জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) ২০২৪ সালে ঘূর্ণিঝড় রেমাল এবং পরপর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়গুলোর খাদ্য নিরাপত্তা বাড়াতে জাপান সরকারের পক্ষ থেকে ৫০০ মিলিয়ন ইয়েন (প্রায় ৩.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) সহায়তা গ্রহণ করেছে।

রবিবার (২ মার্চ) জাপানের বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূত এইচ.ই. মি. সাইদা শিনিচি এবং WFP-এর প্রতিনিধি ও দেশের পরিচালক ডোমেনিকো স্কালপেলির মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

এসময় রাষ্ট্রদূত সাইদা বলেন, “আমি আশাবাদী যে এই প্রকল্পটি বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় দ্বারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলা সমূহের অবকাঠামো পুনর্বহাল করতে সাহায্য করবে। এই প্রকল্পটি জীবন রক্ষাকারী সহায়তা এবং পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টাকে বাড়ানোর জন্য মৌলিক। জাপান টেকসই সমাধানের দিকে কাজ করতে থাকবে এবং WFP-এর মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাথে সহযোগিতা করবে।”

রাষ্ট্রদূত বলেন, “এই সহায়তা তাত্ক্ষণিক খাদ্য প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদী খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য অবকাঠামো পুনর্নির্মাণে সহায়তা করবে। এর মধ্যে রয়েছে রাস্তা, বাঁধ এবং ছোট আকারের সেতু, যা ঘূর্ণিঝড় রেমাল ও ২০২৪ সালের মারাত্মক বন্যায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, একটি অনন্য জলবায়ু জরুরি পরিস্থিতির বছর, যা দেশজুড়ে প্রায় ১৮ মিলিয়ন মানুষকে প্রভাবিত করেছে।”

এই সহায়তা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা - খুলনা, সাতক্ষীরা, কুমিল্লা, বরগুনা, মৌলভীবাজার ও কুড়িগ্রামে পাঁচ লাখ মানুষের উপকারে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

WFP-এর বাংলাদেশে দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালক ডোমেনিকো স্কালপেলি বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো সম্প্রদায়গুলোর বাজার ও অপরিহার্য সেবাগুলোর অ্যাক্সেসকে বাধাগ্রস্ত করেছে, যা পুনরুদ্ধারকে ধীর করেছে এবং মানুষের খাদ্য নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করেছে। তাদের খাদ্য নিরাপত্তাকে সমর্থন করে এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো পুনর্নির্মাণ করে আমরা তাত্ক্ষণিক পুনরুদ্ধারে সহায়তা করব এবং তাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার সক্ষমতা বাড়াব।”

ঘূর্ণিঝড় রেমাল এবং সিলেট, যমুনা অববাহিকা ও পূর্বাঞ্চলের বন্যার পরে, WFP বাংলাদেশে ১২টি বন্যা-প্রভাবিত জেলায় প্রায় ১,৫০,০০০ পরিবারের তাত্ক্ষণিক সহায়তা প্রদান করেছে।

গত সেপ্টেম্বর থেকে, জাপান UNHCR এবং UNICEF-এর মাধ্যমে বন্যা-প্রভাবিত এলাকাগুলোতে ১ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা প্রদান করেছে এবং পূর্ব বাংলাদেশে জরুরি ত্রাণ প্রদান করতে জাপান প্ল্যাটফর্মের জন্য ২ মিলিয়ন ডলারের জরুরি মানবিক সহায়তা দিয়েছে, যা জাপানি এনজিওগুলোর একটি প্ল্যাটফর্ম। এছাড়াও, ঢাকা থেকে জাপানি বাণিজ্য ও শিল্প সমিতি এবং ঢাকা জাপানী সমিতি বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও পরিবারগুলোর সহায়তার জন্য মোট ২ লাখ টাকা দান করেছে। জাপান এই সপ্তাহে বন্যা প্রতিক্রিয়া ও পুনরুদ্ধারের জন্য IOM-এর সাথে ৩.

২ মিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

ঢাকা/হাসান/টিপু

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবক ঠ ম দ ন কর বন য য র জন য সহ য ত

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতের অর্থনীতিতে সাড়ে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আরেকটি পূর্বাভাস

২০২৫–২৬ অর্থবছরে ভারতের অর্থনীতিতে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। ইওয়াই ইকোনমি ওয়াচ নামের একটি প্রতিষ্ঠান এই পূর্বাভাস দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ভারতের উন্নয়ন, সামষ্টিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমের গতিপ্রকৃতি ও অর্থনৈতিক নীতিমালা পর্যালোচনা করে থাকে।

ইওয়াই ইকোনমি ওয়াচের প্রতিবেদনে অর্থনীতির পাশাপাশি শিক্ষা খাতের উন্নয়ন নিয়েও জোর দেওয়া হয়েছে। তারা বলছে, এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে সরকারের শিক্ষাব্যয় ২০৪৮ সালের মধ্যে মোট দেশজ উৎপাদনের ৬ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত করার প্রয়োজন রয়েছে। খবর ভারতের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের

প্রতিষ্ঠানটির নতুন পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ১ এপ্রিল শুরু হতে যাওয়া ২০২৫–২৬ অর্থবছরে ভারতীয় অর্থনীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হতে পারে। ইওয়াই ইকোনমি ওয়াচ বেশ জোর দিয়েই বলেছে, মানবপুঁজি উন্নয়নকে সমর্থন করে—এমন একটি সুপরিকল্পিত রাজস্ব কৌশল প্রয়োজন, যা আর্থিক কার্যক্রমে গতিশীলতা বজায় রাখে এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে পারে।

প্রতিষ্ঠানটির চলতি মার্চ সংস্করণে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, ২০২৪ সালের ১ এপ্রিল ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ সমাপ্য অর্থবছরে ভারতের প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ, যা ২০২৫–২৬ অর্থবছরে খানিক বেড়ে সাড়ে ৬ শতাংশে উন্নীত হবে। তবে ওই হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে ভারতের রাজস্ব নীতি পুনর্বিন্যাস করতে হবে, যাতে বিকশিত ভারত অভিযাত্রা সফল করে তোলা যায়।

গত মাসে জাতীয় পরিসংখ্যান কার্যালয়ের (এনএসও) সংশোধিত প্রাক্কলনে ২০২৩ থেকে ২০২৫ অর্থবছরে প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৬ শতাংশ, ৯ দশমিক ২ শতাংশ ও ৬ দশমিক ৫ শতাংশ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

২০২৪–২৫ অর্থবছরের শেষ ত্রৈমাসিক অক্টোবর–ডিসেম্বরে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ দশমক ২ শতাংশ হয়েছে বলে প্রাক্কলন করা হয়েছে। এই হার চতুর্থ ত্রৈমাসিক তথা জানুয়ারি–মার্চে আরও বেড়ে ৭ দশমিক ৬ শতাংশে দাঁড়াবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ইওয়াই ইকোনমি ওয়াচ। তবে আগামীকাল সোমবার শেষ হতে যাওয়া চলতি অর্থবছরের জন্য ভারতের জাতীয় পরিসংখ্যান কার্যালয় (এনএসও) বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ।

ইওয়াই ইকোনমি ওয়াচের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে জিডিপিতে ৭ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে বেসরকারি পর্যায়ের চূড়ান্ত ভোগব্যয়ে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় অবশ্য ভারতের অর্থনীতিতে এত উচ্চ প্রবৃদ্ধি আর কখনো দেখা যায়নি।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা ফিচ রেটিংও ভারতের অর্থনীতি নিয়ে আগামী দুই বছরের জন্য পূর্বাভাস দিয়েছে। তারা বলেছে, ২০২৫-২৬ আর্থবছরে ভারতের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। এর পরের অর্থাৎ ২০২৬-২৭ অর্থবছরে তা ৬ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে যেতে পারে। আর ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারতের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গগনযানের নভোচারীদের নিয়ে কেন এত গোপনীয়তা রক্ষা করছে ভারত সরকার
  • বুয়েটের নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সতর্কতা
  • লালমনিরহাটে মুক্তিযুদ্ধের ম্যুরাল ভাঙার প্রতিবাদ উদীচীর
  • ভারতের অর্থনীতিতে সাড়ে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আরেকটি পূর্বাভাস
  • ইয়ার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং-ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং-অ্যাপারেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা, আবেদনের সুযোগ আরও ২০ দিন
  • দেশে স্ট্রবেরির নতুন জাত ফ্রিডম–২৪