সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ের যোগ্য ও পরিক্ষিত উদ্যোক্তাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন গ্রাহকরা। রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে বেলা ১১ টায় ইসলামী ব্যাংক গ্রাহক ফোরাম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ১৯৮৩ সালে ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইসলামী ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ অত্যন্ত দক্ষ, সৎ, আদর্শ ব্যাংকিং জ্ঞানসমৃদ্ধ এবং অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়ে আসছিল। যার সুফল আমানতকারী, গ্রাহক, বিনিয়োগ গ্রহিতাগণ ভোগ করেছিল এবং ব্যাংকটি দেশের শ্রেষ্ঠ ব্যাংকের আসন দখল করে সাফল্যের শ্রেষ্ঠ শিখরে পৌঁছেছিল। পক্ষান্তরে পতিত স্বৈরাচারী সরকারের সরাসরি তত্বাবধানে এস আলম গ্রুপ কর্তৃক ব্যাংক লুটেরার দখলে পড়ার পরে তার অদক্ষ ও অযোগ্য ছেলেকে ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়। পরিচালনা পর্ষদ অত্যন্ত অসৎ এবং দুর্নীতিবাজদের হাতে চলে যায়। অযোগ্য ও দুর্বল পরিচালনা পর্ষদ দ্বারা পরিচালনার কারণে এ সাফল্যমন্ডিত ব্যাংকটি দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায়। এতে ব্যাংকের কার্যক্রম চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং ব্যাংকের সুনামহানি ঘটে। ব্যাংকের বিশাল সংখ্যক বিদেশী শেয়ার হোল্ডার তাদের শেয়ার বিক্রি করে চলে যায়। আমরা ব্যাংকের পরীক্ষিত ও যোগ্য পরিচালনা পর্ষদকে পুনঃপ্রতিষ্ঠার জোর দাবি জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আমরা ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকবৃন্দ গত ১০ বছরের অবৈধ দখলদারিত্ব দূর করে গ্রাহকদের আস্থা পুনরুদ্ধার করা এবং ব্যাংকটিকে নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে চাই। ইতোমধ্যে আমরা এ ফোরামের উদ্যোগে গত ২৪ আগস্ট ২০২৪ তারিখে ঢাকার একটি হোটেলে ইসলামী ব্যাংকের কয়েক শত গ্রাহকের উপস্থিতিতে একটি সফল সমাবেশের আয়োজন করেছি। সেই সমাবেশের কিছু সুপারিশ এবং গত ২০২৪ সালের ১৮ অক্টোবর বনানীর একটি রেষ্টুরেন্ট এ অনুষ্ঠিত অন্য একটি সমাবেশের সুপারিশ এর আলোকে আমাদের গ্রাহক ফোরামের পক্ষ থেকে আহ্বায়কসহ একদল প্রতিনিধির মাধ্যমে ইতিমধ্যেই ইসলামি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর মহোদয় বরাবর একটি স্বারকলিপি প্রদান করেছি। আমাদের এই কর্মসূচি আমরা দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে চাই, যাতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ক্লাসিফাইড গ্রাহকদের সমস্যার সমাধান এবং ব্যাংকের ডিপোজিট বৃদ্ধিতে আমরা উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারি।

বক্তারা বলেন, ইসলামী ব্যাংক এদেশের উদ্যোক্তা এবং ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের কাছে এক আস্থা, নির্ভরতা ও বিশ্বস্ততার প্রতীক ছিল। মানসম্পন্ন গ্রাহক সেবা, যথাযথ আইনের ভিত্তিতে ব্যাংক পরিচালনা, দেশের আমদানি-রপ্তাণি বানিজ্যে শীর্ষে অবস্থান, ক্ষুদ্র-মাঝারি এবং বৃহৎ শিল্পে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান এবং প্রবাসী আয় প্রাপ্তিতে অগ্রগামী থাকায় ইসলামী ব্যাংক দেশের গ্রাহকদের আস্থার শীর্ষে অবস্থান করছিল। আমরা এই ব্যাংকের গ্রাহক হিসেবে নিজেদের অত্যন্ত সৌভাগ্যবান মনে করতাম। কিন্তু দুঃখের বিষয়, পতিত স্বৈরাচারী সরকারের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ২০১৭ সালে এস.

আলম গ্রুপ সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ডিজিএফআই এর মাধ্যমে ব্যাংকের চেয়ারম্যান, এমডি এবং ডিরেক্টরদেরকে ঢাকার একটি অভিজাত হোটেলে এনে জোরপূর্বক ব্যাংকের শেয়ার এস আলম গ্রুপের দখলে নেয় এবং ব্যাংকের দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের যোগসাজশে হাজার হাজার বিনিয়োগকারীর লক্ষ কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে, যা বিগত ৪০ বছর ধরে বহু যত্নে গড়ে তোলা ব্যাংকটিকে আর্থিকভাবে পঙ্গু করে গ্রাহকদেরকে পথে বসিয়েছে এবং আমাদের মতো সৎ ও নিষ্ঠাবান বিনিয়োগ কারীদেরেকে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ক্ষতিগ্রন্থ ও স্থবির হয়ে পড়া ব্যবসা বা শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংক থেকে যথা সময়ে ওয়ার্কিং ক্যাপিট্যাল না পাওয়ায় ব্যবসা বা শিল্প সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারেনি, নিয়মিত এলসি করতে পারেনি এবং বিনিয়োগকারীগণ যথাসময়ে/নিয়মিতভাবে কিস্তি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়, যার দায়ভার সম্পূণ ব্যাংকের কর্তৃপক্ষের উপর বর্তায়। অথচ এ সকল বাস্তব পরিস্থিতির পরেও কিছু কিছু ব্যাংক কর্মকর্তা আমাদের সম্মানিত গ্রাহকদের ব্যাংকের টাকা আদায়ের লক্ষ্যে যে ধরনের অমানবিক আচরণ করেছে তা কোনো অবস্থাতে দীর্ঘ দিন যাবৎ একজন সৎ নিষ্ঠাবান বিনিয়োগকারী মেনে নিতে পারেননি।

