ইফতারের শরবতের লেবুর দামে আগুন, সিলেটে ৫ টাকার লেবু এখন ২৫ টাকা
Published: 2nd, March 2025 GMT
পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সিলেটে লেবুর দাম বেড়ে গেছে। ১০ দিন আগে যে লেবুর দাম ছিল ৫ টাকা, এখন সেটি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। তবে অন্যান্য সবজির দাম স্থিতিশীল আছে।
গতকাল শনিবার রাতে নগরের বন্দরবাজার, আম্বরখানা, রিকাবিবাজার ও মদিনা মার্কেট এলাকা ঘুরে এমন চড়া দামে লেবু বিক্রি হতে দেখা যায়। বিক্রেতারা জানান, ইফতারের সময় ধনী-গরিবনির্বিশেষে সবার কাছে লেবুর শরবতের বেশ চাহিদা থাকে। তবে বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। এ কারণে দাম একলাফে কয়েক গুণ বেড়েছে।
বাজার ঘুরে জানা গেছে, দেড় সপ্তাহ আগে মাঝারি আকারের লেবু প্রতি হালির দাম ছিল ১৫ থেকে ২০ টাকা। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০ টাকা। অন্যদিকে বড় আকারের লেবু প্রতি হালি এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়। আগে তা ছিল ৩০ থেকে ৫০ টাকা।
রিকাবিবাজার এলাকার সবজি ব্যবসায়ী মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রোজা শুরুর আগেই লেবু শসা ও বেগুনে উত্তাপ
অন্য বছরের তুলনায় এবার রোজার আগে বেশির ভাগ নিত্যপণ্যের দাম বলা চলে এক প্রকার স্বাভাবিক। তবে কয়েকটি পণ্যে রোজার আঁচ লেগেছে। বিশেষ করে এ তালিকায় রয়েছে লেবু, বেগুন, শসাসহ ইফতারিতে ব্যবহার হয় এমন পণ্য। চাহিদা বাড়ার সুযোগে পণ্যগুলোর দর কিছুটা বেড়েছে।
শুক্রবার ছুটির দিনে কারওয়ান বাজারসহ রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। শনিবার চাঁদ দেখা গেলে রোববার থেকে শুরু হবে পবিত্র মাহে রমজান। এর আগে সবাই অগ্রিম বাজার করে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। এর কিছুটা প্রভাবও পড়েছে বাজারে।
খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা বলেন, এখন লেবুর মৌসুম নয়। ফলে প্রায় এক মাস ধরে দর বাড়তি। এ ছাড়া বেগুন, শসাসহ যেগুলোর দাম বেড়েছে তার মূল কারণ ক্রেতাদের বেশি পরিমাণে কেনা। রোজার আগমুহূর্তে প্রতিবছরই এসব পণ্যের দর বাড়ে। তবে পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে সামনের দিনগুলোতে দর বাড়ার সম্ভাবনা কম বলে মনে করেন তারা।
শরবত তৈরির অন্যতম উপাদান লেবু। রমজানে ইফতারে কমবেশি সবাই শরবত খাওয়ার চেষ্টা করেন। ফলে লেবুর চাহিদা বেড়ে যায়। আর এ সুযোগে বাড়তি দাম নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে প্রতি হালি শরবতি বা সুগন্ধি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা এবং আকারভেদে অন্য লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। মাসখানেক আগে অন্তত ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে কেনা গেছে লেবুর হালি। তবে এখনও বাড়লেও গত বছরের এ সময়ের তুলনায় কিছুটা কম রয়েছে দাম।
কারওয়ান বাজারের পাইকারি লেবু ব্যবসায়ী জালাল আহমেদ সমকালকে বলেন, লেবুর উৎপাদন কম। কারণ, এখন লেবুর মৌসুম নয়। তাছাড়া অনেক দিন ধরে বৃষ্টিপাত নেই। এ জন্য ফলন ভালো হচ্ছে না। সেজন্য বাজারে লেবু কম আসছে। কিন্তু রোজার কারণে মানুষ আগেভাগে লেবু কিনছেন। মূলত এ জন্য দর বাড়তি।
বাজারে এখন ভরপুর শসা রয়েছে। হাইব্রিড ও দেশি শসার পাশাপাশি ছোট আকারের খিরাও পাওয়া যাচ্ছে। হাইব্রিড শসা ও খিরার কেজি ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেনা গেলেও দেশি জাতের শসা কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। সপ্তাহখানেক আগে এসব শসা অন্তত ১০ থেকে ৩০ টাকা কমে কেনা গেছে। অবশ্য, এ দর গেল রমজানের চেয়ে বেশ কম। গত বছর এ সময় শসার কেজি সর্বোচ্চ ১১০ টাকা ছুঁয়েছিল।
এখনও টমেটোর ভর মৌসুম চলছে। ফলে বাজারে দেশি টমেটোর পর্যাপ্ত সরবরাহ দেখা গেছে। সেজন্য দাম এখনও নাগালে। কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৪০ টাকায়।
বেগুনি তৈরি করতে লম্বা বেগুনের দরকার হয়। সেজন্য রোজার সময় লম্বা বেগুনের চাহিদা বেড়ে যায়। যার প্রভাব পড়েছে দামে। পাঁচ-ছয় দিন আগেও প্রতি কেজি লম্বা বেগুন কেনা গেছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। প্রায় দ্বিগুণের মতো দর বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। তবে পাড়া-মহল্লায় ভ্যান থেকে কিনতে গেলে ক্রেতাকে কেজিতে বাড়তি গুনতে হচ্ছে অন্তত আরও ১০ টাকা। বছরের অন্য সময়ে গোল বেগুনের দর বেশি থাকলেও এখন স্বাভাবিক। প্রতি কেজি কেনা যাবে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।
কারওয়ান বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা ইয়াকুব আলী বলেন, এখনও শীতের সবজিতে বাজার ভরপুর। লম্বা বেগুনের চাহিদা বেশি। এ কারণে কেউ কেউ দর বেশি নিচ্ছে। তবে অন্য জায়গায় দর বাড়লেও কারওয়ান বাজারে বাড়েনি বলে দাবি করেন এই বিক্রেতা।
গাজরের সরবরাহ রয়েছে বেশ ভালো। ফলে দর বাড়ার তালিকায় উঠতে পারেনি মিষ্টি জাতীয় সবজিটি। প্রতি কেজি গাজর কেনা যাচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। গত বছরের তুলনায় এ বছর কম দরে মিলছে পেঁয়াজ। মানভেদে দেশি প্রতি কেজি পেঁয়াজ কেনা যাচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়।
রমজানে কাঁচামরিচের চাহিদা বেশি থাকে। তবে এবার ঝালজাতীয় পণ্যটির দর নাগালের মধ্যেই রয়েছে। কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। মাস দুই-তিনেক ধরে এ দরের আশপাশেই বিক্রি হচ্ছে মরিচ।
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ও ঢাকা বিভাগীয় প্রধান বিকাশ চন্দ্র দাস সমকালকে বলেন, রোজা উপলক্ষে রোববার থেকে ঢাকা মহানগরে ১০টি বিশেষ তদারকি দল মাঠে নামবে। তারা বিভিন্ন বাজারে তদারকি করবে। রমজানজুড়ে চলবে এ তদারকি কার্যক্রম। রোববার সকালে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কারওয়ান বাজারে এ তদারকি কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।