ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল বিশ্বরোড এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসন। আজ রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এ অভিযান চালানো হয়।

সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারফ হোসাইন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিরাজুম মুনীরা কায়ছান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুক্তা গোস্বামী, সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল হাসান ও সরাইল খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ওসি মো.

মামুন রহমান অভিযানে উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর ধরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে প্রতিদিন দীর্ঘ যানজট দেখা দেয়। প্রায় প্রতিদিনই ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার এলাকায় যানজট লেগে থাকে। এর প্রভাব পড়ে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক ও সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক মহাসড়কে। দুর্ভোগে পড়ে হাজার হাজার চালক ও যাত্রী।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ, জেলা ও পুলিশ প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৩৪ কিলোমিটার পড়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় হয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সাড়ে ১০ কিলোমিটার অংশসহ ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ কাজ চলছিল পাঁচ থেকে ছয় বছর ধরে। কাজটি করছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। ২০২২ সালে কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। শুরু থেকেই কাজটি ধীরগতিতে চলছে। কাজের অংশ হিসেবে বিশ্বরোড মোড়ের আশপাশে বালু ফেলে রাখা হয়েছে। এসব বালুর ওপর গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা ও টংঘর। এ ছাড়া বিশ্বরোড মোড়ের চারপাশে সড়কে অসংখ্য ছোট–বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব কারণে বিশ্বরোড মোড়কে কেন্দ্র করে প্রতিদিন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট লেগেই থাকে। মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখতে আজ ছোট–বড় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে প্রশাসন।

তবে প্রশাসন ও পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, মোড়ের পূর্ব পাশের স্থায়ী দখলদারদের উচ্ছেদ করা হয়নি। মোড়ের পূর্ব পাশে সওজের বিশাল এলাকা। যেখানে নির্মাণ করা হয়েছিল পাকা সড়ক। এটি কয়েকজন প্রভাবশালী দীর্ঘ ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে দখলে নিয়ে গড়ে তুলেছেন শতাধিক স্থাপনা। প্রতিটি দোকান থেকে দৈনিক ভাড়া নিচ্ছেন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা করে।

সরাইল খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ওসি মো. মামুন রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মহাসড়কের নির্মাণকাজের ওপর অনেক অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এতে একদিকে কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে যানজট তৈরি হচ্ছে। পবিত্র রমজান মাসে ধীরে ধীরে যানবাহনের চাপ বাড়বে। এতে যানজটও বেড়ে যাবে। এ জন্য অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। পূর্ব পাশের স্থাপনার বিষয়ে তিনি বলেন, রোজার কারণে দুপুরের পর অভিযান বন্ধ করতে হয়েছে। পূর্ব পাশের অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় তাঁদেরও উচ্ছেদ করা হবে।

ইউএনও মো. মোশারফ হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, মহাসড়কের কাজ দ্রুত করতে ও মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখতে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। কাজটি মূলত হাইওয়ে পুলিশের। তাঁরা তাঁদের সহায়তা করেছেন। উচ্ছেদ অভিযান থেকে কোনো জায়গা বাদ পড়লে তাঁদেরও উচ্ছেদ করা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য় ব শ বর ড ম ড় ক য নজট

এছাড়াও পড়ুন:

ঘর থেকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, ইউএনও অফিসের গাড়িচালকসহ গ্রেপ্তার ৪

নওগাঁর মান্দায় এক নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে ইউএনও অফিসের গাড়িচালকসহ চার যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার করে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। তাদের গতকাল সোমবার রাতে ঘটনাস্থল থেকে তাদের আটক করা হয়। 

গ্রেপ্তার হওয়া যুবকরা হলেন- উপজেলার ছোটবেলালদহ গ্রামের সোলাইমান আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম সোহাগ (২৯), বড়পই গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে আশরাফুল ইসলাম সুইট (২৯), বিজয়পুর প্রিন্সিপালের মোড় এলাকার মোজাহার আলীর ছেলে আসাদুজ্জামান মুন্না (২৯) ও বিজয়পুর মধ্যপাড়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে নাসির উদ্দিন (২৯)। তাদের মধ্যে নাসির উদ্দিন মাস্টাররোলে ইউএনও অফিসের গাড়িচালক।

মামলার এহাজার সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী নারীর স্বামী পিকআপচালক। তারা ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। ঈদ উপলক্ষে এ দম্পতির একমাত্র মেয়ে তারা নানার বাড়ি যায়। কাজের জন্য রাতে পিকআপ ভ্যান নিয়ে তার স্বামী বাইরে যান। ফলে বাড়িতে একাই ছিলেন ওই নারী।  

ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘গত রোববার রাত ৮টার দিকে আমার স্বামী পিকআপ ভ্যান নিয়ে কাজের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন। রাত ৯টার দিকে আমি রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়ি। রাত সাড়ে ১০টার দিকে আসামি স্বাধীন বাসায় এসে আমার স্বামীকে ডাকাডাকি করে। স্বাধীন আমার স্বামীর পূর্ব পরিচিত হওয়ায় সরল বিশ্বাসে আমি দরজা খুলি। সঙ্গে সঙ্গে ৬-৭ জন যুবক ঘরে ঢুকে মুখ চেপে ধরে। এর পর তারা পালাক্রমে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে আমার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে চারজনকে আটক করে। তবে বাকিরা পালিয়ে যায়।’

মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনুসর রহমান বলেন, দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২-৩ জনের নামে মামলা করেছেন। এ মামলায় চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে সোমবার নওগাঁ কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শারীরিক পরীক্ষার জন্য ওই নারীকে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ওসি আরও জানান, ‘শুনেছি, নাসির উদ্দিন ইউএনও অফিসের গাড়ি চালায়।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পীরগাছায় ৩ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা
  • হাওরপারের সেই তিন পরিবারে ঈদ উপহার পৌঁছে দিলেন ইউএনও
  • ঘরে ঢুকে ধর্ষণের অভিযোগ, ইউএনও অফিসের গাড়িচালকসহ গ্রেপ্তার ৪
  • ঘর থেকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, ইউএনও অফিসের গাড়িচালকসহ গ্রেপ্তার ৪