বলিভিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় পোটোসি অঞ্চলে দুই বাসের ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ৩৭ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ৩৯ জন। দেশটির পুলিশ ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। 

তাদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় শনিবার সকাল ৭টায় উয়ুনি এবং কোলচানি শহরের মধ্যবর্তী রুটে দুর্ঘটনাটি ঘটে। একই দিকে যেতে থাকা দু’টি বাসের মধ্যে সামনেরটি হঠাৎ দিক পরিবর্তন করলে পেছনেরটি এসে সজোরে ধাক্কা দেয়।

পোতোসির ডিপার্টমেন্টাল পুলিশ কমান্ডের একজন মুখপাত্র সাংবাদিকদের বলেছেন, এই মারাত্মক দুর্ঘটনায় ৩৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত ৩৯ জনকে উইউনি শহরের চারটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাস দুটির চালক দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে গেছেন। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও অন্যজন ইনটেনসিভ কেয়ারে রয়েছেন।

পুলিশ হতাহতদের শনাক্ত করতে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এক বিবৃতিতে বলিভিয়া সরকার জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী একটি বাস সম্ভবত তীব্র গতিতে চলার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আরেক লেনে ঢুকে পড়ে আর তাতেই দুর্ঘটনাটি ঘটে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ কি নতুন দলের দলীয় স্লোগান, কীভাবে এল এই স্লোগান

নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে দলের প্রায় সব শীর্ষ নেতা বক্তব্যের ইতি টেনেছেন ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ স্লোগানটি দিয়ে।

দল গঠনের আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের অনেকে ইনকিলাব জিন্দাবাদ স্লোগানটি ব্যবহার করতেন। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে একই স্লোগান অনেক নেতা ব্যবহার করায় কৌতূহল তৈরি হয়েছে যে স্লোগানটি কি জাতীয় নাগরিক পার্টি দলীয় স্লোগান হিসেবে গ্রহণ করেছে।

সে প্রশ্নের উত্তরের আগে জেনে নেওয়া যাক, ইনকিলাব জিন্দাবাদ স্লোগানটি কোথা থেকে এল।

প্রখ্যাত ভারতীয় ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিবের এক লেখায় উঠে এসেছে এ স্লোগানের আদ্যোপান্ত। ২০২২ সালের ২৯ মে ভারতীয় পত্রিকা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে এক লেখায় তিনি উল্লেখ করেছেন, ১৯২১ সালে মাওলানা হাসরাত মোহানি (১৮৭৫-১৯৫১) প্রথম স্লোগানটি ব্যবহার করেন। এরপরে এ স্লোগান ঠাঁই করে নেয় উপনিবেশবিরোধী সশস্ত্র সংগ্রামের নেতা ভগত সিংয়ের কণ্ঠেও।

নানা পরিচয়ে পরিচিত ছিলেন হাসরাত মোহানি। উর্দু ভাষার এ কবি ছিলেন শ্রমিকনেতা, ছিলেন ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যও।

হাসরাত মোহানি ভারতের উত্তর প্রদেশের উন্নাও জেলার মোহন নামের একটি শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ইরফান হাবিব লিখেছেন, জন্মের পর হাসরাত মোহানির নাম রাখা হয় ফজলুল হাসান। এ নামেই তিনি বেড়ে ওঠেন। একজন বিপ্লবী উর্দু কবি হিসেবে ‘হাসরাত’ ছিল তাঁর কলমি নাম, যা একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবেও তাঁকে পরিচিতি দিয়েছিল। তিনি ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির এক নেতার সঙ্গে প্রথম ভারতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনে পূর্ণ স্বরাজ বা পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি উত্থাপন করেছিলেন।

ব্রিটিশ শাসনের অবসানের পর হাসরাত মোহানি গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ভারতীয় সংবিধানের খসড়া প্রণয়ন কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, ইনকিলাব জিন্দাবাদ বা বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক স্লোগানটি ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি এখনো দেয়। তিনি বাংলাদেশে অতীতে ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মীদের এ স্লোগান দিতে শুনেছেন।

‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ স্লোগানটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অংশ হিসেবে দিয়েছিলেন হাসরাত মোহানি।

ইরফান হাবিবের লেখায় দেখা যাচ্ছে ১৯২৯ সালে আদালতে দেওয়া এক জবানবন্দিতে ভগত সিং বলেন, ’ ইনকিলাব বা বিপ্লব বোমা বা পিস্তলের সংস্কৃতি নয়। আমাদের বিপ্লবের অর্থ হলো প্রকাশ্য অন্যায়ের ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে থাকা বর্তমান পরিস্থিতিকে সম্পূর্ণ বদলে দেওয়া।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের অধ্যাপক জাফর আহমেদ ভূঁইয়া প্রথম আলোকে জানান, ইনকিলাব আরবি শব্দ। জিন্দাবাদ উর্দু শব্দ। মানে হলো ইনকিলাব জিন্দাবাদ শব্দটি আরবি ও উর্দুর মিশেল। তিনি বলেন, জিন্দাবাদ মানে অভিনন্দন জানানো। ফলে ইনকিলাব জিন্দাবাদ স্লোগানের মানে হলো বিপ্লবকে অভিনন্দন জানানো।

অবশ্য ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিব তাঁর লেখায় ইনকিলাব জিন্দাবাদের অর্থ হিসেবে লিখেছেন, ‘বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক’।

আমাদের দলীয় স্লোগান ও মূলনীতি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আপাতত আত্মপ্রকাশ, কমিটি প্রকাশ আর ঘোষণাপত্র হয়েছে। বাকি বিষয়গুলো সামনে চূড়ান্ত করা হবে।আরিফুল ইসলাম আদীব, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক, জাতীয় নাগরিক পার্টি

দেশে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে গত জুলাইয়ে যখন ছাত্র-জনতার আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে, তখন তরুণদের অনেকেই ইনকিলাব জিন্দাবাদ স্লোগানটি ব্যবহার করেন।

রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অনেক নেতা ইনকিলাব জিন্দাবাদ স্লোগানটি দিলেও দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সেটি ব্যবহার করেননি।

জানতে চাইলে জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি জাতীয় নাগরিক পার্টির দলীয় স্লোগান নয়। যেহেতু জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে ইনকিলাব জিন্দাবাদ স্লোগানটি বেশ আলোচিত ছিল, তারই ধারাবাহিকতায় এখনো আমরা এই স্লোগানটি বিভিন্ন কর্মসূচিতে ব্যবহার করছি।’

’আমাদের দলীয় স্লোগান ও মূলনীতি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আপাতত আত্মপ্রকাশ, কমিটি প্রকাশ আর ঘোষণাপত্র হয়েছে। বাকি বিষয়গুলো সামনে চূড়ান্ত করা হবে’, বলেন তিনি।

জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানের মঞ্চে দলের শীর্ষস্থানীয় পদে থাকা নেতারা। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, ঢাকা, ২৮ ফেব্রুয়ারি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রোজাদারের দিন কীভাবে কাটবে
  • বরিশালে যুবদল নেতাকে কুপিয়ে হত্যা, অভিযুক্ত ব্যক্তির বাড়িতে স্থানীয়দের আগুন
  • ফাঁদ পেতে উদ্ধার করা হলো আটকে পড়া বিড়াল
  • কীর্তিনাশায় ভেসে উঠল পিটুনিতে নিহত আরেক ডাকাতের লাশ
  • সিন্ডিকেটগুলোকে গণপিটুনি দেওয়া হোক: ওমর সানী
  • দয়া করে সিন্ডিকেট করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করবেন না: ওমর সানী
  • জামালপুরে দুর্ঘটনায় একজন নিহত, বাসে আগুন দিল বিক্ষুব্ধ জনতা
  • জেলেনস্কির প্রতি কেন এত মারমুখী ছিলেন ভ্যান্স
  • ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ কি নতুন দলের দলীয় স্লোগান, কীভাবে এল এই স্লোগান