সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়: ৬৫৩১ জনের ফলাফল বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আবেদনের শুনানি কাল
Published: 2nd, March 2025 GMT
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে নিয়োগ দিতে ৬ হাজার ৫৩১ জনের প্রকাশিত ফলাফল বাতিলসংক্রান্ত রায়ের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) শুনানির জন্য আগামীকাল সোমবার দিন রাখা হয়েছে।
আবেদনকারীপক্ষের সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আজ রোববার আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো.
এর আগে এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে ৬ হাজার ৫৩১ জনকে নিয়োগ দিতে প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলাফল এবং নির্বাচিত ব্যক্তিদের অনুকূলে নিয়োগপত্র ইস্যুর সিদ্ধান্ত আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গত বছরের ২৩ জুলাইয়ের পরিপত্র অনুসরণ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নতুন করে ফলাফল প্রকাশ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষে নিয়মিত লিভ টু আপিল করা হয়। লিভ টু আপিলটি গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ওঠে। সেদিন চেম্বার আদালত লিভ টু আপিলটি ২ মার্চ আপিল বিভাগে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন। লিভ টু আপিলটি আদালতের আজকের কার্যতালিকায় ১৪ নম্বর ক্রমিকে ছিল।
আদালতে লিভ টু আপিলকারী পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও আইনজীবী মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
পরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আইনজীবী মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এক দিন সময় মঞ্জুর করে আদালত আগামীকাল (সোমবার) শুনানির জন্য রেখেছেন।’
২০২৩ সালের ১৪ জুন এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরপর ৬ হাজার ৫৩১ প্রার্থীকে নির্বাচন করে গত বছরের ৩১ অক্টোবর নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গত ১১ নভেম্বরের এ-সংক্রান্ত আদেশ অনুসারে নির্বাচিত প্রার্থীদের অনুকূলে ২০ নভেম্বর নিয়োগপত্র ইস্যু করার কথা ছিল। তবে এই নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা অনুসরণের অভিযোগ তুলে ফলাফল প্রকাশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নিয়োগবঞ্চিত ৩১ প্রার্থী গত বছরের নভেম্বরে রিট করেন।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরে ১৯ নভেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন। ৩১ অক্টোবর ও ১১ নভেম্বরের সিদ্ধান্তের কার্যক্রম স্থগিত করেন।
রুলে ৩১ অক্টোবরের ফলাফল প্রকাশের বিজ্ঞপ্তি ও নিয়োগ বিষয়ে ১১ নভেম্বরের নির্দেশনা সংবলিত স্মারক কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, মহাপরিচালকসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
হাইকোর্টের আদেশ (৩১ অক্টোবর ও ১১ নভেম্বরের সিদ্ধান্ত স্থগিত) স্থগিত চেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। যা গত ৯ ডিসেম্বর আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে দিয়ে হাইকোর্টে এ-সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল যথাযথ (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করে চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি রায় দেওয়া হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ন ন র জন য গত বছর বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদার খালাসের রায় বহাল
বহুল আলোচিত জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ৭ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড থেকে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া খালাসের রায় বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
সোমবার (৩ মার্চ) সকালে বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
এর আগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ৭ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড থেকে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে খালাস দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর রাষ্ট্রপক্ষ গত মাসে লিভ টু আপিল করে। আবেদনের বিষয়ে উল্লেখ করে ২৩ ফেব্রুয়ারি সময়ের আরজি জানান দুদকের আইনজীবী। এরই পরিপরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের আপিল বিভাগ বিষয়টি ‘নট টুডে’ (আজ নয়) রাখেন। ওইদিন আদালত বলেন, এক সঙ্গে শুনানি হবে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সেটি শুনানির জন্য কজলিস্টে ওঠে।
মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ এর আগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে, যা ২৩ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ছিল। ওইদিন আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে বিষয়টি উল্লেখ করে দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসান বলেন, দুদক লিভ টু আপিল করেছে। একসঙ্গে শুনানির জন্য সময়ের আরজি জানান তিনি।
এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক। পরে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিলের সঙ্গে দুদকের করা লিভ টু আপিল রোববার (২ মার্চ) আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় আসবে।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালতের দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া এবং অপর দুজনের করা পৃথক আপিল মঞ্জুর করে গত ২৭ নভেম্বর রায় দেন হাইকোর্ট। বিচারিক আদালতের দেওয়া রায় বাতিল করা হয়। মামলা থেকে খালাস পান খালেদা জিয়া ও অপর দুজন। এই দুজন হলেন হারিস চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম ও সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর রাষ্ট্রপক্ষ ফেব্রুয়ারি মাসে লিভ টু আপিল করে। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে গত ২০ ফেব্রুয়ারি দুদক একটি লিভ টু আপিল করে। এই দুই লিভ টু আপিলের ওপর এখন আপিল বিভাগে একসঙ্গে শুনানি হতে যাচ্ছে।
দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসান বলেন, ‘দুদকের আবেদনটি কার্যতালিকায় ছিল না। তাই রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিলের সঙ্গে ট্যাগ করে একসঙ্গে শুনানির জন্য আরজি জানিয়ে সময় চাওয়া হয়।’
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর রায় দেন বিচারিক আদালত। রায়ে খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। একই সাজা হয় অপর আসামিদের।
বিচারিক আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে একই বছরের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া। শুনানি নিয়ে ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে বিচারিক আদালতের দেওয়া অর্থদণ্ডের আদেশ স্থগিত করেন।
এর ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য উদ্যোগ নেন তার আইনজীবীরা। আপিল শুনানির পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে মামলার পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) তৈরির জন্য অনুমতি চেয়ে খালেদা জিয়ার আবেদন গত বছরের ৩ নভেম্বর মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। শুনানি শেষে এই আপিল মঞ্জুর করে রায় দেন হাইকোর্ট।
এনজে