৫০ ওভারের ক্রিকেটে বাজে সময় যাচ্ছে ইংল্যান্ডের। সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ড থেকে বাদ পড়া দলটি এবার চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রথম পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে জয়হীন থেকে। এই সংস্করণে সর্বশেষ ৭ ম্যাচেই হেরেছে ২০১৯ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। টানা ব্যর্থতার পর অধিনায়ক জস বাটলারও দায়িত্ব ছেড়েছেন।

এখান থেকে ইংল্যান্ডকে টেনে তোলার দায়িত্ব এখন কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালামের। এই প্রক্রিয়ায় সবার আগে তাঁকে খুঁজে নিতে হবে একজন অধিনায়ককে। আর সেটা করতে কয়েক সপ্তাহ সময়ও চেয়েছেন ম্যাককালাম। কে হতে পারেন ইংল্যান্ডের পরবর্তী অধিনায়ক?

নতুন অধিনায়ক নির্বাচনের আগে প্রশ্ন উঠেছে, সাদা বলের দুই সংস্করণের জন্য আলাদা অধিনায়ক দেখা যাবে কি না। এই প্রশ্নের উত্তরে গতকাল ম্যাচ শেষে ম্যাককালাম চেয়েছেন সময়, ‘একজনই যদি অধিনায়ক হয়, ভালো। যদি দুজন হয়, তাহলেও ভালো। আমাকে কয়েক সপ্তাহ দিন বিষয়টি বুঝে নিতে এবং সবকিছু আবার ঠিক পথে ফেরানোর জন্য।’

সবকিছু বিশ্লেষণ করতে আমাদের কয়েক সপ্তাহ সময় দিন। গত দেড় মাসে কী হয়েছে তা বুঝতে হবে, এরপর ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করতে হবেব্রেন্ডন ম্যাককালাম

ইংল্যান্ডের পরের সাদা বলের সিরিজ শুরু হবে ২৯ মে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। পরবর্তী আইসিসি বৈশ্বিক আসর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, যা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় হবে।

সাদা বলের অধিনায়ক হতে পারেন বর্তমানে সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করা হ্যারি ব্রুক। গত বছর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাটলারের অনুপস্থিতিতে দলকে তিনি নেতৃত্বও দিয়েছিলেন। তবে ব্রুককে অধিনায়ক করা হলে একটি সমস্যা দেখা দেবে। কারণ, তিনি টেস্ট দলে নিয়মিত সদস্য। ফলে তাঁকে কিছু সাদা বলের সিরিজে বিশ্রাম দিতে হতে পারে। ইংল্যান্ড আগে এমনটা অনেকবার করেছে। এই সমস্যার সমাধানই হতে পারে আলাদা সাদা বলের অধিনায়ক। তবে ২০১০ সালের পর ইংল্যান্ডের সাদা বলে আলাদা অধিনায়ক ছিল না।

ইংলিশ পেসার ক্রিস ওকস টেস্ট ম্যাচ স্পেশাল পডকাস্টে এ নিয়ে মত দিয়েছেন, ‘এটা (সাদা বলে দুই অধিনায়ক) কাজ করতে পারে। না করার কোনো কারণ দেখছি না। আমরা এমন একটি সময়ে আছি, যেখানে এটি ভবিষ্যতের পথ হতে পারে।’

ক্রিস ওকস আরও বলেছেন, ‘প্রতিটি সংস্করণ খুব আলাদা। ৫০ ওভারের ক্রিকেট শুধু একটি বড় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ নয়। এখানে খেলার মধ্যে খেলা থাকে, যা টেস্ট ক্রিকেটের কাছাকাছি এবং দীর্ঘ সময় ধরে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হয়।’

সাদা বলের অধিনায়ক হতে পারেন হ্যারি ব্রুক.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পরবর্তী সরকারের অপেক্ষায় অনেকে

