সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আজ রোববারও আদালতে জমা পড়েনি।

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আজ এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পক্ষ থেকে আজ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি।

আগামী ১৫ এপ্রিল প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নতুন তারিখ ঠিক করেছেন ঢাকার সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলাম। এ নিয়ে এই মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ ১১৬ বার পেছানো হলো।

সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্ব এক যুগ পর পিবিআইকে দেওয়া হয়। গত বছরের নভেম্বরে মামলার আগের তদন্ত সংস্থা র‍্যাবের কাছ থেকে নথিপত্র বুঝে নেয় পিবিআই।

সংস্থাটি ইতিমধ্যে তদন্তকাজ শুরু করেছে। মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.

আজিজুল হক। তিনি সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, তদন্তকাজ নতুন করে শুরু করেছেন।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় এই সাংবাদিক দম্পতি নৃশংসভাবে খুন হন। সাগর মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক ছিলেন। রুনি ছিলেন এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক।

আরও পড়ুনসাগর-রুনি হত্যার ১৩ বছর: ৬ বছর মামলার কার্যত কোনো তদন্ত হয়নি ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সাগর-রুনি হত্যার ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলম বাদী হয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। প্রথমে এই মামলা তদন্ত করছিল শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশ। চার দিন পর মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়।

তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার ৬২ দিনের মাথায় ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টে ব্যর্থতা স্বীকার করে ডিবি। এরপর আদালত র‍্যাবকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। তখন থেকে মামলাটির তদন্ত করে আসছিল র‍্যাব। কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হলেও তারা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি।

আরও পড়ুনঅবশেষে র‌্যাব থেকে তদন্তের দায়িত্ব গেল পিবিআইয়ের কাছে১৩ নভেম্বর ২০২৪

সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তে বিভিন্ন সংস্থার অভিজ্ঞদের সমন্বয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠন করতে গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তদন্ত শেষে ছয় মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

গত বছরের ২৩ অক্টোবর এ মামলার তদন্তে চার সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গত ৪ নভেম্বর র‍্যাবের কাছ থেকে মামলার নথিপত্র বুঝে নেয় পিবিআই।

আরও পড়ুনসাগর-রুনি হত্যা: এক যুগেও হয়নি যে মামলার সুরাহা১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: তদন ত র দ য় ত ব

এছাড়াও পড়ুন:

মুক্তিযোদ্ধার নাতি সেজে এক যুগ চাকরি, মামলা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মুক্তিযোদ্ধার নাতি পরিচয়ে পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি নেওয়ার অভিযোগে মো. সুমন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এক যুগ পর তদন্তে তার প্রতারণার বিষয়টি ধরা পড়েছে। 

সুমনের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় মামলা হয়েছে। মামলা হওয়ার আগে থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন।

গত শুক্রবার বিকেলে আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে ভারত থেকে দেশে ফিরলে আখাউড়া স্থলবন্দর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা পুলিশ সুমনকে গ্রেপ্তার করে। শনিবার (১ মার্চ) বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

১১৬ বার পেছাল সাগর-রুনি হত্যা মামলার প্রতিবেদন

পতেঙ্গা সৈকতে পুলিশের এস আইয়ের উপর হামলা, গ্রেপ্তার ১০ 

গ্রেপ্তার সুমনের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া গ্রামে। 

আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ওসি মো. মোজাফফর হোসেন বলেন, “সুমন শুক্রবার ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরছেন বলে গোপন মাধ্যমে জানতে পারে পুলিশ। পরে ইমিগ্রেশন এলাকায় সদর থানা পুলিশ অবস্থান নেয়। সেখান থেকে গ্রেপ্তারের পর শনিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে সুমনকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আখাউড়া উপজেলার মোগড়া গ্রামের বাসিন্দা নান্নু মিয়ার ছেলে মো. সুমন। ২০১২ সালে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পরীক্ষায় অংশ নেন এবং মুক্তিযোদ্ধার নাতি কোটায় চাকরির জন্য প্রতিবেশী মো. হোসেন মিয়ার মুক্তিযোদ্ধা সনদ দাখিল করেন। প্রকৃতপক্ষে, হোসেন মিয়া তার দাদা নয়। এই প্রতারণার বিষয়ে ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর স্থানীয় যুবক মো. ফরহাদ মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। 

লিখিত অভিযোগের পর তৎকালীন কসবা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেনকে বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওই পুলিশ কর্মকর্তার স্বাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযুক্ত মো. সুমন ২০১২ সালের ৩ জুলাই ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। তিনি ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পরীক্ষার সময় তার প্রতিবেশী হোসেন মিয়ার মুক্তিযোদ্ধার সনদ ব্যবহার করে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন। পরবর্তী বিধি মোতাবেক পুলিশ ভেরিফিকেশনের (ভিআর) পর ছয় মাসের মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষ করে ২০১৩ সালের ২৯ মার্চ থেকে কনস্টেবল পদে চাকরি করে আসছিলেন। 

প্রকৃতপক্ষে মো. সুমনের দাখিলকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হোসেন মিয়া তার দাদা নন। অভিযুক্ত মো. সুমনের দাদার নাম আলতাফ আলী হোসেন। সুমন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হোসেন মিয়ার নাতি না হয়েও ইচ্ছাকৃতভাবে অন্যের মুক্তিযোদ্ধা সনদ দাখিল করে পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পেয়ে যাবতীয় বেতন ও রেশনসহ অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন।

এদিকে, কুমিল্লার বুড়িচং থানায় কর্মরত থাকা অবস্থায় কনস্টেবল মো. সুমন গত বছরের ১ ডিসেম্বর ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণ দেখিয়ে চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন। সেসময় তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান ছিল। এরপর ২১ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় মামলা হয়।

ঢাকা/মাইনুদ্দীন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাগর-রুনি হত্যা : নিরাপত্তারক্ষী পলাশ রুদ্রকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি
  • মুক্তিযোদ্ধার নাতি সেজে এক যুগ চাকরি, মামলা