সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ৩টি অলাভজনক ও কার্যক্রমহীন স্থলবন্দর সম্পূর্ণ বন্ধ এবং ১টি স্থলবন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ৮টি স্থলবন্দর কার্যকর/অকার্যকরের বিষয়ে মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত যাচাই কমিটি এ সুপারিশ করেছে।

কমিটি কর্তৃক বর্ণিত ৮টি স্থলবন্দর সরেজমিন পরিদর্শন, প্রাপ্ত তথ্যাদি, আনুসঙ্গিক সুবিধা ও অসুবিধা, অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক কিনা এ সকল বিষয় পর্যালোচনা করে কমিটি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) ড.

এম সাখাওয়াত হোসেনের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেছে।

বন্দরগুলো হলো- ১. শেরপুরের নাকুগাঁও স্থলবন্দর ২. ময়মনসিংহের গোবড়াকুড়া-কড়ইতলী স্থলবন্দর, ৩. জামালপুরের ধানুয়া কামালপুর স্থলবন্দর ৪. হবিগঞ্জের বাল্লা স্থলবন্দর ৫. দিনাজপুরের বিরল স্থলবন্দর, ৬. নীলফামারীর চিলাহাটি স্থলবন্দর, ৭. চুয়াডাঙ্গার দৌলতগঞ্জ স্থলবন্দর এবং ৮. রাঙ্গামাটির তেগামুখ স্থলবন্দর।

জানা যায়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর সরেজমিন পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে উপদেষ্টা বিগত সরকারের আমলে নির্মিত দেশের অলাভজনক ও কার্যক্রমহীন বিভিন্ন স্থলবন্দরসমূহের বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের আটটি অলাভজনক ও কার্যক্রমহীন স্থলবন্দর কার্যকর/অকার্যকর এর বিষয়ে যাচাইয়ের লক্ষ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধির সমন্বয়ে ছয় সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।

এই কমিটি থেকে আটটি স্থলবন্দর সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়। সরেজমিন পরিদর্শন, প্রাপ্ত তথ্যাদি, আনুসঙ্গিক সুবিধা ও অসুবিধা, অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক কি না, এ সকল বিষয় পর্যালোচনা করে কমিটি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেছে। ওই প্রতিবেদনে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও বাণিজ্য সম্ভাবনা বিবেচনায় নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার চিলাহাটি স্থলবন্দর,  চুয়াডাঙ্গার দৌলতগঞ্জ, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার তেগামুখ স্থলবন্দরের কার্যক্রম চালুর জন্য অবকাঠামো নির্মাণের প্রয়োজন নেই মর্মে সুপারিশ প্রদান করেছে।

এ ছাড়াও কমিটি হবিগঞ্জের বাল্লা স্থলবন্দরের কেদারকোটে নির্মিত স্থলবন্দরের ভারতীয় অংশে কোনো অবকাঠামো ও সড়ক না থাকায় চালু করা সম্ভব হচ্ছে না, সেহেতু বাল্লা স্থলবন্দরের অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ রাখা যেতে পারে মর্মে সুপারিশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে কমিটি ময়মনসিংহ জেলার গোবরাকুড়া-কড়ইতলী স্থলবন্দরের দুটি স্থানের পরিবর্তে একটি স্থানে স্থলবন্দরের কার্যক্রম চালু রাখার সুপারিশ করেছে।

সুপারিশে বলা হয়েছে, শেরপুরের নাকুগাঁও স্থলবন্দরে বন্দরকেন্দ্রিক গতিশীল অর্থনৈতিক কার্যক্রম চলমান আছে। বিগত সময়ের আয়-ব্যয় অনুপাত তুলনায় লাভজনক বিবেচনায় স্থলবন্দরটির কার্যক্রম আরও গতিশীল করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে মর্মে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। জামালপুরের ধানুয়া কামালপুর স্থলবন্দরের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে এবং পূর্বে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম গতিশীল ছিলো ও বন্দর কেন্দ্রিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম দৃশ্যমান। এ বিনিয়োগ বিবেচনায় ন্যূনতম জনবল দিয়ে বন্দরের কার্যক্রম চালু রাখা যেতে পারে। এ ছাড়া রপ্তানি বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে। দিনাজপুরের বিরল স্থলবন্দরে বিদ্যমান ব্যবস্থায় রেল পথে আমদানি-রপ্তানি চালু রাখা যেতে পারে। এ ছাড়া ইমিগ্রেশন সুবিধা চালুর জন্য ভারতকে অনুরোধ করা যেতে পারে। বিওটি ভিত্তিক পরিচালনার চুক্তিবদ্ধ হওয়ায় স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এ স্থলবন্দরে অর্থ ব্যয়ের প্রয়োজন নেই।

বিএইচ

উৎস: SunBD 24

কীওয়ার্ড: স প র শ কর ক র যকর উপদ ষ ট র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

অ-তালিকাভুক্ত-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করের ব্যবধান ১০ শতাংশ চায় বিএসইসি

পুঁজিবাজারের উন্নয়নে অ-তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারের ব্যবধান পূর্বের ন্যায় সর্বনিম্ন ১০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সচিব নাজমা মোবারকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দিয়েছে বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।

দেশি বা বিদেশি বা বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজার তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহিত করতে এ  করসুবিধা প্রধান আবশ্যক, যা প্রণোদনা হিসেবে কাজ করবে। এছাড়া পুঁজিবাজারে গুণগতমানসম্পন্ন কোম্পানির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে, বাজারকে অধিকতর শক্তিশালী, গতিশীল ও স্থিতিশীল করতে এ করসুবিধা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মনে করে বিএসইসি।