সমকাল: এটা কি ঠিক, গত ১৫ বছর ধরে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারী কমছে?
মিনহাজ মান্নান: হ্যাঁ, ঠিক। সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি প্রতিষ্ঠান সিডিবিএলের তথ্য অনুযায়ী, এখন সক্রিয় বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা প্রায় ১৭ লাখ, যা ১০-১৫ বছর আগেও ৩৫ লাখ ছিল। অর্থাৎ, এই সময়ে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা অর্ধেকে নেমেছে। এখন যে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা দেখানো হচ্ছে, এটাও প্রকৃত সংখ্যা নয়। এখানে একই ব্যক্তির একক অ্যাকাউন্টের পাশাপাশি যৌথ অ্যাকাউন্টও রয়েছে। আবার একই ব্যক্তির নামেও বহু অ্যাকাউন্ট আছে। প্রকৃত বিনিয়োগকারী অ্যাকাউন্ট ১০-১২ লাখ হতে পারে। আবার সক্রিয় বিনিয়োগকারী এরও অর্ধেক।
সমকাল: কবে থেকে বিনিয়োগকারী কমছে?
মিনহাজ মান্নান: ২০০৭ সালের ১/১১ সরকারের সময়ে শেয়ারবাজারে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছিল। তখন থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারী বেড়েছিল। ওই বছরের শেষে ইতিহাসের সর্বোচ্চ বড় ধস নামলে লাখ লাখ বিনিয়োগকারী পুঁজি হারান। তার পর থেকে ক্রমেই বিনিয়োগকারী কমছে। 
সমকাল: গত ১৫ বছরে অর্থনীতির আকার বৃদ্ধিসহ নানা উন্নয়নের বিপরীতে এটা কি উল্টো চিত্র নয়?
মিনহাজ মান্নান: অবিশ্বাস্য হলেও এ কথাই সত্যি। যেখানে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে মানুষের হাতে সঞ্চয়ের টাকা বেড়েছে, সেখানে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারী কমার যৌক্তিক কোনো কারণই নেই। তা সত্ত্বেও এমনটি হয়েছে। আমরা বছর বছর জিডিপির আকার এবং জাতীয় বাজেট বড় হতে দেখেছি। শুনতে অবাক হওয়ার মতো হলেও এটাই সত্য, পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় চলা এ দেশটির এমন উন্নয়ন চিত্রে শেয়ারবাজারের কোনো ভূমিকা ছিল না। উল্টো গত ১৫ বছরে শেয়ারবাজার ক্রমে সংকুচিত হয়েছে, যার হার প্রায় ৩৭ শতাংশ, অর্থাৎ তিন ভাগের দুই ভাগেরও নিচে নেমেছে।
সমকাল: এ অবস্থার কারণ কী?
মিনহাজ মান্নান:  দেখুন, কিছু মানুষ ব্যাংক, সরকারি সঞ্চয়পত্র বা বন্ডের মতো নিরাপদ বিনিয়োগ না করে কেন শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে আসে? আসে এ কারণে, সঞ্চয়পত্র, বন্ড বা ব্যাংক আমানতের তুলনায় মুনাফা বেশি, তবে ঝুঁকিও আছে। সেই ঝুঁকিরও একটা মাত্রা আছে। বিশ্বের কোনো শেয়ারবাজারে বিনিয়োগই ঝুঁকিহীন নয়। বিশ্বের সবচেয়ে বড় শেয়ারবাজারেও ধস নেমেছে, শেয়ারের দর কমেছে। কিন্তু সরকার ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মাধ্যমে তার পুনরুদ্ধারও হয়েছে। ব্যতিক্রম শুধু বাংলাদেশ। ২০১০ সালের ধসের পর মানুষ পরবর্তী চার-পাঁচ বছর অপেক্ষায় ছিল বাজার বুঝি ঘুরে দাঁড়ায়। তা হয়নি। কারণ এখন পরিষ্কার। সরকারের হিসাবের মধ্যে শেয়ারবাজার ছিল না। ২০১০ সালের ধসের পর ওই ক্ষত উপশমের জন্য যে খায়রুল কমিশন এবং শিবলী কমিশনকে সরকার নিয়োগ করেছিল, তারা পরিকল্পিতভাবে এ বাজার ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। ঋণে জর্জরিত, মালিকরা কিছুদিনের মধ্যে খেলাপি হবেন, কোম্পানি দেউলিয়া হবে– এমন