত ১৮ অক্টোবর দায়ের করা একটি মামলায় আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতাকে অজ্ঞাতপরিচয়ে আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তারা হলেন- ইন্দুরকানী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এম মতিউর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলাউদ্দিন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি শহিদুল হক খান পান্না, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ফিরোজ ও যুবলীগ নেতা ইরতিজা হাসান রাজু। 

গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মামলা হয়। এ ঘটনায় আসামিরা আদালত থেকে জামিন নিয়েছিলেন। পরে জেলা জজ আদালতে হাজির হয়ে স্থায়ী জামিন আবেদন করেন তারা। আদালত আজ তাদের জামিন শুনানির দিন ধার্য করেন। এ খবর পেয়ে আদালত প্রাঙ্গণে ভিড় করতে থাকেন বিএনপি’র নেতাকর্মীরা। আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আদালত প্রাঙ্গণে মিছিল করে ছাত্রদল। আদালত থেকে আওয়ামী লীগ নেতারা বের হওয়ার সময় বিএনপি’র বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা করে। পুলিশ তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে খান মো.

আলাউদ্দীনকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত এবং অন্য চারজনকে নাশকতায় মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। 

জেলা পুলিশ সুপার খান মোহাম্মদ আবু নাসের বলেন, আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে পাঠানো হবে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

চিকিৎসা ছাড়া মায়ের কোলে ফিরল সেই শিশু

বরিশাল নগরীর কীর্তনখোলার তীরে উদ্ধার হওয়া পরিচয়হীন সেই নবজাতক ফিরেছে আপন ঠিকানায়। বাবার কোলে চড়ে গত রোববার রাতে (ঈদের আগের দিন) ঢাকা থেকে বাগেরহাটে মায়ের কোলে পৌঁছায়। শিশুটি এখন মায়ের কাছে রয়েছে। তবে অনেকটা বিনা চিকিৎসায় শিশুটিকে বাড়ি ফিরতে হয়।

শিশুটির বাবা বাগেরহাট শহরে ফুটপাথের চা দোকানি গণেশ শ্যাম আজ বুধবার বিকেলে সমকালকে বলেন, গত রোববার দুপুরে শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে রিলিজ দেয়। ওই রাতে তিনি ও তার শাশুড়ি সুমি দাস বাসে শিশুটিকে নিয়ে বাগেরহাটের বাসায় পৌঁছান।

রিলিজ দেওয়ার বিষয়ে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে গণেশ জানান, শিশুটির পিঠের টিউমার নিরসনে অস্ত্রোপচার করতে হবে। কিন্তু, একমাস বয়স হওয়ার আগে অস্ত্রোপচার সম্ভব নয়। যেহেতু শিশুর বয়স এক সপ্তাহ হয়েছে। তাই, আরও তিন সপ্তাহ পর ঢামেকে ভর্তির জন্য পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক।

শিশুটির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বাবা গণেশ বলেন, পিঠের টিউমার থেকে পানি বের হচ্ছে। বাগেরহাটের স্থানীয় চিকিৎসকদের চিকিৎসা নিতে যোগাযোগ করছি। কিন্তু, ঈদের ছুটি হওয়ায় কোনো চিকিৎসক পাচ্ছেন না। এজন্য আগামী শনিবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে আশঙ্কার কথা জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ২২ মার্চ দিবাগত রাত আনুমানিক ১২টার দিকে নগরীর সংলগ্ন কীর্তণখোলার তীরে ত্রিশ গোডাউন এলাকায় পরিত্যক্ত বাথরুমে অজ্ঞাত নবজাতক উদ্ধার হয়। স্থানীয় বাসিন্দা ফুচকা বিক্রেতা পারভীন বেগম শিশুটিকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে যান। গত ২৮ মার্চ শিশুটির অভিভাবকের সন্ধান পাওয়া যায়। তার আগের দিন (২৭ মার্চ) উন্নত চিকিৎসার জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তর ও শেবাচিম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তত্বাবধানে শিশুটিকে ঢাকায় পাঠানো হয়।

বাবা গণেশ দত্ত জানান, বরিশাল নগরীর সদর রোড মোখলেসুর রহমান ক্লিনিকে ২১ মার্চ স্ত্রী অন্তরা দাস সিজারের মাধ্যমে শিশুটির জন্ম দেন। এটি তাদের প্রথম সন্তান। জন্মগতভাবেই পিঠের মেরুদণ্ড টিউমার ধরা পড়ে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ওইদিনই নবজাতককে শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলো। ব্যয়বহুল চিকিৎসা ও পুরো সুস্থ্য না হওয়ার আশঙ্কায় পরদিন ২২ মার্চ দুপুরে ওয়ার্ডে বসেই শিশুটিকে এক রিক্সাচালকের কাছে হস্তান্তর করেন। এরপর তাদের আর কিছু জানা নেই।

শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. একেএম মশিউর মুনীর জানান, শিশুটির পিঠে মেরদণ্ডের টিসু থেকে টিউমারের উৎপত্তি হয়েছে। এটি পুরোপুরি ভাল হওয়ার সম্ভাবনা কম। চিকিৎসাও অনেক ব্যয়বহুল। তিনি জানান, শিশুটি দত্তক নিতে অনেকে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। শারীরিক অবস্থা দেখে ফিরে যান।

বরিশাল সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, শিশুটির চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। এজন্য কেউ সাহায্যে করতে চাইলে তার মুঠোফোন ০১৭১৫-৫৪৫১৪৫ নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