বক্তারা বলেন, আমরা ইসলামী ব্যাংক গ্রাহক ফোরাম’ এর সদস্যবৃন্দ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, উপরোক্ত দাবীগুলো যথাযথ ও দ্রুত বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকের দীর্ঘদিনের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা, ব্যবসায় স্থবিরতা কাটিয়ে এবং গ্রাহকদের আস্থা ফিরিয়ে আনবেন। ইসলামী ব্যাংকের সুনাম উদ্ধারের সাথে সাথে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের সংকট থেকে উত্তরণে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। গ্রাহক হয়রানী বন্ধ করা, মামলা প্রত্যাহার করা এবং দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ সুবিধা প্রদান করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু করে ইসলামী ব্যাংকের বিনিয়োগকারী এবং গ্রাহকদের আস্থার সংকট দূর করে ব্যাংকের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনবেন বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী ব্যাংক গ্রাহক ফোরামের আহ্বায়ক ও এফবিসিসিআইয়েন সাবেক পরিচালক আবদুল হক, ইসলামী ব্যাংক গ্রাহক ফোরামের যুগ্ম-আহবায়ক ও  ইসলামীক ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট পিএলসি সাবেক চেয়ারম্যান, এফবিসিসিআইয়ের সাবে ভাইস প্রেসিডেন্ট আবুল কাসেম হায়দারসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

 

এসকেএস

উৎস: SunBD 24

কীওয়ার্ড: ক গ র হক ফ র ম র গ র হক আম দ র পর চ ল র একট ব যবস ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

পৃথিবীর চারপাশে নতুন ধরনের বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা

অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে পৃথিবীর চারপাশে ভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের সন্ধান করছিলেন বিজ্ঞানীরা। অবশেষে লুকানো সেই বৈদ্যুতিক শক্তির খোঁজ পাওয়ার দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার একদল বিজ্ঞানী। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, নতুন ধরনের এই বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র পৃথিবীর ওপরের বায়ুমণ্ডল জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে। শান্ত কিন্তু শক্তিশালী এই বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র পৃথিবীর ওপরের বায়ুমণ্ডলকে প্রভাবিত করতে সক্ষম। পৃথিবীর বায়ু ও মহাকাশের সংযোগে প্রধান ভূমিকা পালনও করে থাকে এই শক্তি। নাসার এনডুরেন্স মিশনের মাধ্যমে এই ক্ষেত্রের খোঁজ মিলেছে।

পৃথিবীর অনেক ওপরে বায়ুমণ্ডল ধীরে ধীরে পাতলা হতে শুরু করে, এর ফলে সেখানে পরমাণু চার্জযুক্ত কণা ভেঙে হালকা ইলেকট্রন ও ভারী আয়নে পরিণত হয়। সাধারণভাবে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি আয়নকে নিচে টেনে নিয়ে আসে আর ইলেকট্রন হালকা বলে ওপরে ভেসে থাকে। কিন্তু বৈদ্যুতিক চার্জ আলাদা থাকতে চায় না। ইলেকট্রন পালাতে শুরু করলে তার সঙ্গে আয়নকে একসঙ্গে ধরে রাখার জন্য একটি বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র তৈরি হয়। এই ক্ষেত্র আয়নকে ওপরে ঠেলে দেয় আর ইলেকট্রনকে ধীর করে দেয়। এই ভারসাম্যকে বিজ্ঞানীরা অ্যাম্বিপোলার বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র বলেন। এটি একটি অদৃশ্য টানাটানির মতো কাজ করে। চার্জকে আলাদা হওয়া থেকে রক্ষা করে। পৃথিবী থেকে ২৫০ থেকে ৭৭০ কিলোমিটার ওপরে এই ক্ষেত্রের উপস্থিতি দেখা যায়। এর প্রভাব সূক্ষ্ম, কিন্তু বেশ শক্তিশালী।

নতুন ধরনের বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের বিষয়ে নাসার বিজ্ঞানী গ্লিন কলিনসন বলেন, অ্যাম্বিপোলার ক্ষেত্র কণাকে উত্তপ্ত করার পরিবর্তে শান্তভাবে কণাকে ওপরে নিয়ে যায়, যেখানে অন্যান্য শক্তি সেগুলোকে আরও ওপরের মহাকাশে নিয়ে যেতে পারে। বিজ্ঞানীরা দেখছেন, এই ক্ষেত্র হাইড্রোজেন আয়নকে সুপারসনিক গতিতে পৃথিবী থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী। মাধ্যাকর্ষণের ঊর্ধ্বমুখী শক্তির চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি শক্তিশালী এই শক্তি।

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবাহিত চার্জযুক্ত কণার তথ্য জানতে ২০২২ সালের ১১ মে একটি রকেট উৎক্ষেপণ করেছিল নাসার এনডুরেন্স মিশন। রকেটটি পৃথিবীর ওপরে ৭৬৮ কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছানোর আগে বায়ুমণ্ডলের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে। সেসব তথ্য পর্যালোচনা করেই নতুন ধরনের বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

সূত্র: আর্থ ডটকম

সম্পর্কিত নিবন্ধ