সব কোম্পানির ভুয়া অ্যাকাউন্টস তৈরি করে সেগুলোকে আইপিওতে এনে বাজার ভর্তি করেছেন। স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে এগুলোর আইপিও বিষয়ে নেতিবাচক মতামত দেওয়া হয়েছিল। কমিশন তা উপেক্ষা করেছে। একাধিক দফায় আইপিওতে আসা কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা ওই কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করতে বাধ্য করেছিল। খোদ কমিশনপ্রধানরা অনিয়মে জড়িয়েছেন। কারসাজিকে উস্কে দিয়েছেন। ফলে বিনিয়োগকারীরা একসময় হতাশ হয়ে বাজার ছাড়তে শুরু করেন।
সমকাল: অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে কি?
মিনহাজ মান্নান: বর্তমান সরকার আসার পর মানুষের মধ্যে আশাবাদ তৈরি হয়েছিল। এ সরকারের প্রথম চার কার্যদিবসে ৭৮৬ পয়েন্ট সূচক বাড়ে। এর পর যে পতন শুরু হয়, গত সাতে মাসে ঘুরেফিরে সূচক আগের অবস্থানে ফিরেছে। মানুষ এখনও আস্থা পাচ্ছে না। কারণ, বিদ্যমান ব্যবস্থায় এখনও দৃশ্যমান বদল নেই। যদিও কারসাজির বিচারের জন্য কিছু ঘটনা নিয়ে তদন্ত চলছে। কিছু পুরোনো ঘটনায় বড় অঙ্কের জরিমানা করেছে বর্তমান কমিশন। জরিমানা আদায় যে নেই, তা সবাই জানে। এ প্রক্রিয়ায় কখনও কারসাজি দমন হয়নি। এ সময়ে ভালো কোম্পানির আইপিও আসা দরকার ছিল। বর্তমান কমিশন বড় কিছু শিল্প গ্রুপের সঙ্গে আলোচনা করেছে। প্রক্রিয়াগত কারণে চাইলেও এত স্বল্প সময়ে বড় কোম্পানি আসতে পারবে না, সময় লাগবে। এ ক্ষেত্রে বড় বাধা সম্পদের হিসাবসহ আর্থিক হিসাব প্রস্তুত করা। তবে ইউনিলিভারের মতো বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর অ্যাকাউন্টস হালনাগাদ থাকার কথা। নীতিগত সিদ্ধান্ত হলে স্বল্প সময়ে এগুলো বাজারে আসতে পারে। এ নিয়ে পদক্ষেপ নেই। উল্টো এসএমই বাজারে এক কোম্পানিকে মূলধন সংগ্রহের অনুমতি দিয়ে এর আর্থিক প্রতিবেদন নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় দ্রুত তার অনুমতি স্থগিত করার ঘটনা ঘটেছে। এতে মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে। প্রথমত, তারা দেখছে, কমিশন সমালোচনাকে আমলে নিয়েছে। আবার এটাও দেখেছে, আগের কমিশনের মতো এই কমিশনও আইপিও অনুমোদন করেছে। আবার নানা পর্যায়ে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা বহাল আছেন। ফলে এখনই নতুন করে মানুষ বিনিয়োগে আসবেন না। তারা হয়তো পরবর্তী রাজনৈতিক সরকার কেমন হয়, তা দেখে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেবেন।

 সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আনোয়ার ইব্রাহীম 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইবিতে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ২ নেতা আটক
  • মেসি খেলবেন না বলে বিনা মূল্যে টিকিট
  • নতুন দলের পরবর্তী কর্মকাণ্ডের দিকে দৃষ্টি সব দলের
  • চলতি মাসে রোডম্যাপ না দিলে রাজনৈতিক শক্তিগুলো সিদ্ধান্ত নেবে: সালাহউদ্দিন
  • যবিপ্রবিতে শেখ পরিবারের নামে থাকা ৫ স্থাপনার নাম পরিবর্তন
  • বাড়তে পারে তাপমাত্রা, ঝরতে পারে বৃষ্টি
  • শরীয়তপুরে গণপিটুনিতে ২ ডাকাতের মৃত্যু, গুলিবিদ্ধ ৪
  • পরবর্তী সরকারের অপেক্ষায় অনেকে
  • জবিতে ‘জয় বাংলা’ লেখার সময় ছাত্রলীগ কর্মীকে ধরে পুলিশে দিলেন শিক্ষার্থীরা