আরো পড়ুন:

৯ মাসে ডরিন পাওয়ারের মুনাফা বেড়েছে ৩৬.৭৭ শতাংশ

পুঁজিবাজারে টানা দরপতন
আট মাসে ডিএসইএক্স সূচক কমেছে ৮০২ পয়েন্ট

খন্দকার রাশেদ মাকসুদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের পুঁজিবাজার দীর্ঘদিন ধরেই মৌলভিত্তিসম্পন্ন, লাভজনক ও স্বচ্ছ কোম্পানির অভাবে ভুগছে। এর ফলে বাজারের গভীরতা অত্যন্ত সীমিত, যা দীর্ঘমেয়াদে একটি কার্যকর ও স্থিতিশীল পুঁজিবাজার গঠনের পথে বড় বাধা। এই পরিস্থিতিতে দেশের পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে, বিশেষ করে প্রাতিষ্ঠানিক ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের। বাংলাদেশে বহু লাভজনক দেশি ও বহুজাতিক কোম্পানি রয়েছে, যাদের ব্যবসা শক্তিশালী এবং আয়ও উল্লেখযোগ্য।

তবে এসব কোম্পানির অধিকাংশই এখনো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়নি। এর অন্যতম প্রধান কারণ হলো-তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে করহারে উল্লেখযোগ্য পার্থক্যের অভাব। ২০২৪ সালের অর্থ আইন-এর তফসিল (২), অনুচ্ছেদ (খ) এর দফা (ক) এর (অ) অনুযায়ী বর্তমানে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার সাড়ে ২২.৫ শতাংশ এবং বর্ণিত অনুচ্ছেদ ও দফার (ক) এর (ঈ) অনুযায়ী অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার সাড়ে ২৭.৫ শতাংশ। তালিকাভুক্ত ও অভালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারে এই ব্যবধান মাত্র ৫ শতাংশ, যা ভালো ও মৌলিকভাবে শক্তিশালী কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওযার ক্ষেত্রে আরো নিরুৎসাহিত করছে।

চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, যেসব কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়, তারা সাধারণত নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী প্রকাশ করে, সুশাসন মেনে চলে, এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করে। করহারে ছাড় দেওয়ার মাধ্যমে এই দায়িত্ববান আচরণকে পুরস্কৃত করা সম্ভব হবে এবং অন্যান্য ভালো কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য উৎসাহিত করবে। ভালো কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত হলে বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ে, কারণ তারা টেকসই আয় ও সুশাসনের আশ্বাস পায়। এটি বাজারকে দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীল করে এবং বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ায়। এছাড়া ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত হলে পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ে। আপাতদৃষ্টিতে কর ছাড় মানেই রাজস্ব ঘাটতি মনে হলেও, তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা বাড়লে ব্যবসার পরিধি ও করনির্ভরতা উভয়ই বাড়ে।

কর আদায়ে স্বচ্ছতা বাড়ে এবং দীর্ঘমেয়াদে মোট রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পায়। অনেক উন্নয়নশীল ও মধ্য-আয়ের দেশ, যেমন মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, ভারত ইত্যাদি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে কর সুবিধা দিয়ে সফলভাবে ভালো কোম্পানিগুলোকে বাজারমুখী করেছে। বাংলাদেশে বর্তমানে অধিকাংশ করপোরেট প্রতিষ্ঠান ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরশীল। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহের সুযোগ তৈরি হলে ব্যাংক খাতের ওপর চাপ কমে আসবে ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি হ্রাস পাবে। অন্যদিকে বেশি সংখ্যক ও বৈচিত্র্যময় কোম্পানি তালিকাভুক্ত হলে বাজারের গুটি কয়েক কোম্পানির মূল্য ওঠানামার ওপর নির্ভরতা কমে যাবে। এতে সূচকের উঠানামায় অস্থিরতা হ্রাস পায়, যা বিনিয়োগকারীদের ইতিবাচক বার্তা দেয়।

চিঠিতে বিএসইসি চেয়ারম্যান জানান, দেশি/বিদেশি/বহুজাতিক কোম্পানিসমূহ যাতে পুঁজিবাজার হতে মূলধন উত্তোলনে উৎসাহিত হয় সেজন্য কর সুবিধা প্রধান আবশ্যক যা প্রণোদনা হিসেবে কাজ করবে। তালিকাভুক্ত কোম্পানিসমূহের সুশাসন প্রতিষ্ঠাসহ নানাবিধ খরচ বহন করতে হয় বিধায় তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানিসমূহের মধ্যে উপরিল্লিখিত করহারের ব্যবধান পূর্বের ন্যায় সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ করার জন্য অনুরোধ করা হলো। এই পদক্ষেপ পুঁজিবাজারে গুণগতমানসম্পন্ন কোম্পানির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে, বাজারকে অধিকতর শক্তিশালী, গতিশীল ও স্থিতিশীল করে তুলবে এবং দীর্ঘমেয়াদে দেশের আর্থিক খাতের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশা করা যায়।

ঢাকা/এনটি/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পুরো বন্ধের পথে টেকনাফ স্থলবন্দরের কার্যক্রম
  • অ-তালিকাভুক্ত-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করের ব্যবধান ১০ শতাংশ চায় বিএসইসি
  • শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অতীতের ছবি প্রদর্শন করে ৪ দাবি